৪০ বছরের কর্মজীবনে ‘বিশ্ব বোকা খুনি’-র হয়ে মামলা লড়ার অভিজ্ঞতা হল দুবাইয়ের এক আইনজীবীর। এক ভারতীয় মক্কেল সম্পর্কে এমন বিশেষণই প্রয়োগ করেছেন তিনি। বছর তিনেক আগে এক তরুণীকে খুনের অভিযোগে মামলা দায়ের হয়েছিল ওই ভারতীয় যুবকের বিরুদ্ধে। মামলা চলাকালীন সামনে আসে সেই খুনের পেছনে লুকিয়ে থাকা বোকামি, বা বলা ভাল বোকামির তালিকা।
আবু ধাবিতে এক জন সরকারি কর্মচারীর বাড়িতে রাঁধুনির কাজ করতেন ওই যুবক। আবর্জনা ফেলতে গিয়ে এক দিন আলাপ হয় কাছাকাছি অন্য এক বাড়ির তরুণী পরিচারিকার সঙ্গে। আলাপ গড়ায় ভাল লাগায়, ভালবাসায়। মালিকের অনুপস্থিতির সুযোগে ওই পরিচারিকা এক দিন বাড়িতেও ডাকেন যুবককে। যুবকের জবানবন্দি অনুযায়ী, “ছাদে বসে একটু ভাল সময় কাটানো ছাড়া আর কিছুই হয়নি আমাদের মধ্যে।”
কিন্তু দিন কয়েক পরেই তরুণী হঠাৎ দাবি করেন, ওই যুবকের সঙ্গে যৌন সম্পর্কের কারণে গর্ভবতী হয়ে পড়েছেন। তিনি যুবকের বিরুদ্ধে ধর্ষণের নালিশ করবেন। মিথ্যে অভিযোগ শুনে উত্তেজিত হয়ে পড়েন ওই যুবক। পড়ে থাকা একটি বড় পাথরের চাঁই তুলে বার তিনেক মেরে বসেন তরুণীর মাথায়। ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয় তরুণীর। এর পর আরও ভয় পেয়ে গিয়ে বাড়ির ভিতরে বাথ টাবের জলে ডুবিয়ে দেন তরুণীর দেহ। সম্বিৎ ফিরতেই মনে পড়ে, খুনের প্রমাণ লোপাট করতে হবে তো! কিছু না ভেবে চিন্তে গোটা বাড়িতেই আগুন লাগিয়ে দেন তিনি।
এত কিছুর পরেও অবশ্য শেষ রক্ষা হয়নি। বাড়ি পুড়ে ছাই হয়ে গেলেও অবিকৃত থেকে যায় বাথ টাবের জলে ডোবানো তরুণীর দেহ।
সব শেষে আর কোনও রাস্তা না দেখে মালিকের কাছে গিয়ে সব কথা স্বীকার করেন তিনি। তাঁকে দেশ ছেড়ে পালাতে সাহায্য করার অনুরোধও করেন। বলাই বাহুল্য, রাঁধুনি যতটা বোকা ছিলেন, ততটা সহৃদয় ছিলেন না মালিক। তাই অবধারিত ভাবেই গ্রেফতার হন যুবক। শুরু হয় মামলা।
কিন্তু নিহত তরুণীর পরিবারের হদিস না মেলায় তিন বছর ধরে চলে মামলার শুনানি। অবশেষে শনিবার রায় ঘোষণা করল আদালত। মৃত্যুদণ্ড মিলল যুবকের। |