ইশরাত চার্জশিট এ বার পাল্টা অস্ত্র বিজেপিরই

৬ ফেব্রুয়ারি
শরাত জহান ভুয়ো সংঘর্ষ মামলায় পেশ করা দ্বিতীয় চার্জশিটে বিজেপিকে স্বস্তি দিল সিবিআই। শুধু স্বস্তি নয়, ভোটের মুখে হাতে অস্ত্রও তুলে দিল। ওই ঘটনায় গুজরাত আইবি-র তৎকালীন স্পেশ্যাল ডিরেক্টর-সহ চার জনকে অভিযুক্ত করা হলেও চার্জশিটে নাম নেই নরেন্দ্র মোদীর ঘনিষ্ঠ তথা তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের। আর এটাকেই হাতিয়ার করে কংগ্রেসের বিরুদ্ধে ফের একদফা অভিযোগ নিয়ে মাঠে নেমে পড়েছে কেন্দ্রের প্রধান বিরোধী দল।
ইশরাত মামলায় সিবিআইয়ের দ্বিতীয় চার্জশিট, আদালতে ছাড় পেলেও সংসদে গুজরাত দাঙ্গার জন্য নরেন্দ্র মোদীকে দায়ী করা এবং সন্ত্রাসের অভিযোগে জেলে বন্দি অসীমানন্দের সাক্ষাৎকারে সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবতকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো গত দু’দিনে এই তিনটি ঘটনার মধ্যে একটাই যোগসূত্র খুঁজে পাচ্ছেন বিজেপি নেতারা। তাঁদের বক্তব্য, ভোটের মুখে মোদীর সুশাসনের এজেন্ডার সঙ্গে টক্কর দিতে না পেরেই কংগ্রেস এখন মেরুকরণের রাজনীতিতে আশ্রয় নিতে চাইছে। সনিয়া গাঁধী যে ভাবে মোদীর নাম না করে তাঁর উদ্দেশে ‘বিষের চাষ’ করার অভিযোগ তুলেছিলেন, গোটা কংগ্রেস সেই পথ ধরেই হাঁটছে বলে অভিযোগ তাঁদের।
কংগ্রেসকে তোপ দেগে বিজেপি নেতা রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেন, “ইশরাত মামলায় অমিত শাহ বা মোদীকে দায়ী করা হয়নি। তবু গত দু’বছর ধরে কংগ্রেস এদের বিরুদ্ধে লাগাতার প্রচার করছে। আদালতের ক্লিনচিটের পরেও মনমোহন সরকারের মন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে গুজরাত দাঙ্গার জন্য মোদীকে দায়ী করছেন কোন ভিত্তিতে? রাহুল গাঁধীও একই দাবি করেছেন কিছু দিন আগে।” তাঁর ব্যাখ্যা, “মোদীর মতো সুশাসন দেওয়া সম্ভব নয় বলেই হতাশ কংগ্রেস এই সব পথ নিচ্ছে।” সন্ত্রাসে অভিযুক্ত জেলবন্দি অসীমানন্দের সাক্ষাৎকার কী ভাবে নেওয়া হল, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন বিজেপি ও সঙ্ঘ নেতারা। সঙ্ঘের মুখপাত্র রাম মাধবের কথায়, “অসীমানন্দের আইনজীবীও এ ধরনের সাক্ষাৎকারের সত্যতা আদালতে অস্বীকার করেছেন। সঙ্ঘ কখনওই এ ধরনের গতিবিধিকে প্রশ্রয় দেয় না। মোহন ভাগবত বা মোদীকে এই মামলায় জড়ানোয় স্পষ্ট, কংগ্রেস নিজেদের রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধির জন্যই এই সময়টিকে বেছে নিয়েছে।”
বিজেপি একের পর এক তোপ দাগলেও কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্ব গোটা বিষয়টিতে সে ভাবে মুখ খোলেনি। খোদ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুশীল কুমার শিন্দে অবশ্য অসীমানন্দের সাক্ষাৎকার প্রসঙ্গে বলেন, “যদি এ ধরনের দাবি করেন অসীমানন্দ, তা হলে তা খতিয়ে দেখতে হবে।” তবে রাজীব শুক্ল বা সলমন খুরশিদের মতো নেতারা এ নিয়ে সুর খুব বেশি চড়া না করারই পক্ষপাতী। তবে উত্তরপ্রদেশের কংগ্রেস নেতা বেণীপ্রসাদ বর্মার কথায়, “আরএসএস সব সময়ই এ ভাবে সন্ত্রাস করে। অবিলম্বে মোহন ভাগবতকে গ্রেফতার করা উচিত।”
কংগ্রেস নেতৃত্বের মনোভাব প্রসঙ্গে বিজেপির বক্তব্য, আসলে কেন্দ্রের শাসক দল এই কৌশলটাই নিয়েছে। সনিয়া এক বার মোদীকে নিশানা করে দেখছেন মোদী কী ভাবে তা নিয়ে মাঠে নেমেছেন। এই পরিস্থিতিতে লোকসভার আগে খুব বেশি মেরুকরণের পথে হাঁতে চায় না কংগ্রেস। তাই রাহুলও এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও মন্তব্য করেননি। কিন্তু উত্তরপ্রদেশের মতো রাজ্যগুলিতে কংগ্রেস মেরুকরণের ফায়দা তুলতে সক্রিয় বলে অভিযোগ বিজেপির। তাদের ব্যাখ্যা, মুজফ্ফরনগরের সংঘর্ষের পর মুলায়মের সংখ্যালঘু ভোটব্যাঙ্কে ধস নামতে শুরু করেছে। সেই জায়গাটাই দখল করতে চায় কংগ্রেস। একই ভাবে অন্য কয়েকটি রাজ্যেও এই পথ নিতে চায় তারা। একই সঙ্গে বিজেপি নেতারা মনে করছেন, মেরুকরণের অঙ্ককে কংগ্রেস কখনওই এমন পর্যায়ে নিয়ে যেতে চায় না, যাতে উদারমনস্ক হিন্দুদের ভোট তাদের হাতছাড়া হয়। সে কারণেই এই বিষয়গুলি এমন ভাবে প্রচারে তুলে ধরা হচ্ছে, যাতে তা নিয়ে আলোচনা-বিতর্ক হয় এবং মোদী তথা বিজেপিকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যায়। সে জন্য কংগ্রেসের শীর্ষ নেতারা সরাসরি এই বিতর্কে না জড়িয়ে দলের নিচু তলার নেতাদের ঠেলে দিচ্ছেন বলেও অভিযোগ বিজেপির।

পুরনো খবর:


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.