|
|
|
|
চড়ুইভাতিতে গিয়ে ওল্টাল নৌকা, ওড়িশায় মৃত ২৮ |
সংবাদ সংস্থা • সম্বলপুর
১০ ফেব্রুয়ারি |
নৌকায় বেশি লোক উঠে পড়ায় মাঝি বারবার সতর্ক করেছিলেন। কিন্তু তার তোয়াক্কা না করে ওই নৌকাটিতেই গাদাগাদি করে উঠেছিলেন অনেকে। মাঝ রাস্তায় সেই নৌকাই উল্টে গিয়ে ডুবে মৃত্যু হল ২৮ জনের। আন্দামানের পরে এ বার ওড়িশা। এক মাসের মধ্যে ফের নৌকাডুবির ঘটনা।
ওড়িশার সম্বলপুরে হিরাকুদ ড্যামের কাছে গত কাল চড়ুইভাতি করতে গিয়েছিলেন ১১৪ জন। চড়ুইভাতির ফাঁকে নৌকাবিহারে বেরিয়েছিলেন সবাই। ওড়িশার পরিষদীয় মন্ত্রী কল্পতরু দাস জানিয়েছেন, মোটরচালিত ওই নৌকাটিতে ৭০-৮০ জনের বেশি লোক ওঠার কথা নয়। কিন্তু তাতেই ঠাসাঠাসি করে ওঠেন প্রায় ১১৪ জন। শুধু তা-ই নয়, স্থানীয় জনা তিরিশ বাসিন্দাও ওই একই নৌকায় ওঠেন। কারও কারও আবার সঙ্গে ছিল মোটরবাইক। খানিকটা যাওয়ার পর নৌকাটির মোটর খারাপ হয়ে যাওয়ায় যাত্রীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তার উপর নৌকাটিতে ফুটো হয়ে জলও ঢুকতে শুরু করে। ওই নৌকার পাশ দিয়ে যাচ্ছিল আরও দু’টো নৌকা। ব্যস। আর অপেক্ষা করেননি যাত্রীরা। একের পর এক জলে ঝাঁপাতে শুরু করেন তাঁরা।
তাতে ফল হয় উল্টো। এই হুড়োহুড়ির ফলে নৌকাটি পুরো উল্টে যায়। পাশের নৌকার যাত্রীরা তাড়াতাড়ি পারে পৌঁছে পুলিশে খবর দেন। প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই রওনা দেন বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের কর্মীরা। মুখ্যমন্ত্রী নবীন পট্টনায়ক তখন দিল্লিতে। তাঁর নির্দেশে ঘটনাস্থলে যান শুল্ক ও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের মন্ত্রী এস এন পাত্র ও অর্থমন্ত্রী প্রসন্ন আচার্য। কাল সন্ধের মধ্যে ডুবুরির সাহায্যে উদ্ধার করা হয় একশো জনেরও বেশি যাত্রীকে। বিশেষ ত্রাণ কমিশনার পি কে মহাপাত্র জানিয়েছেন, এখনও খোঁজ মেলেনি কমপক্ষে ৭ জনের। ফলে মৃতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা প্রশাসনের। আহত কয়েক জন যাত্রীকে সম্বলপুর, বুরলা ও বরেইপলির হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। মৃতদের পরিবারপিছু দেড় লক্ষ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে ওড়িশা সরকার। বলা হয়েছে, আহতদের চিকিৎসা করা হবে নিখরচায়। ঘটনার প্রশাসনিক তদন্তের নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য সরকার।
কাল দু’দিনের ওড়িশা সফরে এসেছেন কংগ্রেসের সহ সভাপতি রাহুল গাঁধী। নৌকাডুবির খবর পেয়ে আজ সকালেই তিনি হিরাকুদে যান। সেখানে মৃতদের পরিবারের কয়েক জন সদস্যের সঙ্গে কথা বলেন রাহুল। কথা বলেন সম্বলপুরের জেলাশাসক বলবন্ত সিংহের সঙ্গেও। জানতে চান উদ্ধার কাজ কী ভাবে চলছে।
বিষয়টি নিয়ে হইচই শুরু করেছে বিজেপিও। তাদের দাবি, জল পরিবহণের ক্ষেত্রে সুরক্ষা যাচাইয়ে জন্য জাতীয় কমিশন গড়ুক কেন্দ্র। অল্প কয়েক দিনের মধ্যে পর পর নৌকাডুবির ঘটনার জন্যই বিজেপি এই দাবি তুলছে বলে জানিয়েছেন ওড়িশার দায়িত্বে থাকা রাজ্যসভার সাংসদ চন্দন মিত্র। তাঁর কথায়, “আমরা বিষয়টি সংসদেও নিয়ে যাব। দেশের একের পর এক জায়গায় নৌকাডুবি ঘটনা ঘটছে। অথচ যাত্রী সুরক্ষা নিয়ে কেউ মাথা ঘামাচ্ছে না।” রাজ্য সরকারের দায়িত্বজ্ঞানহীনতার জন্যই বারবার এমন দুর্ঘটনা ঘটছে বলেও অভিযোগ করেছে বিজেপি। |
|
|
|
|
|