আশ্বাসই সার, পরিবহণ দফতর হয়নি কাটোয়ায়
ল্লিশ বছর বয়সে অনেক শখ করে মোটর বাইক কিনেছিলেন কাটোয়া শহরের শ্যামল সাহা। কিন্তু এখন সেই মোটর বাইকই তাঁর মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কারণ, মোটর বাইকের প্রয়োজনীয় কাগজ পাওয়ার জন্য তাঁকে বাড়ি থেকে প্রায় ৫৮ কিলোমিটার উজিয়ে যেতে হচ্ছে দূরে বর্ধমানের আঞ্চলিক পরিবহণ দফতরে (আরটিও)। শুধু তাই নয়, গাড়ি কেনার পরে তিনি জানতে পেরেছেন, গাড়ির কর দেওয়া, ড্রাইভিং লাইসেন্স-সহ গাড়ি সংক্রান্ত সব কাজের জন্যই বর্ধমানে যেতে হবে। শ্যামলবাবু অবশ্য একা নন, কাটোয়া শহরে জেলা পরিবহণ দফতরের শাখা না থাকায় গাড়ি কেনার পরে কাটোয়ার অনেক ব্যক্তিই এই সমস্যায় পড়ছেন। তবে জেলাশাসক সৌমিত্র মোহনের আশ্বাস, “এ বার কাটোয়াতেও পরিবহণ দফতর খোলা হবে।”
প্রশাসন ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০০০ সাল থেকে ২০০৭ সাল পর্যন্ত পরিবহণ দফতর থেকে কাটোয়াতে শিবির করে গাড়ির মালিকদের কাগজ সংক্রান্ত সমস্যা মেটানো হত। ২০০৭ সালের পরে হঠাৎই এই শিবির বন্ধ করে দিয়ে পরিবহণ দফতর থেকে জানানো হয়, কাটোয়ায় স্থায়ী ভাবে পরিবহণ দফতর তৈরি করা হবে। কিন্তু আশ্বাসই সার। কাটোয়াতে স্থায়ী পরিবহণ দফতর এখনও তৈরি হয়নি। বন্ধ হয়ে যাওয়া শিবিরও চালু হয়নি। ফলে ভরসা বলতে সেই বর্ধমানের আঞ্চলিক পরিবহণ দফতর। গ্রামবাসীদের অভিযোগ, কাটোয়াতে পরিবহন দফতরের অফিস খোলার দাবি জানিয়ে প্রশাসনের নানা স্তরে বিভিন্ন সময়ে চিঠি দেওয়া হলেও কোনও কাজ হয়নি। অথচ, কাটোয়ায় পরিবহণ দফতর থাকলে ওভারলোডিং, বেআইনি গাড়ির দাপাদাপি বন্ধ করার জন্য পরিবহণ দফতরের কর্মীরা বাড়তি নজরদারি চালাতে পারতেন।
জেলা পরিবহণ দফতরের তথ্য অনুযায়ী, কাটোয়াতে প্রতি মাসে গড়ে ১৫০-১৭৫টি মোটর বাইক বিক্রি হয়। চার চাকা গাড়ির বিক্রিও এখানে বেশ ভাল। কাটোয়ার বাস ও লরির মালিকদের অভিযোগ, গাড়ি রাস্তায় বেরোনোর যোগ্য কি না সেটার শংসাপত্র আনার জন্য দীর্ঘ পথ উজিয়ে বার বার পরিবহণ দফতরে যাওয়া খুব সমস্যার। তাই অনেকেই অবৈধ উপায়ে বাড়তি টাকা দিয়ে গাড়ির কাগজ বের করতে বাধ্য হন। কাটোয়া শহরের বাসিন্দা রমা দাশগুপ্ত , কেতুগ্রামের আব্দুর রবদের কথায়, “লাইসেন্স পেতে গেলে তিন দিন বর্ধমান যেতে হবে। তার মানে কম করে চারশো টাকা খরচ। তার পরে গেলেই যে কাজ হবে তার কোনও নিশ্চয়তা নেই। তাই মাঝে মাঝে বাড়তি টাকা খরচ করে কাগজ বের করতে হয়। এতে টাকা বেশি খরচ হলেও সময় বাঁচে।”
কাটোয়া লরি মালিক সমিতির সভাপতি মধু চৌধুরীর দাবি, ২০০৭ সালে পরিবহণ দফতর শিবির তুলে নেওয়ার পরে তাঁদের পক্ষ থেকে কাটোয়ায় পরিবহণ দফতরের শাখা অফিস খোলার জন্য মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। তার পরে মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয় থেকে বর্ধমানের তৎকালীন জেলাশাসককে চিঠি দিয়ে কাটোয়াতে দ্রুত পরিবহণ দফতর খোলার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। মধুবাবুর অভিযোগ, “তার পরেও কাটোয়ায় পরিবহণ দফতরের শাখা হল না।” কাটোয়া বাস মালিকদের পক্ষে নারায়ণচন্দ্র সেন বলেন, “গাড়ির ফিটনেস শংসাপত্র আনতে চালকদের গাড়ি নিয়ে মাঝে মধ্যেই বর্ধমান ছুটতে হয়। তখন করুই, যবগ্রাম, বনকাপাশির মতো বেশ কয়েকটি লোকাল রুটের বাস চলাচল বন্ধ থাকে। ফলে যাত্রীরা সমস্যায় পড়েন।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.