কেটে গিয়েছে ১১ বছর। আজও শেষ হয়নি জগদীশপুর বাস টার্মিনাসের কাজ। প্রকল্পটির ভবিষ্যৎ এখন বিশ বাঁও জলে বলে অভিযোগ। ফলে হাওড়া-হুগলির সীমানা জগদীশপুর থেকে সরাসরি কলকাতা বা সল্টলেক যাওয়া আজও কঠিন। তৎকালীন বাম সরকার থেকে বর্তমান সরকারসবাই শুধুই প্রতিশ্রুতি দিয়ে চলেছেন বলেই অভিযোগ বাসিন্দাদের। প্রশাসন ও রাজনৈতির নেতৃত্বের আশ্বাস, কাজ শেষ হবে। কিন্তু কবে? উত্তর নেই কারও।
যদিও পরিবহণমন্ত্রী মদন মিত্র বলেন, “বিষয়টি শুনেছি। ওখানে টার্মিনাসের কাজ শেষ করে তাড়াতাড়ি যাতে বাস পরিষেবা চালু করা যায় সে বিষয়ে পরিকল্পনা রয়েছে।” স্থানীয় বিধায়ক তৃণমূলের রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “বিষয়টি নিয়ে পরিবহণমন্ত্রীকে অনুরোধ করেছি। গ্রামের সঙ্গে শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতি করতে এই টার্মিনাস খুবই জরুরি।”
জগদীশপুর পঞ্চায়েত সূত্রের খবর, ২০০২-এ জগদীশপুর হাটের পাশে ডোমজুড় রোডের উপরে প্রায় এক বিঘা জমিতে বাস টার্মিনাস তৈরির কাজ শুরু করে বাম পরিচালিত হাওড়া জেলাপরিষদ। উদ্দেশ্য ছিল ব্যস্ত বেনারস রোড ও ডোমজুড় রোড থেকে যানজট কমানো এবং জগদীশপুর থেকে হাওড়া, ধর্মতলা এবং সল্টলেক পর্যন্ত সরকারি, বেসরকারি বাস চালানো। পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রথম পর্যায়ে প্রায় সাড়ে তিন লক্ষ টাকা খরচ করে বাস দাঁড়ানোর তিনটি চ্যানেল, যাত্রী প্রতীক্ষালয় তৈরি ও ভেপার লাগানোও হয়েছিল। দ্বিতীয় পর্যায়ে, বিশ্রামাগার, বাস টার্মিনাসের সঙ্গে ডোমজুড় রোড ও বেনারস রোডের সংযোগকারী ৩০ ফুটের রাস্তা তৈরির জন্য প্রায় পাঁচ লক্ষ টাকা বরাদ্দ হয়। কিন্তু রাস্তা তৈরির জমিতে মাছের বাজার বসত। মাছ-ব্যবসায়ীরা জমি ছাড়তে রাজি না হওয়ায় সেই কাজ হয়নি। ঠিকাদারেরা ইমারতি দ্রব্য নিয়ে চলে গিয়েছেন। তার পর থেকেই বন্ধ জগদীশপুরের বাস টার্মিনাসের কাজ। দীর্ঘ দিন পরে থাকার ফলে বাসের চ্যানেল, যাত্রী প্রতীক্ষালয় ভেঙেচুরে গিয়েছে। পুরো জায়াগাটি জঙ্গলে ভরে গিয়েছে। নির্দিষ্ট কোনও বাস টার্মিনাস না থাকায় বেনারস রোড ও ডোমজুড় রোডের উপরেই যত্রতত্র বাস দাঁড়াচ্ছে। ফলে তীব্র যানজট হচ্ছে। তা ছাড়া স্থানীয় বাসিন্দারা জানালেন, হাওড়া ও ধর্মতলা যাওয়ার জন্য দু’টি বেসরকারি রুটের হাতেগোনা কয়েকটি মাত্র বাস রয়েছে। সেগুলিও সব সময়ে পাওয়া যায় না। ধর্মতলা যেতে গেলে দু’বার বাস বদলাতে হয়।
তিরিশ ফুট রাস্তা তৈরির জন্য জমির যে সমস্যা ছিল তা ২০১০-এই মিটে গিয়েছে বলে দাবি জগদীশপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের সদস্য তথা পূর্ত সঞ্চালক তাপস মাইতি। তিনি বলেন, “ব্যবসায়ীদের জন্য বিকল্প জায়গার ব্যবস্থা করে দেওয়ার পরেই তাঁরা রাস্তার জন্য জমি ছেড়ে দিয়েছেন।” জগদীশপুর পঞ্চায়েতের প্রধান তৃণমূলের গোবিন্দ হাজরা জানান, ওই জমিটি পঞ্চায়েতের নামে রেজিস্ট্রিও করা হয়েছে। জেলা পরিষদকেও হস্তান্তর করা হয়েছে। |