আর্মান্দোর ইস্টবেঙ্গল নিয়ে আশঙ্কা কাটছে না

ইস্টবেঙ্গল: ২ (লেন, চিডি)
গেলাং: ০
ন’বছর আগে শ্রীলঙ্কার রিনাওন স্পোর্টস ক্লাবকে নয় গোলে হারিয়েছিল সুব্রত ভট্টাচার্যের মোহনবাগান।
আই এফ এ শিল্ডের ইতিহাসে এটাই বিদেশি দলের বিরুদ্ধে কলকাতার কোনও দলের সর্বাধিক গোলে জয়।
এ বারের শিল্ডে খেলতে আসা সিঙ্গাপুরের গেলাং ইন্টারন্যাশনাল টিমটা কি তার চেয়েও খারাপ?
শনিবার বিকেলে আর্মান্দো কোলাসোর দলের কাছে গেলাংয়ের হামাগুড়ি দেওয়া দেখে মনে হচ্ছিল, হলেও হতে পারে!
হয়তো ক্লান্তি বা প্রস্তুতির অভাবের জন্য টিমটার এই দুর্দশা। কিন্তু নোটবই দেখাচ্ছে, সুব্রত-র দলের সেই অনন্য কৃতিত্বকে শনিবার ছাপিয়েই যেতে পারত আর্মান্দোর ইস্টবেঙ্গল। ফল কী হতে পারত? আর্মান্দো সাংবাদিক সম্মেলনে আসেননি। তাঁর সহকারী রঞ্জন চৌধুরী কিন্তু বলে গেলেন, “পাঁচ-ছয় গোল হতেই পারত।” কোচিং স্টাফ বলে রঞ্জন সংযত হয়তো।
ম্যাচের পর ড্রেসিংরুমে ফেরার পথে চিডি-মোগারা কিন্তু হা-হুতাশ করছিলেন, “দশ গোলে জিততে পারতাম ম্যাচটা। কী যে হল আমাদের! নিজেদের দোষেই সহজ সুযোগগুলো নষ্ট করলাম।” ম্যাচটা ১০-০ হয়নি। তবে চিডিরা ২-০ জেতায় অন্তত সামান্য হলেও মুখ রক্ষা হয়েছে উদ্যোক্তা আই এফ এ-র। আরও বিশ্রী ফল হলে সবাই বলত, এত খরচ করে বিদেশি দল আনার মানে কী? ভবানীপুরকে নিলেই চলত!

মরিয়া মোগা। শনিবার যুবভারতীতে। ছবি: উৎপল সরকার।
গেলাংয়ের এ দিনের খেলা দেখে অন্তত মনে হচ্ছিল, পাড়ার গলিতে খেলা কোনও টিমকে ধরে আনা হয়েছে। জনা তিনেক ফুটবলার ছাড়া কেউই পাতে দেওয়ার যোগ্য নয়। নিজেদের মধ্যে কোনও বোঝাপড়া তো নেই-ই, ফুটবলাররাও চূড়ান্ত আনফিট। চূড়ান্ত অগোছালো মনে হল সিঙ্গাপুরের টিমকে। দলের কোচ কানন সাংবাদিকদের সামনে এসে সাফাই গাইলেন, “টিমটা নতুন। মরসুমে এটাই আমাদের প্রথম ম্যাচ। প্রস্তুতি টুর্নামেন্ট খেলতে এসেছি। এখনও টিমটা তৈরি হয়নি।”
সেই গেলাংয়ের বিরুদ্ধে খেলতে নেমেও তো কাঠগড়ায় উঠেছেন চিডি-মোগারা। শিল্ডকে গুরুত্ব না দেওয়া ইস্টবেঙ্গলের কোচ আর্মান্দো ম্যাচের পর পিঠ চাপড়ে দিয়েছেন ফুটবলারদের। কিন্তু গ্যালারির দর্শক এবং কর্তারা গোল মিসের প্রদর্শনী দেখে চূড়ান্ত হতাশ। টিম কার্যত সেমিফাইনালে পৌঁছে গেলেও তাই কোনও উচ্ছ্বাস নেই কোথাও।
ঘটনা হল, চিডি-মোগা-সুয়োকা-ডিকারা যে ভাবে একের পর এক সহজতম গোলের সুযোগ নষ্ট করেছেন তা অপরাধ। গেলাং নয় অপ্রস্তুত দল, ভাল দলের বিরুদ্ধে এত সুযোগ কিন্তু আসবে না। যা সামান্য আসবে সেটাই কাজে লাগাতে হবে জিততে হলে। তখন কী হবে সেই আশঙ্কাই যুবভারতীর আনাচে কানাচে ধাক্কা খেল এ দিন।
আর্মান্দোর টিম ‘গোল-কানা’ ছিল বলেই ইস্টবেঙ্গলকে জেতার জন্য অপেক্ষা করতে হল আশি মিনিট পর্যন্ত। তুলুঙ্গার বদলে ছটফটে লেনকে নামানোর পরই তো এগিয়ে গেল ইস্টবেঙ্গল। তা-ও গেলাংয়ের এক ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে দিক বদল করে গোলে ঢুকল বল। অসংখ্য গোল মিসের অপরাধ চিডি কিছুটা খণ্ডন করলেন অবশ্য ইনজুরি টাইমে। ম্যাচ ২-০ করে।
আর্মান্দো শুরু করেছিলেন ৪-৪-২ দিয়ে। শিল্ডকে গুরুত্ব না দিলেও নামিয়ে দিয়েছিলেন তিন বিদেশি-সহ প্রায় পুরো টিমকে। জেতার জন্য। উল্টো দিকে গেলাং খেলছিল ৪-৩-২-১। সিঙ্গাপুরের টিমটা রক্ষণাত্মক খেলায় সুবিধা হয়ে গিয়েছিল ইস্টবেঙ্গলের। বিপক্ষের গোল বক্স পর্যন্ত অনায়াসেই উঠে আসছিলেন সুয়োকা-মোগারা! কিন্তু গেলাংয়ের গোলমুখে এসেই শেষ হয়ে যাচ্ছিল সব জারিজুরি। যা ম্যাচটাকে আরও বিবর্ণ করে দিল। কখনও উঁচু মানের হতে দিল না।
ইস্টবেঙ্গল কার্যত সেমিফাইনালে উঠল এ দিন। কিন্তু এর পর? যে ভাবে চিডি-মোগারা গোল নষ্ট করছেন তাতে কিন্তু অশনি সঙ্কেত দেখছেন অনেকেই। আর্মান্দোর লক্ষ্যের আই লিগে কিন্তু গেলাংয়ের চেয়ে অনেক ভাল দল আছে।

ইস্টবেঙ্গল: গুরপ্রীত, রবার্ট, অভিষেক, রাজু, অর্ণব, তুলুঙ্গা (লেন), সুয়োকা (লোবো), সুবোধ, ডিকা (অ্যালভিটো), মোগা, চিডি।

পুরনো খবর:




First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.