কাল মেদিনীপুরে বুদ্ধ, ঘুরে দাঁড়ানোর আশা
ধিপত্য অনেক দিনই গিয়েছে। গত পঞ্চায়েত-পুরসভা নির্বাচনেও পযুর্দস্ত হয়েছে দল। ধসে গিয়েছে একের পর এক দুর্গ। এ বার লোকসভার লড়াই। পরিবর্তিত এই পরিস্থিতিতেই কাল, রবিবার মেদিনীপুর শহরে সমাবেশ করতে চলেছে সিপিএম। প্রধান বক্তা প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য।
পশ্চিম মেদিনীপুরে সিপিএমের শেষ সমাবেশ হয়েছিল ২০১২ সালের ১ ফেব্রুয়ারি। সে বারও বুদ্ধবাবুই ছিলেন প্রধান বক্তা। সিপিএমের জেলা সম্মেলন উপলক্ষে ওই সভার আয়োজন করা হয়েছিল। গত দু’-আড়াই বছর ধরে সিপিএম বারবার প্রচার করেছে, জঙ্গলমহলের এই নজিরবিহীন সন্ত্রাস ও প্রতিকূলতার মধ্যেও মানুষ ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। ভয়-ভীতি-আড়ষ্টতা কাটিয়ে মানুষ পথে নামছেন। সিপিএম নেতৃত্বের দাবি, মানুষ যে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে, মেদিনীপুরের সমাবেশ তারই প্রমাণ দেবে।

শহরের কলেজ মোড়ে সিপিএমের তোড়ন। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল।
সমাবেশের প্রস্তুতি এখন চূড়ান্ত পর্বে। কলেজ মাঠে মঞ্চ বাঁধা হয়েছে। শহর জুড়ে পতাকা-ফেস্টুন লাগানো হয়েছে। তৈরি হয়েছে তোরণ। সিপিএম সূত্রের খবর, রবিবার ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষের জমায়েত হবে। সমাবেশ হবে জেলা বামফ্রন্টের ব্যানারে। সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক সন্তোষ রাণা শুক্রবার বলেন, “এখনও বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রতিকূল পরিস্থিতি। তাও আমাদের আশা, সমাবেশে প্রচুর সংখ্যক মানুষ আসবেন। প্রচারে ভাল সাড়া মিলেছে।” সিপিএমের জেলা সম্পাদক দীপক সরকারেরও দাবি, “মেদিনীপুরের সমাবেশ সফল হবে।”
গত দু’বছরে জেলার কোথাও বড় সমাবেশ করেনি সিপিএম। পঞ্চায়েত এবং পুরসভা নির্বাচনের প্রচারেও বড় সভা করার ঝুঁকি এড়ানো হয়েছে। তৃণমূল যেখানে মুকুল রায়, সুব্রত বক্সী, শুভেন্দু অধিকারী, ফিরহাদ হাকিমের মতো শীর্ষ নেতাদের প্রচারে এনে উত্তাপ চড়িয়েছে, সেখানে সিপিএমের প্রচার ছিল দৃশ্যতই সাদামাটা। প্রচার সারা হয়েছে জেলা নেতাদের দিয়েই। দলীয় সূত্রের ব্যাখ্যা, পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এটা দলের রণকৌশল। সমাবেশ হলে কর্মী-সমর্থকেরা আসতেন। তবে, বাড়ি ফেরার পথে আক্রমণ হত। তবে এই গুটিয়ে থাকার মানসিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে সিপিএমের অন্দরেই। দলের একাংশ নেতা মনে করেন, তৃণমূলের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে প্রচারের উত্তাপ চড়ালে পঞ্চায়েত-পুরসভা নির্বাচনে দলের ফল ভাল হত। এই দুই নির্বাচনে খড়কুটোর মতো উড়ে গিয়েছে সিপিএম। পঞ্চায়েত ভোটে জেলা পরিষদের ৬৭টি আসনের মধ্যে মাত্র ২টি পেয়েছে সিপিএম। ২৯টি পঞ্চায়েত সমিতির মধ্যে একটিও দখলে আসেনি। ঝাড়গ্রাম পুরসভা নির্বাচনে ১৭টি আসনের মধ্যে মাত্র ১টি পেয়েছে সিপিআই। মেদিনীপুর পুরসভা নির্বাচনে ২৫টি আসনের মধ্যে বামজোটের প্রাপ্তি মাত্র ৫টি আসন।

মেদিনীপুর কলেজ মাঠে রবিবারের সভার প্রস্তুতি।—নিজস্ব চিত্র।
সিপিএম নিজেদের গুটিয়ে রাখলেও তৃণমূল কিন্তু লাগাতার প্রচার করে যাচ্ছে। গত আড়াই বছরে বেশ কয়েকবার পশ্চিম মেদিনীপুরে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রশাসনিক সভা করেছেন। কখনও সেই সভা হয়েছে ঝাড়গ্রামে, কখনও বেলপাহাড়িতে, কখনও বা লালগড়ে। মেদিনীপুরেও সভা হয়েছে। সেই সঙ্গে তৃণমূল নেতা-মন্ত্রীদের ঘনঘন কর্মসূচি তো রয়েছেই। তৃণমূলের জেলা কার্যকরী সভাপতি প্রদ্যোৎ ঘোষের কটাক্ষ, “সিপিএমের জনসমর্থন একেবারে তলানিতে গিয়ে ঠেকেছে। মানুষ ওদের কোনও কথা শুনছে না। তাই হয়তো ওদের সভার সংখ্যা কমে গিয়েছে। আর কর্মসূচি হলেও মেদিনীপুর শহরে, তার বাইরে নয়!” এ প্রসঙ্গে সিপিআইয়ের জেলা সম্পাদক সন্তোষবাবুর বক্তব্য, “প্রতিকূলতা মোকাবিলা করে আমাদের এগোতে হচ্ছে। জেলা বামফ্রন্ট মেদিনীপুরে সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। সেই মতো সমাবেশ হবে।” মেদিনীপুরের সমাবেশ থেকে বামফ্রন্ট আনুষ্ঠানিক ভাবে লোকসভার প্রচার শুরু করতে চলেছে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল। এই কর্মসূচি থেকে আরও কিছু বার্তা দেওয়া হতে পারে বলেও ফ্রন্ট সূত্রের খবর।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.