সারদা গোষ্ঠীর আর্থিক কেলেঙ্কারিতে গ্রেফতার হওয়ার আগে -পরে নানান হুমকি দিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ কুণাল ঘোষ। এ বার তিনি আমরণ অনশনে বসার হুমকি দিলেন। তাঁর অভিযোগ, বিচারের নামে প্রহসন চলছে।
শুক্রবার বিধাননগর আদালতে সারদা কাণ্ডে প্রভিডেন্ট ফান্ড দফতর সংক্রান্ত একটি মামলার চার্জ গঠন ছিল। শুনানির পরে আদালত থেকে বেরোনোর পথে অভিযুক্ত কুণালবাবু বলেন, “চার্জ গঠন হয়ে গেল। অথচ কিছুই শুনতে পেলাম না। বিচারের নামে প্রহসন চলছে। এর প্রতিবাদে আমি আমরণ অনশন শুরু করব।” এই ব্যাপারে তিনি মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্য সরকারেরও হস্তক্ষেপ দাবি করেছেন।
পিএফ নিয়ে মামলার শুনানিতে এ দিন কুণালবাবু ছাড়াও সারদার কর্ণধার সুদীপ্ত সেন, দেবযানী মুখোপাধ্যায় ও সোমনাথ দত্তকে বিচার বিভাগীয় ম্যাজিস্ট্রেট স্বাতী মুখোপাধ্যায়ের এজলাসে তোলা হয়। সোমনাথের আইনজীবী শ্যামল বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, যে -সব নিয়ম মেনে মামলা করা উচিত ছিল, পিএফ দফতর তা করেনি। তাই এই মামলা বাতিল করে দেওয়া উচিত।
দেবযানীর আইনজীবী অনির্বাণ গুহঠাকুরতা বিচারকের কাছে আর্জি জানান, বক্তব্য জানানোর জন্য তাঁকে কিছু সময় দেওয়া হোক। রাজি হননি বিচারক। সেই সময়েই সরকার পক্ষের আইনজীবীরা তাঁদের বক্তব্য শোনার জন্য সমস্বরে আর্জি জানান বিচারকের কাছে। বিচারক ওই আর্জি মেনে নিলে বলতে শুরু করেন তাঁরা। এ বার প্রতিবাদ করেন অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবীরা। এই নিয়ে দু’পক্ষে বিতণ্ডা শুরু হয়ে যায়। তখনই বিচারকের উদ্দেশে কুণালবাবু বলেন, আমায় বলতে দেওয়া হোক। বিচারক তাঁর আবেদন মঞ্জুর করেনি।
এর মধ্যেই এজলাসে অসুস্থ হয়ে পড়েন দেবযানী। তাঁকে সেখান থেকে বার করে কোর্ট লক -আপে নিয়ে যায় পুলিশ। পরিস্থিতি বিচার করে বিচারক ১০ মিনিটের জন্য আদালতের কাজ বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করেন। সাময়িক বিরতির পরে আদালত চার্জ গঠনের প্রক্রিয়া শুরু করে দেয়। অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবীদের অভিযোগ, চার্জ গঠনের সময় দেবযানী হাজির ছিলেন না। কী ভাবে অভিযুক্তের অনুপস্থিতিতে আদালত ওই প্রক্রিয়া শুরু করল, সেই প্রশ্ন তোলেন তাঁরা। এই নিয়ে ফের আর এক দফা বিতণ্ডা বাধে আদালতের ভিতরে। চিৎকার -চেঁচামেচির মধ্যেই অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আনা চার্জ পড়তে শুরু করেন এক সরকারি মহিলা আইনজীবী। তা নিয়ে আবার দু’পক্ষের আইনজীবীদের মধ্যে তুমুল কথা কাটাকাটি শুরু হয়ে যায়। এর মধ্যেই লক -আপ থেকে দেবযানীকে ফের এজলাসে নিয়ে আসে পুলিশ।
সরকার পক্ষের মহিলা আইনজীবী তখন দেবযানীর কানের কাছে মুখ নিয়ে গিয়ে চার্জ পড়ে শোনান। তা দেখে অভিযুক্ত পক্ষের আইনজীবীরা প্রতিবাদ করেন। দেবযানীর আইনজীবী অনির্বাণবাবু বলেন, আমার মক্কেল অসুস্থ। ওঁর চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হোক। আদালত থেকে বেরোনোর সময় দেবযানী দাবি করেন, তিনি কিছুই শুনতে পাননি। সুদীপ্ত এ দিন কিছু বলতে চাননি। |