|
|
|
|
এ বার লগ্নি-জট |
কাটাতে রাজ্যে নজরদার কমিটি
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
থমকে থাকা লগ্নি প্রকল্পের জট ছাড়াতে কেন্দ্রের ধাঁচে বিশেষ নজরদারি গোষ্ঠী গড়বে রাজ্য সরকার। শুক্রবার রাজ্যের মুখ্যসচিব ও উচ্চপদস্থ আমলাদের সঙ্গে বৈঠকের পরে এ কথা জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সচিবালয়ের অতিরিক্ত সচিব তথা প্রকল্প নজরদারি গোষ্ঠীর চেয়ারম্যান অনিল স্বরূপ।
দেশ জুড়ে ১০০০ কোটি টাকার বেশি যে সব লগ্নি প্রকল্প থমকে রয়েছে সেগুলির জট কাটাতে কেন্দ্র ইতিমধ্যেই ক্যাবিনেট সচিবালয়ের অধীনে বিশেষ নজরদারি গোষ্ঠী তৈরি করেছে। থমকে থাকা প্রকল্পগুলির প্রায় ৭০%-ই বেসরকারি প্রকল্প। কেন্দ্র চাইছে থমকে থাকা ১০০০ কোটি টাকার কম লগ্নি প্রকল্পের জট কাটাতে রাজ্যগুলিও প্রশাসনিক স্তরে নজরদারি গোষ্ঠী তৈরি করুক। আটটি রাজ্য আগেই তাতে সায় দিয়েছে। পশ্চিমবঙ্গ সেই তালিকায় নবম। রাজ্যে কোন প্রকল্প কেন থমকে রয়েছে, তার খুঁটিনাটি খতিয়ে দেখে সেই জট কাটানোর চেষ্টা করবে তারা। কেন্দ্রের তরফে কিছু করার থাকলে তাঁরাও তা সমাধানের চেষ্টা করবেন।
বণিক সভা সিআইআই-এর সভায় এ দিন কেন্দ্রীয় নজরদারি গোষ্ঠীর কর্মকাণ্ড ব্যাখ্যা করেন অনিল। এর আগে নবান্নে রাজ্যের মুখ্যসচিব সঞ্জয় মিত্র ও অন্যদের সঙ্গেও বৈঠক করেন তিনি। সভার পরে অনিল জানান, এ রাজ্যে ১০০০ কোটি টাকার বেশি আটটি বড় প্রকল্প নিয়ে ওই বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। তাঁর দাবি, মূলত জমি অধিগ্রহণের সমস্যার জন্যই এ রাজ্যে অধিকাংশ প্রকল্প আটকে রয়েছে। ক’টি প্রকল্প অবশ্য পরিবেশ বিধির জন্যও সমস্যায় পড়েছে। |
|
সিআইআইয়ের সভা। শুক্রবার। —নিজস্ব চিত্র। |
অনিল জানিয়েছেন, যে সব প্রকল্পের জট নিয়ে এ দিনের বৈঠকে তাঁদের আলোচনা হয়, তার মধ্যে রয়েছে সেবক-রংপুর রেল প্রকল্প, নোয়াপাড়া-বিমানবন্দর-বারাসতের মেট্রোরেল প্রকল্প, ফরাক্কা-রায়গঞ্জ ও বহরমপুর-ফরাক্কার জাতীয় সড়ক প্রকল্প, ইন্ডিয়ান অয়েলের পারাদ্বীপ-হলদিয়া-দুর্গাপুর গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্প, একটি বিদ্যুৎ সংবহন প্রকল্প ইত্যাদি। এগুলি অবশ্য সবই ১০০০ কোটি টাকার বেশি লগ্নি-প্রকল্প। তবে ওই সব প্রকল্পের মোট লগ্নির অঙ্ক সম্পর্কে নির্দিষ্ট তথ্য দিতে পারেননি তিনি। তবে বলেন, “থমকে থাকা প্রকল্পের সংখ্যা আরও বেশি হলে আমি অবাক হব না।”
প্রসঙ্গত, রাজ্যে শিল্পায়নের চাকা দ্রুত গড়াতে শিল্প দফতরের অধীনে বিশেষ টাস্ক ফোর্স গড়ার কথা জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এ ছাড়া বড় বড় প্রকল্পের দ্রুত রূপায়নের জন্য কর্পোরেট কায়দায় প্রকল্প পিছু এক জন করে শিল্প দফতরের আধিকারিককে রিলেশনশিপ ম্যানেজার হিসেবে নিয়োগ করার কথাও জানিয়েছেন তিনি।
সিআইআই-এর পূর্বাঞ্চলের প্রাক্তন চেয়ারম্যান রাজন ভাসওয়ানির দাবি, লগ্নি প্রকল্প বাস্তবায়নে দেরি হলে প্রকল্পের খরচ ২০% পর্যন্ত বেড়ে যায়। সে ক্ষেত্রে গোটা প্রকল্পটিই বাণিজ্যিক ভাবে অ-লাভজনক হয়ে পড়তে পারে।
কেন্দ্রীয় বিশেষ নজরদারি গোষ্ঠীর আওতায় ৪১৯টি থমকে থাকা প্রকল্প ছিল। ক্যাবিনেট সচিবালয়ের ওয়েবসাইটেই থমকে থাকা প্রকল্পগুলি নথিভুক্তির জন্য বিশেষ পোর্টাল চালু করেছে ওই কমিটি। অনিল জানান, ওই ৪১৯টি লগ্নি প্রকল্পের মোট লগ্নির অঙ্ক ২০ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি। এখনও পর্যন্ত ৪.৮ লক্ষ কোটি টাকার ১৩৭টি লগ্নি প্রকল্পের জট কেটেছে। এ ছাড়া ২০টি প্রকল্প আইনি জটিলতায় আটকে রয়েছে। কয়েকটি স্পর্শকাতর প্রকল্প ক্যাবিনেটের লগ্নি সংক্রান্ত কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে। |
|
|
|
|
|