সেই সাপ জ্যান্ত, গোটা দুই আনত না, এরা সবাই জ্যান্ত নয়, আর গোটা দুই তো নয়ই। সব মিলিয়ে সংখ্যাটা প্রায় সাড়ে তিনশো।
ক্যালিফোর্নিয়ার শহরতলি সান্টা আনায় একটা ছোট সাদামাটা বাড়ি। মালিক উইলিয়াম বুচম্যান স্কুল শিক্ষক। মায়ের সঙ্গেই থাকতেন বছর তিপান্নর ওই ভদ্রলোক। ক’য়েক বছর আগে মারা যান তাঁর মা। এমনিতে নিরুপদ্রব, কিন্তু বাড়িটা থেকে এমন বিকট গন্ধ বেরোয় যে আশপাশের বাসিন্দাদের প্রাণ ওষ্ঠাগত। গন্ধের জ্বালা সইতে না পেরে শেষমেশ তাঁরাই খবর দেন পুলিশে। উদ্ধার হয় সাড়ে তিনশোটা অজগর। শুধু সাপই অবশ্য নয়, তার সঙ্গে ছিল ছোট-বড় নানা মাপের নানা জাতের সব ইঁদুর।
না জানি কীসের গন্ধ, তাই আগে থেকে মুখোশ পরে এসেছিলেন পুলিশের প্রাণী সংরক্ষণ বিভাগের কর্মীরা। “তার মধ্যেই নাকে যখন প্রথম গন্ধটা এসে লাগল মনে হচ্ছিল যেন এক সপ্তাহ ধরে স্নান করতে হবে” জানিয়েছেন তাঁদেরই এক জন। বাড়িটায় পাঁচটা শোওয়ার ঘর। প্রতিটারই মেঝে থেকে ছাদ পর্যন্ত ঠাসা ছোট ছোট প্লাস্টিকের পাত্র। আর তার মধ্যেই কিলবিল করছে অজগর। একটার পাত্রের উপর অন্যটা এমন ভাবে চেপে লাগানো যে সাপেদের বাইরে বেরনোর সম্ভাবনা নেই বললেই চলে। নাম ও প্রজাতি ধরে ধরে প্রত্যেকের জন্য তালিকাও তৈরি করে রেখেছিলেন উইলিয়াম।
কিন্তু ওই ছোট্ট জায়গায় থাকতে থাকতে মরে পচে গিয়েছে বেশ কয়েকটি অজগর। কয়েকটির শুধু হাড়গোড় অবশিষ্ট আছে, কিছু বা আবার সদ্য মৃত সেখানে ভনভন করছে মাছি। জ্যান্ত-মরা সাপ আর ইঁদুরদের দৌলতেই দুর্গন্ধ এত তীব্র।
পুলিশের দাবি, শিক্ষকতার পাশাপাশি উইলিয়াম সাপ প্রজননের ব্যবসাও চালাতেন। পোষ্যদের ঠিকমতো যত্নআত্তি না করার অভিযোগে গত কাল তাঁকে আটক করা হয়েছে। আদালতের বিচারাধীন বিষয় বলে মন্তব্য করতে রাজি হননি বুচম্যানও।
তবে আমেরিকা, কানাডার বাড়ি থেকে এ রকম সাপ উদ্ধার অবশ্য নতুন নয়। গত বছর কানাডার একটি বাড়ির ছাদ ভেঙে একটি অজগর এসে পড়েছিল দুই শিশুর উপর। অজগরের চাপেই মৃত্যু হয় তাদের। সেপ্টেম্বর মাসে নিউ ইয়র্কের এক পশু সুরক্ষা আধিকারিকের বাড়িতে মিলেছিল ৮৫০টি সাপ। সান্টা আনায় বুচম্যানের প্রতিবেশীদের এখন কেবল একটাই চিন্তা, সাপ থেকে তো আপাতত রেহাই মিলল, কিন্তু ওই গন্ধটা কবে যাবে! |