বারো হাজার রেশন কার্ড ডিজিটাইজেশনের কাজ শুরু হয়েছে। তার জন্য নিযুক্ত মাত্র এক জন। ফলে যা হওয়ার, তা-ই হল। অসংখ্য মানুষ ভিড় জমাচ্ছেন রেশন দোকানে। সময়ে কাজ না হওয়ায় বচসা-গোলমাল-হাতাহাতি, বাকি নেই কিছুই। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে হাজির হতে হয় পুলিশকেও। অথচ নির্বিকার প্রশাসন। দুর্ভোগের এমন অভিযোগই তুলেছেন রেশন গ্রাহকেরা। ঘটনাস্থল বিধাননগরের বি জে মার্কেট।
সমস্যা স্বীকার করে খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক জানান, যে তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাকে এই কাজের বরাত দেওয়া হয়েছে, তাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠক করবেন। তবে তাঁর অভিযোগ, এই সমস্যার নেপথ্যে রেশন ডিলারদের একাংশের ভূমিকা রয়েছে। যদিও রেশন ডিলারদের একাংশ এই অভিযোগ মানতে নারাজ। তাঁদের পাল্টা দাবি, কর্মীও কম, যন্ত্রপাতিও তেমন ভাল নয়।
খাদ্যমন্ত্রী জানান, প্রতি জেলায় এই কাজ শুরু হয়েছে। উত্তরবঙ্গে দুই জেলায় এই প্রকল্পের কাজ প্রায় শেষ। ইতিমধ্যে এই প্রকল্পের জন্য ১১২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। আরও ২০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। তবে একটি তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থাকে বরাত দেওয়াই নয়, রেশন কার্ড ডিজিটাইজেশনের জন্য যন্ত্রপাতিও কেনা হয়েছে। তাঁর দাবি, ডিজিটাইজেশনের প্রকল্প কার্যকর হলে জাল রেশন কার্ড সহজে ধরা পড়বে। এটিএম কার্ডের মতোই যে কোনও রেশন দোকান থেকে সামগ্রী ক্রয় করতে পারবেন গ্রাহকেরা। কাজ দ্রুত শেষ করতে নির্দিষ্ট সময়ও দেওয়া হয়েছে বলে দাবি খাদ্যমন্ত্রীর।
বি জে মার্কেটে গত সপ্তাহ থেকে চলছে ডিজিটাইজেশনের কাজ। কিন্তু দেখা গেল মাত্র এক জন কর্মী সেই কাজের জন্য দোকানে রয়েছেন। অথচ সকাল থেকেই অসংখ্য মানুষ হাজির। গোলমাল প্রত্যাশিতই। গ্রাহকদের মধ্যে গোলমাল থামাতে পুলিশকে হাজির হতে হয়। এমন ঘটনা শুধু সল্টলেকে নয়, কলকাতা ও শহরতলির বিভিন্ন জায়গায় এমন অভিযোগ উঠেছে।
গ্রাহকদের অভিযোগ, রেশন দফতরের হাতে গোনা কয়েক জন কর্মীর পক্ষে এই ভিড় সামলে সময়ে কাজ করা অসম্ভব। পাশাপাশি যে প্রক্রিয়া বা যন্ত্রপাতি ব্যবহার হচ্ছে, তার সংখ্যা ও মান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। সঙ্গে চলছে রেশন দোকানে প্রতিদিনের কাজও।
খাদ্যমন্ত্রী জানান, ২০,০০০ রেশন দোকানের জন্য ১০,০০০ যন্ত্র কেনা হয়েছে। সমস্যা হওয়ার কথা নয়। তবে দ্রুত সমস্যা মেটাতে বরাত পাওয়া সংস্থার সঙ্গে বৈঠক করবেন বলে জানান তিনি। নজরদারি বাড়াতে চিঠি দেওয়া হবে বিধাননগরের কমিশনারকেও।
তবে তাঁর অভিযোগ, এই দফতরের বিভিন্ন কাজে হাত দেওয়ার সময়ে বাধা এসেছে। এই প্রকল্পের কাজেও তার ব্যতিক্রম হচ্ছে না। পাশাপাশি, রেশন ডিলারদের একাংশেরও ভূমিকা রয়েছে। তাঁর দাবি, যে কোনও মূল্যেই রাজ্য সরকার এই প্রকল্প কার্যকর করবে। |