অশ্বিনকে টিপস কোচ ও কিংবদন্তি অফ স্পিনারের
অ্যাকশন শোধরাতে বলছেন সুনীল,
প্রসন্ন চান এখনই মানসিকতায় বদল
ক দিকে তাঁর পুরনো রোগ সারানোর দাওয়াই দিচ্ছেন ছোটবেলার কোচ। অন্য দিকে উইকেটের খিদে বাড়ানোর উপদেশ কিংবদন্তি অফস্পিনার এরাপল্লি প্রসন্নর। দিনের পর দিন রবিচন্দ্রন অশ্বিনের ব্যর্থতা নিয়ে যাঁরা একই সঙ্গে হতাশ এবং ক্ষুব্ধ।
গত ডিসেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে পা রাখার পর থেকে যে আটটি এক দিনের আন্তর্জাতিক ও একটি টেস্ট খেলেছেন অশ্বিন, তাতে সব মিলিয়ে দু’টি উইকেট পেয়েছেন। ভারতীয় দলের সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য অফস্পিনারের এই বেহাল অবস্থা দেখে চিন্তায় ভারতীয় ক্রিকেট মহল। অশ্বিনের এই হাল দেখে প্রসন্ন অবশ্য অবাক নন। তাঁর বক্তব্য, “এটাই হওয়ার ছিল। অশ্বিনকে নিয়ে আপনারা যতটা লাফালাফি করেন, ও ততটা প্রতিভাবান নয়। দেশের মাটিতে দুর্বল প্রতিপক্ষ ও ঘূর্ণি উইকেট ছাড়া যে ও অচল, তার প্রমাণ তো হাতেনাতেই পাওয়া যাচ্ছে।”
অশ্বিনের ছোটবেলার স্পিন কোচ সুনীল সুব্রহ্মন্যমের বক্তব্য, পুরনো রোগটা ফিরে এসেই ভোগাচ্ছে অশ্বিনকে। চেন্নাই থেকে ফোনে বললেন, “কী করে পুরনো রোগটা ফিরে এল জানি না। এটা সারানোর জন্য তো আমরা একসঙ্গে প্রচুর খেটেছি। গত বছর শুরু থেকে সমস্যাটা চলেও গিয়েছিল। এখন মনে হচ্ছে অন্য কারও টিপস নিয়েই বোলিং অ্যাকশনে বদল এনেছে অশ্বিন।”
কিন্তু রোগটা কী?
প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ২৮৫ উইকেট পাওয়া তামিলনাড়ুর প্রাক্তন বাঁহাতি স্পিনার সুনীলের ব্যাখ্যা, “বল ডেলিভারির সময় ও শরীরকে কাজে লাগাচ্ছে না, শুধু কাঁধ ও হাতের উপর নির্ভর করছে। ডেলিভারির ঠিক আগে শরীর থেকে কাঁধে শক্তি সঞ্চালন করতে না পারলে উইকেট পাবে না ও।” আরও বিস্তারিত ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে সুনীল বলেন, “ডেলিভারির সময় ডান পা স্টাম্পের সমান্তরাল থাকা উচিত। দু’ পায়ের মধ্যে দূরত্বটা কাঁধের দৈর্ঘের সমান হওয়া দরকার। এই অবস্থায় অশ্বিন যদি শরীর থেকে কাঁধে শক্তি সঞ্চালিত করে ডেলিভারি করে, তা হলে বলের গতিপথে ভ্যারিয়েশন আসবে এবং তখনই বল শূন্যে থাকা অবস্থায় ব্যাটসম্যানের বিট হওয়ার সম্ভাবনা থাকবে।”
শরীর থেকে শক্তি সঞ্চালন না করলে সমস্যা কী?
৪৬ বছর বয়সি সুনীলের ব্যাখ্যা, “সে ক্ষেত্রে বলের গতিপথে কোনও ভ্যারিয়েশন থাকছে না, বলে ‘লুপ’ থাকছে না। একেবারে ফ্ল্যাট হয়ে যাচ্ছে এবং ব্যাটসম্যানের পক্ষে বলটা ‘জাজ’ করা খুব সোজা হয়ে যাচ্ছে।”
অশ্বিনের সমস্যার কথা তুলে ধরা গেল প্রসন্নর কাছে। যা শুনে বেঙ্গালুরু থেকে প্রসন্ন বলেন, “সুনীল ওকে নিয়ে যেহেতু কাজ করেছে, তাই ও হয়তো এতটা গভীরে গিয়ে বিশ্লেষণ করতে পারছে। আমি এতটা খুঁটিয়ে দেখিনি, বলতে পারব না। তবে ওর বোলিংয়ে যে আগ্রাসন বেশ কম, তা বোঝাই যাচ্ছে। সবচেয়ে বড় কথা, পিচের সাহায্য পাচ্ছে না বলে ওর উইকেট নেওয়ার খিদেটাই চলে গিয়েছে। ওর রান আটকানোর প্রবণতা বরং বেশি। ব্যাটসম্যানদের মনে ওকে নিয়ে কোনও ভয়ই দেখছি না। মনে রাখবেন, আমি, বেদী, চন্দ্ররা কিন্তু উইকেট কেমন, তার তোয়াক্কা না করেই বিদেশে ভারতকে জিতিয়েছি। সঠিক টেকনিকের জন্যই তা পারতাম আমরা। এলবিডব্লু করেই এরা যা লাফায়, তাতে অবাক হয়ে যাই। ব্যাটসম্যানকে বোল্ড না করতে পারলে বোলারের কৃতিত্ব কোথায়?”
