বাংলাদেশি তিকিতাকা মাঝমাঠেই থামাতে চান করিম
ডু অর ডাই। কোনও উপায় নাই!
টিভির জনপ্রিয় লাফ্টার শো-র স্লোগানটাই যেন শনিবার শিল্ডে শেখ জামাল ধানমন্ডি ম্যাচের আগে রিংটোন বাগানে!
সকাল এগারোটা পাঁচ। ক্লাব লনে রাখা বাইকে স্টার্ট দিলেন সত্যেন সাবিথ। ঘুরে তাকালেন করিম বেঞ্চারিফা। তাঁর মালয়ালি স্ট্রাইকার কাছাকাছি আসতেই চোখ টিপে কিছু একটা ইশারা করলেন বাগান কোচ। ওডাফাহীন বাগান আক্রমণে সাবিথ-ই যে শিবরাত্রির সলতে। কোচকে বরাভয় দেখানোর মতো হাত তুলে সাঁ করে গোষ্ঠ পাল সরণি দিয়ে বেরিয়ে গেলেন শনিবার করিমের সবেধন নীলমণি স্ট্রাইকার।
বাংলাদেশের ক্লাবের বিরুদ্ধে ড্র করলেই সেমিফাইনাল। সেই দলের ‘ম্যান ফ্রাইডে’ হাইতি স্ট্রাইকার সনি নর্ডি। বাঁ দিক ধরে খেলতে খেলতে আউটসাইড ড্রিবল করে ঢুকে পড়েন বক্সে। আর্জেন্তিনার ক্লাবে খেলা স্ট্রাইকার গোলার মতো শটে গোল করতেও ওস্তাদ। বিকেলে মাঁকড়দহের প্র্যাকটিস মাঠ পছন্দ হয়নি। গজগজ করেছেন অনুশীলন সে ভাবে না হওয়ায়। ম্যানেজার আবদুল গফ্ফরের পাশে দাঁড়িয়ে নর্ডির হুঙ্কার, “ইস্টবেঙ্গলের সঙ্গে সেমিফাইনাল খেলতে মুখিয়ে আছি।”
পারবেন নর্ডিদের হারিয়ে প্রায় চার বছরের ট্রফি খরা কাটানোর ‘শিল্ড-প্রদীপ’ জ্বালিয়ে রাখতে। শুনেই হাসতে লাগলেন মিতভাষী সাবিথ। “ড্র কেন? জিততে হবে। আমরা তো জিততেই নামব।” সাবিথের সুরই যেন রেকর্ডের মতো বাজছে প্রীতম, সৌভিক, কাতসুমিদের গলায়।

দুঃসময় এড়াতে এককাট্টা। শিল্ডের মরণ-বাঁচন ম্যাচের
আগের দিন করিমের ক্লাসে। ছবি: উৎপল সরকার।
ওডাফা-ক্রিস্টোফার-মণীশ ভার্গব নেই। চোটের জন্য অনিশ্চিত ডেনসন-ও। দু’দিন আগে যিনি সাংবাদিকদের অনুরোধ করেছিলেন, তাঁর দলের জন্য ‘একটু প্রার্থনা’ করার জন্য, বাগানের সেই মরক্কান কোচের গলাতে এ দিন হঠাৎ-ই আত্মবিশ্বাসের ফোয়ারা। “ওদের বেশ ক’জন ফুটবলার একক দক্ষতায় ম্যাচ ঘুরিয়ে দিতে পারে। তবে ওদের সেমিফাইনাল যেতে গেলে জিততেই হবে। সালগাওকরে থাকার সময় এএফসি কাপে এ রকম পরিস্থিতিতেই ইসফাককে লেফট ব্যাকে খেলিয়ে ওমানের আল-আরুবাকে হারিয়েছিলাম। ধানমন্ডিকে হারাতেই নামবে আমাদের ছেলেরা।”
শনিবার এক পয়েন্ট না এলে এ মরসুমও ট্রফিহীন থাকতে হবে মোহনবাগানকে। কলকাতা লিগ, ফেড কাপ হয়নি। আই লিগ জয়ের স্বপ্নও কার্যত খতম। ট্রফি-বুভুক্ষু বাগান সমর্থকদের শেষ ভরসা আইএফএ শিল্ড। ড্র করলেই সেমিফাইনাল। আর জিতলে শেষ চারের যুদ্ধে এড়ানো যাবে মহাডার্বি। যা শুনে আবার করিম বলছেন, “এত কিছু ভাবিনি। আগে তো শেষ চারের টিকিট পাই।”
বাংলাদেশি আক্রমণে নর্ডি-এমেকা যুগলবন্দি যদি তুরুপের তাস হয়, তা হলে পিছনে রয়েছে অধিনায়ক মামিনুল, সোহেল, নাইজিরিয়ান মিডিও আমিসুরের সৃষ্টিশীল ফুটবল। মাঝমাঠে টানা সাত-আটটা পাস খেলতে খেলতে যাঁরা বিপক্ষের গোলের কপাট নড়বড়ে করে তোলেন। নর্ডির কথায়, “বাংলাদেশি তিকিতাকা”। ধানমন্ডির এই পাসিং ফুটবলের ফুলঝুরি নিভিয়ে দিতে কাতসুমিদের অস্ত্র হতে চলেছে সঠিক কভারিংয়ের সঙ্গে প্রেসিং ফুটবল। ‘লাঙল যার জমি তার’ স্লোগানের মতোই শনিবার সবুজ-মেরুনের রণকৌশল— মাঝমাঠ যার ম্যাচ তার।
সেই লক্ষেই এ দিন অনুশীলনে প্রীতম-ইচে-কিংশুক-সৌভিককে নিয়ে সাজানো ব্যাক ফোর-এর আগে ব্লকার আইবর। সামনে রাম, জাকির, কাতসুমি, পঙ্কজদের মিডফিল্ড। আক্রমণে একা সাবিথ। তবে বাগানের ভিতরের খবর, শেষ মুহূর্তে ফিট হলে ডেনসন খেলবেন, আইবরের জায়গায়। তখন কিংশুকের বদলে সেন্ট্রাল ডিফেন্সে ইচের সঙ্গী আইবর।
কিন্তু তিনি—ওডাফা ওকোলি কোথায়?
সকালে অনুশীলন দেখতে আসা বাংলাদেশের সাংবাদিকরাও জানতে চাইছিলেন, “আপনাগো ওডাফা তো ডেঞ্জার! খেলব নাকি কাল? কোথায় সে?” বাগানের সওয়া দু’ কোটির স্ট্রাইকার তখন র‌্যাম্পার্টের দিকে ফুটবলারদের ছাউনিতে বসে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে মাঠে। তাঁবু ছাড়ার আগে শুধু বললেন, “দশ-বারো দিন লাগবে ফিট হতে। তবে ফিরবই।”
বাগান সমর্থকদের কাছে আপাতত তাই ওডাফা নন। গঙ্গাপারের তাঁবুতে ডোডো পাখি হয়ে ওঠা ট্রফি ফেরাতেই বরং যত আকুতি। জামালকে কামাল করে জয় কিংবা নিদেনপক্ষে একটা ড্রয়ের জন্য চলছে সবুজ-মেরুন সমর্থকদের প্রার্থনা।

শনিবারে আই এফ এ শিল্ড

মোহনবাগান: শেখ জামাল ধানমন্ডি, (যুবভারতী ৩-০০)

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.