নারী পাচার রুখতে মুম্বইয়ের ধাঁচে এনজিওগুলির হাতে মোবাইল ফোনের কললিস্ট বের করার ও টাওয়ার লোকেশন চিহ্নিত করার ক্ষমতা দেওয়ার দাবি উঠল। শুক্রবার শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদ সভাকক্ষে একটি সেমিনারে এই দাবি তোলেন বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংস্থার সদস্যরা। এ ছাড়া জলপাইগুড়ি জেলায় অবিলম্বে অন্তত একটি হোম তৈরির প্রয়োজনীয়তা জানানো হয় স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলির পক্ষ থেকে। দার্জিলিংয়ের জেলাশাসক পুনীত যাদব সমস্ত দাবিগুলি নিয়ে সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান।
রাজ্য সরকার ও রাজ্য মহিলা কমিশনের যৌথ উদ্যোগে সীমান্ত জেলাগুলিতে নারী পাচার রুখতে এই সেমিনারে আয়োজন করা হয়েছিল। ছিলেন দার্জিলিংয়ের জেলা শাসক পুনীত যাদব, রাজ্য মহিলা কমিশনের সদস্য জ্যোৎস্না অগ্রবাল, নারী পাচার নিয়ে কাজ করা বিভিন্ন এনজিও এবং সরকারি আধিকারিক থেকে পুলিশ আধিকারিকরা। কাঞ্চনজঙ্ঘা উদ্ধার কেন্দ্রের সদস্যা রঙ্গ সোরিয়া বলেন, “কোনও মেয়ে পাচার হওয়ার খবর পেয়ে থানা-পুলিশ করতে অনেকটি সময় চলে যায়। তার মধ্যে অপরাধী গা ঢাকা দিতে সক্ষম হয় অনেক সময়ই। এনজিওদের হাতে মোবাইল ফোন ট্র্যাক করার ক্ষমতা থাকলে খুব দ্রুত সমস্যার সমাধান সম্ভব হবে। মুম্বইতে এ ধরনের ক্ষমতা দেওয়া আছে এনজিওগুলিকে।” দাবি ওঠে হোমেরও। দার্জিলিং জেলার চা বলয়ে নারী পাচার ক্রমাগত ভয়াবহ আকার ধারণ করছে বলে জানান দার্জিলিং জেলা লিগাল এড ফোরামের সম্পাদক অমিত সরকার। তিনি বলেন, “উদ্ধার হওয়া মেয়েদের রাখার সমস্যায় অনেক সময় উদ্ধার কাজ ব্যহত হয়।”
এ দিন সেমিনারের শেষে জেলাশাসক বলেন, “পাচার বিরোধী প্রচারে স্কুলগুলিতে গিয়ে প্রচারের উপর জোর দেওয়া হবে। বিশেষ করে অডিও-ভিস্যুয়াল মাধ্যমে এর প্রচার বিশেষ কার্যকর হতে পারে।” এছাড়া প্রতিটি গ্রামে, ব্লকে, মহকুমা বা জেলায় আলাদা করে কমিটি তৈরি করে দেওয়ার ব্যপারে চিন্তা ভাবনা চলছে বলে জেলা শাসক জানান। এ বিষয়ে শীঘ্রই তিনি রাজ্য সমাজ কল্যাণ দফতরের সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান তিনি। জ্যোৎস্না অগ্রবাল বলেন, “সরকারের উদ্যোগে প্রতিটি সীমান্ত সংলগ্ন এলাকায় এধরণের সচেতনতা সেমিনার হচ্ছে।”
গত ১০ বছরে প্রায় তিনশো শিশু ও মহিলা পাচারের শিকার হয়েছেন দার্জিলিং ও সংলগ্ন জলপাইগুড়ি থেকে। এর ৯৯ শতাংশই চা বলয়ের বাসিন্দা। এ ছাড়া নেপালকে ব্যবহার করে জাল পাসপোর্ট তৈরি করে মহিলাদের বিদেশে পাচার করা হচ্ছে। যার ফলে তাঁদের হদিশই করা যাচ্ছে না বলে সেমিনারে জানানো হয়েছে। |