এ বার বিজেপি। রাজনীতির প্রচার কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না বইমেলার!
রবিবারও বইমেলায় দেখা যায় নরেন্দ্র মোদির মুখোশ পরা পঞ্চাশ-ষাট জনের মিছিল। ও দিকে গিল্ড হাউসের সামনে চলছে ‘আপ’-এর প্রচারপত্র বিলি। দু’টি ক্ষেত্রেই অবশ্য তৎপর হয়েছে পাবলিশার্স অ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ড। পুলিশ ‘আপ’-এর লোকদের নিয়ে যায় গিল্ড অফিসে। সেখানে তাঁদের প্রচারপত্র বিলি না করার শর্তে ছেড়ে দেওয়া হয়। ও দিকে সাদা পোশাকের পুলিশ মুখোশ খুলে মোদির সমর্থকদেরও বইমেলার মাঠ থেকে বার করে দেয়।
এই প্রসঙ্গে গিল্ডের সাধারণ সম্পাদক ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায় বলেন, “বইমেলা রাজনীতির আখড়া নয়। এখানে দলীয় রাজনীতির প্রচার বরদাস্ত করা হবে না। দলীয় মুখপত্রের স্টলে দলীয় পুস্তিকা, সংবাদপত্র বিক্রি করা যাবে। যা কিছু করতে হবে বই-পত্রিকার মাধ্যমেই। সরাসরি দলীয় রাজনীতির প্রচার চলবে না।”
|
বইপ্রকাশ অনুষ্ঠানে অর্পিতা ঘোষ, দেবেশ চট্টোপাধ্যায়, ব্রাত্য বসু
এবং অজয় চক্রবর্তী।
রবিবার, কলকাতা বইমেলায়। ছবি: শৌভিক দে। |
দলীয় মুখপত্রের স্টল হিসেবে এ বার সম্ভবত সবচেয়ে নজর কেড়েছে তৃণমূলের দলীয় মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’র একতারার আদলে তৈরি বিশাল মণ্ডপ। জানা গিয়েছে এই ভাবনাটি স্বয়ং দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। মণ্ডপের সামনে বিশাল দু’টি বাউলের মূর্তির পাশে আজ সন্ধে থেকেই বাউল গানের আসর বসে। তার সামনে দাঁড়িয়ে গান শোনেন বহু মানুষ। এমনকী মেলার প্রায় শেষের মুখেও প্রচুর মানুষকে দাঁড়িয়ে গান শুনতে দেখা যায়। পাশাপাশি, কংগ্রেসের মুখপত্র ‘কংগ্রেস বার্তা’র মণ্ডপটি এ বার হয়েছে চ্যাপলিন সিনেমাহলের আদলে। মাল্টিপ্লেক্সের সময়ে রাজ্যের ঐতিহ্যবাহী সিনেমাহলগুলি হারিয়ে যাচ্ছে, সেটা মনে করাতেই এই উদ্যোগ, জানানো হয়েছে কংগ্রেসের তরফে।
রবিবার একটা সন্ধে নামতেই মেলার জনসমাগম তিন লক্ষ ছাড়িয়ে গিয়েছে, যা সর্বকালের রেকর্ড, দাবি ত্রিদিববাবুর। এই বিপুল ভিড়ে বেশ কিছু অসুবিধাও হয়েছে মানুষের। নেটওয়ার্ক জ্যাম হয়ে অধিকাংশ সময় মোবাইলে কথা শোনা যাচ্ছিল না। অনেক স্টলে কাজ করছিল না ক্রেডিট ও ডেবিট কার্ড সোয়াইপ মেশিনগুলিও, জানিয়েছেন তিনি।
রবিবারও বেশ কয়েকটি বই প্রকাশিত হয় বইমেলায়। তার মধ্যে আছে চিকিৎসক মৌলিমাধব ঘটকের ‘স্ট্রোক: প্রতিরোধ ও রিহ্যাব’, চয়নিকা চক্রবর্তীর ‘দক্ষিণ আফ্রিকার জার্নাল’, সদ্যপ্রয়াত নাট্যব্যক্তিত্ব শ্যামল ঘোষের আত্মজীবনী ‘স্মৃতি, সত্তা, নাট্য’। এস বি আই অডিটোরিয়ামে শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর ‘আরও দুটি নাটক’ ও ‘যে কথা বলোনি আগে এ বছর সেই কথা বলো’ বই দুটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেন অজয় চক্রবর্তী। ব্রাত্য প্রকাশ করেন অর্পিতা ঘোষের ‘আনাচ-কানাচ’ ও নাট্যস্বজনের মুখপত্র ‘বাকি ইতিহাস’-এর।
|