ভোট বড় বালাই। আম আদমি কিছু দিনের জন্য পুজো পান এই সময়টিতেই। ঝাঁপি উপুড় করে সরকার এ সময়ে সচেষ্ট হয় ভোটদাতাদের মন পেতে। লোকসভা ভোটের আগে এই প্রচেষ্টা শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যেই।
কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক অবস্থা এখন আদৌ ভাল নয়। অর্থ সংগ্রহে সরকার এখন মরিয়া। সব রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাকে বলা হয়েছে, অন্তর্বর্তী ডিভিডেন্ড দিতে। প্রতিটি ১০ টাকার শেয়ারে কোল ইন্ডিয়া এরই মধ্যে ডিভিডেন্ড দিয়েছে ৯ টাকা করে।
স্পেকট্রাম নিলাম করে সরকারি কোষাগারে ঢুকতে পারে ৫০,০০০ কোটি টাকারও বেশি তহবিল। বিতরণ চলবে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণার দিন পর্যন্ত। এরই মধ্যে এক ডজনে পৌঁছেছে ভর্তুকির সিলিন্ডার। ইপিএফ পেনশন বাড়িয়ে করা হচ্ছে ন্যূনতম ১০০০ টাকা। এতে উপকৃত হবেন কমবেশি ২৮ লক্ষ পেনশনপ্রাপক। বাড়ানো হয়েছে প্রভিডেন্ট ফান্ডের সুদও। ২০১৩-’১৪ আর্থিক বছরে পি এফে সুদ ৮.৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ৮.৭৫ শতাংশ। এতে উপকৃত হবেন ৫ কোটি গ্রাহক। এ ছাড়া ডি এ এবং পেনশন বাড়তে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের।
|
ইনফ্লেশন ইনডেক্সড ন্যাশনাল সেভিং সিকিউরিটিজ |
লগ্নির পরিমাণ- |
• কমপক্ষে ৫০০০ টাকা
• সর্বাধিক ৫ লক্ষ টাকা |
মেয়াদ- |
• ১০ বছর |
সুদের হার- |
মূল হার ১.৫%। সঙ্গে যোগ হবে ক্রেতার মূল্য সূচকের হার।
(যেমন, মূল্য সূচক ৯.৫% হলে বার্ষিক সুদ হবে ১১%।
অর্থাৎ সূচকের সঙ্গে সুদ বাড়া-কমার সুযোগ থাকবে।) |
আগে ভাঙানোর সুবিধা- |
শর্তসাপেক্ষে প্রবীণ নাগরিকেরা ১ বছর পর
এবং অন্যরা ৩ বছর পর ভাঙাতে পারবেন। |
করযোগ্যতা- |
সুদ করযোগ্য |
ফর্ম প্রাপ্তি- |
স্টেট ব্যাঙ্ক এবং যে-কোনও রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক,
এইচডিএফসি, আইসিআইসিআই এবং অ্যাক্সিস ব্যাঙ্কে। |
|
|
ভর্তুকির বহর বাড়লে সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন ঠিকই, কিন্তু এতে একটুও খুশি হতে পারে না শেয়ার বাজার এবং বিদেশি লগ্নিকারীরা। সামনে লোকসভা নির্বাচন থাকায় এখন থমকে যাবে আর্থিক সংস্কারের কাজ। এই কারণে কিছু দিন হল শেয়ার বাজারের ঝাঁঝ যেন অনেকটা কমে এসেছে।
এ বার বাজেট উৎসব হচ্ছে না ফেব্রুয়ারি মাসে। সামনে নির্বাচন থাকায় খরচ অনুমোদনের জন্য শুধু পাশ হবে ভোট অন অ্যকাউন্টস। এতে থাকবে না উত্তেজনা। ব্যক্তিগত আয়কর এবং কোম্পানি করের মতো প্রত্যক্ষ করে কোনও পরিবর্তন আসবে না। অর্থমন্ত্রীর কথায়, ভোট অন অ্যাকাউন্টসের আকার হতে পারে মাত্র ১২ থেকে ১৮ পাতা। নতুন কর না-চাপলেও নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে পরোক্ষ কর যেমন, উৎপাদন শুল্ক, পরিষেবা কর ইত্যাদি ক্ষেত্রে কাটছাঁট করা হতেই পারে। এর জন্য সংসদের অনুমোদন প্রয়োজন হয় না। শেষ দু’মাসে অর্থ সংগ্রহ বাড়লে নেমে আসতে পারে বাজেট ঘাটতির পরিমাণ। প্রাক্ নির্বাচন পর্বে এই সাফল্যও চিদম্বরম তুলে ধরতে চাইবেন বাজেট অধিবেশনে।
যাঁরা ৮০-সি ধারায় কর সাশ্রয়ের জন্য প্রকল্প খুঁজছেন, তাঁরা ন্যাশনাল হাউসিং ব্যাঙ্কের ‘এন এইচ বি সুবৃদ্ধি’ প্রকল্পটি পরীক্ষা করে দেখতে পারেন। রিজার্ভ ব্যাঙ্কের সম্পূর্ণ মালিকানাধীন এই ব্যাঙ্ক ৫ বছর মেয়াদি ওই প্রকল্পে প্রবীণ নাগরিকদের সুদ দিচ্ছে ৯.৮৫ শতাংশ এবং অন্যদের ৯.২৫ শতাংশ। প্রকল্পটির ক্রেডিট রেটিং ‘এএএ’ (ট্রিপ্ল এ)।
ইনফ্লেশন ইনডেক্সড বন্ড ইস্যুর মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। আগে বন্ধ করা না-হলে এই ইস্যু খোলা থাকবে ৩১ মার্চ পর্যন্ত। যাঁদের নিয়মিত আয়ের প্রয়োজন নেই, তাঁরা এই সরকারি প্রকল্পে টাকা রাখতে পারেন, যা সুদে আসলে বেড়ে উঠবে ১০ বছরে। সঙ্গের সারণিতে দেওয়া হল প্রকল্পটির মূল বৈশিষ্ট্য। |