একটি আবাসিক শিশু নিকেতনের শৌচাগার থেকে মাঝবয়েসী এক মহিলার দেহ উদ্ধার হল বর্ধমানে। সোমবার দুপুরে শহরের বামবটতলার ওই ঘটনায় ওই আশ্রমের পরিচালিকা ও এক কর্মীকে আটকও করেছে পুলিশ। বর্ধমান থানার আইসি দিলীপকুমার গঙ্গোপাধ্যায় জানান, মৃতার নাম ছবি মিস্ত্রী (৪২)। বহু বছর ধরে ওই আবাসনেই থাকতেন তিনি। তবে আশপাশের বাসিন্দাদের অভিযোগ, ছবিদেবীকে খুন করা হয়েছে। ঘটনাটি খুন না আত্মহত্যা জানতে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশও।
স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বামগ্রামের ওই পান্নাময়ী শিশু নিকেতনটিতে বিভিন্ন হাসপাতালে ফেলে যাওয়া ছেলেমেয়েদের প্রতিপালন করা হয়। আশ্রমে রেখে তাদের লেখাপড়ার ব্যবস্থাও করা হয়। টাকাপয়সা পুরোটাই জোগাড় করেন ওই আশ্রমের পরিচালিকা তৃপ্তি রায়। এ দিন ঘটনার পরে আশ্রমের সামনে ভিড় জমে স্থানীয় বাসিন্দাদের। এলাকার তৃণমূল পঞ্চায়েত সদস্যা কোহিনূর মির্জা বেগম বলেন, “ওই শিশু নিকেতনকে কেন্দ্র করে দীর্ঘদিন ধরেই বিশৃঙ্খলা চলছে। শিশুদের ঠিকমতো খেতে দেওয়া হয়না, পোশাকও দেওয়া হয় না এমনকী মাঝেমধ্যে মারধর করা হয় বলেও খবর পাই।” স্থানীয় আসগর আলি শেখ মোমিল, ফজলুল রহমানেরা বলেন, “ওই আশ্রমে শিশু পালনের নামে নানা রহস্যজনক কারবারের কথাও শোনা গিয়েছে। তবে এতদিন কেউ ওটা নিয়ে মাথা ঘামায়নি।” স্থানীয় বৈকুণ্ঠপুর পঞ্চায়েতের প্রধান সুব্রত পালও বলেন, “আশ্রমের নানা গোলমালের কথা শুনে মাঝেমধ্যেই গিয়েছি। কিন্তু ওই মহিলা আমাদের বড় বড় পুলিশ অফিসার, নেতা-মন্ত্রীদের নাম করে ভয় দেখান। ফলে কিছুই করতে পারিনি আমরা।” |
ওই শিশু নিকেতনের আবাসিক ১০-১২ বছরের প্রিয়ংশি, রিয়া, সন্তোষেরা অবশ্য পুলিশ ও সংবাদমাধ্যমের সামনে চেঁচিয়ে বলতে থাকে, ‘তৃপ্তি দিদিমনি ছবিদিকে মেরেছে।’ তৃপ্তিদেবী এ ব্যাপারে মুখ না খুললেও তাঁর সঙ্গে আটক হওয়া ওই শিশু নিকেতনের কর্মী তপতী মুখোপাধ্যায় বলেন, “আশ্রমে ছবির প্রেমিকের আসা নিয়ে তৃপ্তি দিদিমনির সঙ্গে প্রায়ই বচসা হত। আজও তৃপ্তিদি ছবিকে বকাঝকা করেন। তারপরেই বাথরুমে গিয়ে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করে ছবি।” |