অশ্বিনের রাউন্ড দ্য উইকেট বোলিং দেখে কিংবদন্তি স্পিনারের এই ধারণা আরও দৃঢ় হয়েছে। বললেন, “ও ডানহাতি ব্যাটসম্যানের বিরুদ্ধে রাউন্ড দ্য উইকেট বল করছে! ফলে এলবিডব্লিউয়ের ছিঁটেফোটা সম্ভাবনাও থাকছে না। তবু এ ভাবেও ব্যাটসম্যানকে বোল্ড করা যায়। যদি কোনাকুনি বল করে অফ স্টাম্পে ফেলে বল ভিতরে ঢোকানো যায়। সেটাও তো পারছে না অশ্বিন। রান বাঁচানোটাই যদি আসল ব্যাপার হয়, তা হলে হরভজনই ভাল। শূন্যে ওর বলে গতি বেশি। ফ্ল্যাটারও দিতে পারে ভাল।”
টেস্ট সিরিজের টোটকা
ওয়ান ডে সিরিজে হারতে হয়েছে ০-৪। বিদেশে ভারত শেষ টেস্ট জিতেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ২০১১-র জুন। আগামী ৬ ফেব্রুয়ারি থেকে শুরু হচ্ছে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ। তার আগে মহেন্দ্র সিংহ ধোনি-ডানকান ফ্লেচারের হাতে সমস্যা অনেক, সমাধান কম। টেস্ট সিরিজের জন্য কী হতে পারে গেমপ্ল্যান? তিন প্রাক্তন ক্রিকেট তারকার টোটকা...
রিজার্ভ বেঞ্চে যারা বসে আছে তাদের সুযোগ দিতে হবে। আগেও দেখা গিয়েছে, ভারতীয় দলটা মাঝে মাঝে একটা ক্লাবের মতো হয়ে যায়। যেখানে বহিরাগতদের মোটেই স্বাগত জানানো হয় না। বার বার যারা ব্যর্থ হচ্ছে, তাদের টানা সুযোগ দেওয়ার মানে হল রিজার্ভ বেঞ্চের প্লেয়ারদের উপর কারও কোনও ভরসা নেই। আমি এখনও বুঝে উঠতে পারছি না অমিত মিশ্রকে কেন একটা ম্যাচও খেলানো হল না।
সুনীল গাওস্কর
টিমের মধ্যে ইতিবাচক মনোভাবটা ফিরিয়ে আনতেই হবে ধোনিদের। মাঠে তরতাজা ক্রিকেটার নামাতে হবে। ধোনিকে দেখে মনে হয়েছে ও ইশান্ত শর্মার উপর বেশি ভরসা করে এসেছিল। কিন্তু প্রথমে ইশান্ত, তারপরে স্পিনাররা ব্যর্থ হওয়ায় সমস্যায় পড়ে গিয়েছে। উইকেট তুলতে গেলে ধোনিকে কিন্তু এখন ঝুঁকি নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। নিউজিল্যান্ড যদি টেস্ট পিচ একটু গতিশীল করে, তা হলে কিন্তু ম্যাকালামদের হাতে পেসার আছে ভারতীয় ব্যাটিংকে সমস্যায় ফেলার। পিচকে ওরা ভাল কাজে লাগাবে।
মার্টিন ক্রো
ধোনির এই টিমে নতুন বলে আক্রমণ শুরু করুক জাহির খান এবং মহম্মদ শামি। আমি আশা করছি, নিউজিল্যান্ড টেস্ট সিরিজের জন্যও সিমিং উইকেটই করবে। সে ধরনের উইকেটে কিন্তু জাহির বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে। আর শামিও বলটাকে ভাল মুভ করাতে পারে।
ক্রিস কেয়ার্নস
এর জন্যও শরীরের শক্তিকে কাজে না লাগানোর সমস্যাকেই দায়ী করছেন সুনীল। তাঁর মতে, “রাউন্ড দ্য উইকেট বল করার সময় বেশির ভাগ বল ল্যান্ড করছে অফ ও মিডল স্টাম্পের মাঝামাঝি, তাও ফ্ল্যাট। এ ভাবে উইকেট পাওয়া তো দূরের কথা, রানও আটকানো সম্ভব নয়। ওকে কোনাকুনি অফ স্টাম্পের বাইরে বল ফেলতে হবে।” এই সমস্যা দূর করার জন্য কোচের সঙ্গেই পরামর্শ করা উচিত অশ্বিনের, মনে করেন প্রসন্ন। কিন্তু এখনও পর্যন্ত নিউজিল্যান্ডে তাঁর ছাত্রের কাছ থেকে কোনও ফোন বা ই-মেল আসেনি সুনীলের কাছে। গলায় অভিমানের সুর নিয়েই বললেন, “গত দু’মাস আমার সঙ্গে কোনও কথা হয়নি ওর।”

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.