দেবযানী খোবরাগাড়েকে গ্রেফতার করে মোটেও ভুল করেনি মার্কিন প্রশাসন। তার কারণ সে সময় ভারতের ডেপুটি কনসাল জেনারেল পদে কাজ করলেও পূর্ণ কূটনৈতিক রক্ষাকবচ মোটেও ছিল না দেবযানীর। মার্কিন স্বরাষ্ট্র দফতরের এই বক্তব্যের সমর্থনে গত কাল নিউ ইয়র্কের এক আদালতে বেশ কিছু নথিপত্র পেশ করেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন সরকারি কৌঁসুলি প্রীত ভারারা।
গত ডিসেম্বরে ভিসা জালিয়াতি এবং পরিচারিকাকে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী বেতন না দেওয়ার অভিযোগে গ্রেফতার হন দেবযানী খোবরাগাড়ে। অভিযোগ, গ্রেফতারির পর তাঁকে নগ্ন করে তল্লাশি চালানো হয়। ভারতীয় কূটনীতিকের সঙ্গে এই অসৌজন্যমূলক ব্যবহারের জেরে কড়া প্রতিক্রিয়া জানায় নয়াদিল্লি। ভারত দাবি করে, নিউ ইয়র্কে ডেপুটি কনসাল পদে থাকার পাশাপাশি দেবযানী রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতীয় দূতাবাসের সঙ্গেও যুক্ত। তা-ই তাঁর পূর্ণ কূটনৈতিক রক্ষাকবচ আছে। বহু টানাটানির পরে ৯ জানুয়ারি ভারতে ফেরেন দেবযানী। তবে তাঁর বিরুদ্ধে মামলা চলছে। আমেরিকায় ফিরলে গ্রেফতার হতে পারেন তিনি।
১৪ জানুয়ারি দেবযানীর আইনজীবী ড্যানিয়েল আরশ্যাক তাঁর মক্কেলের বিরুদ্ধে যাবতীয় অভিযোগ খারিজ এবং গ্রেফতারি ও বন্দি-প্রত্যর্পণ পরোয়ানা বাতিলের আর্জি জানান। তাঁর যুক্তি ছিল, দেবযানীর পূর্ণ কূটনৈতিক রক্ষাকবচ থাকায় আমেরিকায় তাঁর বিরুদ্ধে কোনও মামলা চলতে পারে না। তার জবাবেই গত কাল আটটি নথি পেশ করেন সরকারি কৌঁসুলি।
তাতে মার্কিন সরকারের তরফে জানানো হয়েছে, যে সময় দেবযানীকে গ্রেফতার করা হয়, সে সময় ডেপুটি কনসাল হিসেবে তিনি আংশিক রক্ষাকবচ পেতেন। যার ফলে সরকারি কোনও কাজকর্মে গাফিলতি বা অন্যায়ের অভিযোগ উঠলে তাঁকে গ্রেফতার করার এক্তিয়ার ছিল না মার্কিন প্রশাসনের। কিন্তু পরিচারিকা হিসেবে সঙ্গীতা রিচার্ডকে নিয়োগ করা কোনও সরকারি পদক্ষেপ ছিল না। দ্বিতীয়ত, গ্রেফতারির বেশ কিছু দিন পরে দেবযানীকে রাষ্ট্রপুঞ্জে ভারতীয় দূতাবাসে বদলি করা হয়। তখন তিনি পূর্ণ রক্ষাকবচ পান। কিন্তু তার আগেই তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ করা হয়ে গিয়েছিল। কাজেই সেই অভিযোগের ভিত্তিতে দেবযানীর বিরুদ্ধে মামলা চালানোই যেতে পারে।
প্রীত ভারারা জানিয়েছেন, রাষ্ট্রপুঞ্জে খুব অল্প সময়ের জন্যই কর্মরত ছিলেন দেবযানী। কিন্তু সেই সময়ের পূর্ণ কূটনৈতিক রক্ষাকবচকে হাতিয়ার করে অভিযোগ এড়াতে চাইছেন ৩৯ বছরের এই ভারতীয় কূটনীতিক। |