মারেই মৃত্যু নিদোর, ফের আক্রান্ত ২ মণিপুরী
নিদো-কাণ্ড খুনের দিকে মোড় নেওয়ার মুহূর্তেই ফের দিল্লিতে আক্রান্ত হলেন উত্তর-পূর্বের দুই পড়ুয়া। গত রাতে দক্ষিণ দিল্লিতে ঘটনাটি ঘটে।
আজ অরুণাচলের ছাত্র নিদো টানিয়ার ময়নাতদন্ত রিপোর্ট দিল্লি হাইকোর্টে দাখিল করে পুলিশ। তাতে জানানো হয়, মাথায় এবং মুখে আঘাতের জেরে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণেই মৃত্যু হয় নিদোর।
নিদোর মৃত্যুর জেরে দেশের উত্তর-পূর্বের ক্ষোভ আজ আরও উস্কে দিয়েছে গত রাতে দুষ্কৃতীদের মারধরে মণিপুরের দুই ছাত্রের জখম হওয়ার ঘটনা। পুলিশ জানিয়েছে, দক্ষিণ দিল্লির অম্বেডকর নগর এলাকার বাসিন্দা গিনখানসুয়ান নৌলক এবং তাঁর ভাই ভুমসুয়ানমুঙ বাজারে গিয়েছিলেন। মোটরসাইকেল সওয়ার কয়েক জন যুবক তাঁদের উপর চড়াও হয়। বেধড়ক মারধরে জখম হন বছর পঁচিশের দুই ছাত্র। হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসার পর এক জনকে ছেড়ে দেওয়া হলেও, গিনখানসুয়ান এখনও চিকিৎসাধীন। চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাঁর বাঁ কানে গুরুতর আঘাত লেগেছে। সেখানে সেলাই করা হয়। শরীরের অন্য জায়গাতেও আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। ব্যথা রয়েছে পেটেও। পুলিশকে মণিপুরের ওই যুবকরা জানিয়েছেন, কী কারণে তাঁদের উপরে হামলা করা হয়, তা বুঝতে পারেননি। তাঁদের কাছ থেকে টাকাপয়সাও ছিনিয়ে নেয়নি দুষ্কৃতীরা।
এ দিকে, আদালতে দাখিল ময়না তদন্ত রিপোর্টে জানানো হয়েছে, ভোঁতা কোনও জিনিস দিয়ে নিদোকে আঘাত করা হয়েছিল। তাঁর শরীরে ন’টি জায়গায় আঘাত লাগে। মারাত্মক জখম হয় তাঁর মস্তিস্ক এবং ফুসফুস। অরুণাচলের বাসিন্দা, ২০ বছরের ওই কলেজ পড়ুয়ার মৃত্যুর কারণ হিসেবে ‘সেরিব্রাল পালমোনারি’কে চিহ্নিত করা হয়েছে। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পরে ওই ঘটনায় ধৃত তিন জনের বিরুদ্ধে খুনের মামলা দায়ের করা হবে। পুলিশ সূত্রের খবর, ধৃতদের বিরুদ্ধে মারধর এবং তফসিলি জাতি ও উপজাতি আইনে অভিযোগ দায়ের করা হয়। ওই হত্যাকাণ্ডে অভিযুক্ত আরও তিন জন ফেরার।
উত্তর-পূর্বের নাগরিকদের উপর পরপর হামলার ঘটনায় তীব্র প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন মণিপুরের উপ-মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি গাইখংবাম। তিনি বলেছেন, “উত্তর-পূূর্বের মানুষদের সঙ্গে যারা জঘন্য অপরাধ করছে, তাদের দেখামাত্র গুলি করে মারা উচিত।” তিনি আরও বলেছেন, “সহ্যের সীমা পার হওয়ার পরে এ ছাড়া কী-ই বা বলার থাকে?”
সম্প্রতি দিল্লিতে অরুণাচলের ছাত্র হত্যা, মণিপুরের দুই তরুণীর শ্লীলতাহানি, এক জনের ধর্ষণ, দুই যুবককে মারধরের দায় ‘আম আদমি পার্টি’ সরকারের উপর চাপিয়েছেন গাইখংবাম। তাঁর কথায়, “দিল্লিতে আপ সরকার আসার পর এই ধরনের ঘটনা বেড়েছে।” উপ-মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, দিল্লি-সহ ভারতের যে কোনও শহরে সসম্মানে থাকার অধিকার উত্তর-পূর্বের মানুষের রয়েছে। সেই অধিকার আদায় করতে সাতটি রাজ্যের নাগরিককে একজোট হয়ে লড়াই করতে হবে। উত্তর-পূর্বের বাসিন্দাদের উপরে হামলার প্রতিবাদ জানাতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল শিন্দের সঙ্গে দেখা করেন মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী ইবোবি।
এর মধ্যেই দিল্লি পৌঁছেছেন নিদো টানিয়ার মা-বাবা। প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহ এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার সময় চেয়েছেন তাঁরা।
দিল্লি-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে বসবাসকারী উত্তর-পূর্বের মানুষের সমস্যা সম্পর্কে জানতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের গঠিত বেজবরুয়া কমিটির প্রতি অনাস্থা ব্যক্ত করেছে উত্তর-পূর্বের সংগঠনগুলি। আপ সরকারেরও সমালোচনা করে তারা। সংগঠনগুলির বক্তব্য, সামাজিক কোনও সংস্থার সঙ্গে আলোচনা না-করেই কেন্দ্র ওই কমিটি তৈরি করেছে। তাতে কয়েক জন অবসরপ্রাপ্ত আমলা রয়েছেন। মহিলা সদস্য নেই। সে কারণে ওই কমিটি পুনর্গঠনের দাবি উঠেছে।
প্রাক্তন আইএএস অফিসার এম পি বেজবরুয়ার নেতৃত্বাধীন ওই কমিটি উত্তর-পূর্বের বিভিন্ন সংগঠন, ব্যক্তি বিশেষের কাছে এ সংক্রান্ত পরামর্শ দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছে।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.