আই এফ এ শিল্ড সেমিফাইনালে ইস্টবেঙ্গল যে কোনও দলের মোকালিায় তৈরি জানিয়ে দিলেন আর্মান্দো কোলাসো। বৃহস্পতিবার তিনি বলে দিলেন, “যে দলই সামনে পড়ুক না কেন, আমরা তৈরি আছি। সেমিফাইনালে যখন উঠেছি, ট্রফি ছাড়া অন্য কিছু ভাবছি না।”
এতদিন লাল-হলুদের গোয়ান কোচ বলে আসছিলেন, শিল্ড নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন না। আই লিগকেই পাখির চোখ করেছেন তিনি। কিন্তু দল সেমিফাইনালে উঠতেই হঠাৎ-ই সিরিয়াস সেই মানুষই। বৃহস্পতিবার সকালে অনুশীলনের পর বলেও দিলেন, “শিল্ডের গুরুত্ব নেই বলেছিলাম। কিন্তু চোট-আঘাত পাওয়া ফুটবলারদের সাহায্য ছাড়াই যে ভাবে দল সেমিফাইনালে গিয়েছে তাতে আমি খুশি।” এখানেই না থেমে আর্মান্দোর সংযোজন, “শেষ চারে কোনও দলই সহজ প্রতিপক্ষ নয়। তবে আমরা ওই ম্যাচ জিতে ফাইনালে যাওয়ার জন্য তৈরি। কোনও দলকেই অতিরিক্ত সমীহ বা হেলাফেলার মানসিকতা নিয়ে দেখছি না।”
পরিস্থিতি যা তাতে শেষ চারের লড়াই হলেও হয়ে যেতে পারে ডার্বি। মোহনবাগান বা মহমেডান বা বাংলাদেশের শেখ জামাল ধানমন্ডির সঙ্গেও খেলতে হতে পারে মোগা-চিডিদের। যদি মঙ্গলবার মুখোমুখি হতে হয় চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী বাগানের, তা হলে? এই প্রশ্নেও আর্মান্দোর গলায় ফের বোধোদয়ের সুর। বলছেন, “বিদেশি কিংবা স্বদেশি কোন দলের বিরুদ্ধে খেলা তা জানতে পারব শনিবারের পর। রান্নার আগে কি বলা সম্ভব রান্নার স্বাদ কেমন হবে? যে কোনও দলের মুখোমুখি হওয়ার জন্য ছেলেরা তৈরি। আর যে কোনও ডার্বিরই গুরুত্ব রয়েছে।”
শিল্ডেও আর্মান্দোর সংসারে নানা সমস্যা আছে। মেহতাব, খাবরা, ওপারাদের চোট। সুযোগ তৈরি হলেও শুরুতে গোল পাচ্ছে না দল। সেমিফাইনালে ওঠার জোশে আর্মান্দো এ সব ফ্যাক্টরকে ধর্তব্যের মধ্যেই আনতে নারাজ। বলছেন, “ওপারা, গুরবিন্দরের চোট সারতে সময় নিলেও মেহতাব, খাবরার রি-হ্যাব চলছে। সুয়োকা, চিডিও ক্লান্ত। এ সব নিয়েই চলতে হবে। তবে শুরুতে গোল না হলেও সুযোগ তৈরি হচ্ছে প্রচুর। আর চিডি-মোগার জুটিও আক্রমণে ছন্দ ফিরে পাচ্ছে। এগুলোই ইতিবাচক লক্ষণ।”
এ দিন সকালের অনুশীলনে হাজির থাকলেও ওপারা, গুরবিন্দর, বলজিতরা অনুশীলন করেননি মূল দলের সঙ্গে। চিডি, সুয়োকারা হালকা গা ঘামালেও জিমেই বেশি সময় কাটিয়েছেন। তবে মেহতাব, খাবরাদের দেখা যায় দলের সঙ্গে পুরোদমে অনুশীলন করতে।
যদিও ময়দানে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে, দেরিতে হলেও আর্মান্দো বুঝেছেন ফেড কাপ আসেনি। আই লিগ জয়ের সম্ভাবনাও ফিফটি-ফিফটি। তাই কলকাতা লিগের পাশাপাশি শিল্ড জিতে কলকাতায় নিজের কোচিং কেরিয়ার ঝলমলে রাখার ভাবনা হঠাৎ-ই ঘুরতে শুরু করেছে আর্মান্দোর মাথায়।
যদিও শিল্ডের ক্রীড়াসূচি বদল নিয়ে সন্তুষ্ট নন ইস্টবেঙ্গল কোচ। বলছেন, “বার বার ক্রীড়াসূচি বদল সত্যিই হতাশার। শিল্ড শেষ হতে না হতেই আই লিগে চার্চিল ম্যাচ। জানি না সেটা সরবে কি না?” যদিও পরক্ষণেই আর্মান্দো বলছেন, “এ ব্যাপারে আমাদের কিছুই করার নেই। আর এটাও ঠিক পরপর ম্যাচ খেলা যেমন ঠিক নয়। তেমনই দু’টো ম্যাচের মাঝে বেশি দিন ছুটি পেলে ফুটবলারদের মধ্যে আত্মতুষ্টি চলে আসতে পারে। আই লিগ কিংবা আইএফএ শিল্ড জিততে গেলে আত্মতুষ্ট হওয়া চলবে না কোনওমতেই।” |