বিমান সুরক্ষা নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিল খারিজ

৬ ফেব্রুয়ারি
ক সপ্তাহ আগেই বিমান সুরক্ষায় ভারতের মান প্রথম সারি থেকে দ্বিতীয় সারিতে ঠেলে দিয়েছে আমেরিকা। যার অন্যতম কারণ, এ দেশে বিমান সুরক্ষায় নজরদারির জন্য কোনও স্বাধীন সংস্থা নেই। বিমান পরিবহণ কর্তৃপক্ষ বা ‘সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটি’ তৈরি করে তড়িঘড়ি সেই গাফিলতি ঢাকতে গিয়েছিল কেন্দ্রীয় বিমান মন্ত্রক। এ জন্য সংসদে বিলও পেশ করা হয়। কিন্তু আজ সেই বিলটি খারিজ করে দিল সংসদীয় স্থায়ী কমিটি।
বিমান সুরক্ষার জন্য পৃথক নজরদারি সংস্থা না থাকায় আমেরিকার পরে এ বার ব্রিটেন ও অস্ট্রেলিয়াও ভারতের মান ছেঁটে দিতে পারে বলে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। যার ফলে এ দেশের বিমান সংস্থাগুলি বিদেশের নতুন গন্তব্যে বিমান চালাতে গেলে সমস্যায় পড়তে পারে।
যে সব দেশের বিমান নিয়মিত মার্কিন মুলুকে যাতায়াত করে, মার্কিন ‘ফেডারেল অ্যাভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন’ (এফএএ) সে দেশে বিমান সুরক্ষার খুঁটিনাটি যাচাই করে। এফএএ-র শর্ত হল, তাদের মতো এ দেশেও বিমান সুরক্ষার দিকটি দেখভালের জন্য পৃথক সংস্থা থাকতে হবে। ভারতে বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রণ, নীতি তৈরি, সেই নীতির খেলাপ হলে তার তদন্তেরও ভার ডিজিসিএ (ডিরেক্টর জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন)-এর উপর। মার্কিন শর্ত মানতে তাই তড়িঘড়ি পৃথক ‘সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটি’ তৈরির পরিকল্পনা নেয় বিমান মন্ত্রক। তাতেই সংসদীয় স্থায়ী কমিটি বাধ সেধেছে।
কমিটির চেয়ারম্যান সীতারাম ইয়েচুরি বলেন, “শুধুই নাম বদল হচ্ছে। ডিজিসিএ-র থেকে নতুন সংস্থাকে বাড়তি কোনও ক্ষমতা দেওয়া হচ্ছে না।”
ইয়েচুরির যুক্তি, নতুন সংস্থার চেয়ারম্যানের জন্য এমন যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়েছে, যাতে বিমান মন্ত্রকের বর্তমান বা অবসরপ্রাপ্ত সচিবই সেই পদে বসতে পারেন। কমিটির যুক্তি, যার দোষ তাকেই গাফিলতি খোঁজার ভার দিলে নয়া সংস্থার কোনও স্বাধীনতাই থাকবে না।
ইয়েচুরির কথায়, “এ দেশে ৯০ শতাংশ বিমান দুর্ঘটনার তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়, বিমান চালকদের দোষে দুর্ঘটনা ঘটেছিল। অর্থাৎ যাঁদের উপরে দোষ চাপানো হচ্ছে, তাঁরা আর সাক্ষ্য দেওয়ার জন্য জীবিত নেই।” পাঁচ বছর আগে হেলিকপ্টার দুর্ঘটনায় অন্ধ্রের মুখ্যমন্ত্রী ওয়াই এস রাজশেখর রেড্ডির মৃত্যুর পরে তার তদন্ত রিপোর্টে বলা হয়েছিল, কপ্টারের জ্বালানি সরবরাহে সমস্যা দেখা দেওয়ায় দুই পাইলট এমার্জেন্সি চেকলিস্ট খতিয়ে দেখতে গিয়ে ছয় মিনিট নষ্ট করেছিলেন। ইয়েচুরির বক্তব্য, “ওই দু’জনই বায়ুসেনার পোড়খাওয়া পাইলট ছিলেন। তাঁদের যুদ্ধবিমান চালানোরও অভিজ্ঞতা ছিল। তাঁদের হঠাৎ এমার্জেন্সি চেকলিস্ট খুঁটিয়ে পড়ার কেন প্রয়োজন পড়ল, সেই প্রশ্নের উত্তর মেলেনি। যার অর্থ, কপ্টারে বা অন্য কোথাও এমন কোনও সমস্যা হয়েছিল, যা ওঁদেরও বোধগম্য হয়নি।”
ইয়েচুরির নেতৃত্বাধীন স্থায়ী কমিটির বক্তব্য, মার্কিন সংস্থার সমীক্ষার আগেই তড়িঘড়ি করে সিভিল অ্যাভিয়েশন অথরিটি তৈরি করতে চেয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। যাতে দেশের বিমান সুরক্ষার মান দ্বিতীয় সারিতে না চলে যায়। কিন্তু তার আগেই সমীক্ষা হয়ে যায়।
কমিটির সুপারিশ, নতুন করে এই বিলটি তৈরি করে সংসদে নিয়ে আসা হোক। সেইসঙ্গে ১৯৩৪ সালের বিমান আইনও যুগোপযোগী করে তোলা হোক।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.