|
|
|
|
কেন্দ্রের ছাড়পত্র না নিয়ে বিল নয়, অরবিন্দকে চিঠি |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি
১০ ফেব্রুয়ারি |
দিল্লি মন্ত্রিসভায় পাশ হওয়া জন-লোকপাল বিল কার্যত অবৈধ বলেই জানিয়ে দিলেন উপরাজ্যপাল নজীব জঙ্গ।
গত সপ্তাহেই জন-লোকপাল বিলে ছাড়পত্র দিয়েছিল অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মন্ত্রিসভা। তখনই ঠিক হয়, আগামী ১৬ ফেব্রুয়ারি ইন্দিরা গাঁধী স্টেডিয়ামে বিশেষ অধিবেশন ডেকে ওই বিলটি পাশ করাবে আম আদমি পার্টির সরকার। কিন্তু আজ কেজরিওয়ালকে লেখা একটি চিঠিতে জঙ্গ কড়া ভাষায় জানিয়ে দেন বিধানসভায় পেশ করা তো দূর, কেন্দ্রের সম্মতি ছাড়া কোনও নতুন বিল নিয়ে আলোচনাই করতে পারে না দিল্লি মন্ত্রিসভা। তিনি পরোক্ষে বুঝিয়েই দিয়েছেন দিল্লি মন্ত্রিসভা যে বিলে অনুমোদন দিয়েছে তা অবৈধ। যদিও এ বিষয়ে চূড়ান্ত মতামত নিতে কেন্দ্রীয় আইন মন্ত্রকের পরামর্শ চেয়ে পাঠিয়েছেন জঙ্গ।
যে ভাবে ইন্দিরা গাঁধী স্টেডিয়ামে বিশেষ অধিবেশন ডাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে আপ, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন উপরাজ্যপাল। চিঠিতে জঙ্গ জানিয়েছেন, “ওই ভাবে খোলা জায়গায় বিধানসভা অধিবেশন হলে আইন-শৃঙ্খলাজনিত সমস্যা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছে দিল্লি পুুলিশ।” যদিও পাল্টা চিঠিতে আজ কেজরিওয়াল উপরাজ্যপালকে লিখেছেন, পুলিশ যদি সুরক্ষা দিতে না পারে সে ক্ষেত্রে আধাসামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হোক। তাঁর প্রশ্ন, “দিল্লির পুলিশ যদি মন্ত্রী ও বিধায়কদেরই নিরাপত্তা দিতে না পারে, তাহলে দিল্লিবাসীকে কী ভাবে নিরাপত্তা দেবে?”
মোট কথা, আপ শিবির নিজের অবস্থানে অনড়। দল জানিয়েছে, ওই বিলটি বিশেষ অধিবেশনেই পেশ করা হবে। এমনকী বিলটি পাশ না হলে তিনি ইস্তফা দেবেন বলে গত কালই হুমকি দিয়ে রেখেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। তাঁর ওই বক্তব্যের পরেই কেজরিওয়াল সরকার ফেলে দিতে চাইছেন বলে সরব হয় বিজেপি ও কংগ্রেস। চাপের মুখে আজ দৃশ্যতই ব্যাকফুটে চলে যাওয়া কেজরিওয়াল বলতে বাধ্য হন, “আমি মোটেই অস্থিরতা তৈরি করতে চাইছি না। এই ধারণা ভুল। আমাদের সরকার দিন-রাত এক করে কাজ করছে।”
কেজরিওয়াল মুখে যা-ই বলুন, কংগ্রেস ও বিজেপি দু’দলই মনে করছে, জন-লোকপাল বিলের ছুতোয় আসলে সরকার ফেলে দিতে চাইছেন কেজরিওয়াল। সেই কারণেই কোনও নিয়মের তোয়াক্কা না করে বিলটি বিধানসভায় পেশ করতে মরিয়া তিনি। কারণ তিনি জানেন, নিয়মের ফাঁসে বিলটি আটকাবেই। আর তা হলে সরকার ভেঙে দেওয়ার মতো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন তিনি। যে ইঙ্গিত তিনি গত কালই দিয়ে রেখেছেন।
এতে লাভ কী হবে? আপ নেতৃত্ব সে ক্ষেত্রে বলবেন যে, কংগ্রেস বা বিজেপি কোনও দলই দুর্নীতি রুখতে আন্তরিক নয়। তাই বাধ্য হয়েই সরকার ফেলে দিতে হয়েছে আপ-কে। এতে এক দিকে দল যে প্রতিশ্রুতি পালনে আন্তরিক, তা ভোটারদের সামনে তুলে ধরা সম্ভব হবে। অন্য দিকে ভোটে জনতার সহানুভূতি পাবে দল। যদিও কেজরিওয়ালের এই সংবিধান না মানার প্রবণতাকে গণতন্ত্রের পক্ষে বিপজ্জনক বলেই মনে করেন অরুণ জেটলি। তাঁর কথায়, “চূড়ান্ত মিথ্যাচারে ডুবে থাকা একটি দল ভুয়ো প্রতিশ্রুতি দিয়ে সরকারে এসেছে। এখন প্রতিশ্রুতি পালন করতে গিয়ে বেকায়দায় পড়েছেন কেজরিওয়াল। তাই বাঁচার রাস্তা খুঁজছেন।” তিনি যাতে প্রতিশ্রুতি পালনের দায় থেকে পালাতে না পারেন সে জন্য বিজেপি ঘোষণা করেছে, অরবিন্দ সরকার বিল আনলে, তারা তাতে সমর্থনই জানাবে। ফলে জেডিইউ বিধায়ক শোয়েব ইকবাল ও নির্দল বিধায়ক রামবীর শৌকিন সমর্থন তুলে নেওয়ার পরেও বিল পাশ করাতে বিধায়ক-সংখ্যায় কোনও অভাব হবে না। |
|
|
|
|
|