হাওড়া পুর-এলাকায় রয়েছে ২২টি উদ্যান রয়েছে। অধিকাংশ উদ্যানেরই বেহাল অবস্থা। কারণ, বছরের বেশির ভাগ সময়ই উদ্যানে চলে বিয়েবাড়ি, শ্রাদ্ধের মতো নানা অনুষ্ঠান। এ নিয়ে হাওড়াবাসীর ক্ষোভ ক্রমেই বাড়ছে।
পুরসভা সূত্রে খবর, ঋষি বঙ্কিম উদ্যান, চিন্তামণি দে উদ্যান, বিজয়ানন্দ উদ্যান, চারুচন্দ্র সিংহ উদ্যানের মতো পুর-এলাকায় মোট ২২টি উদ্যান রয়েছে। পরিবেশকর্মী সুভাষ দত্ত জানান, একটি উদ্যানকে নূন্যতম তিনটি বিষয় মেনে চলতে হয়। প্রথমত, গোটা চত্বরে ঘাসের আচ্ছাদন থাকবে। দ্বিতীয়ত, চিরহরিৎ গাছ থাকবে। শেষটি, বড় পাতার গাছ থাকবে। এ ছাড়া কেয়ারটেকার, সাধারণ মানুষের বসার জায়গা থাকাও প্রয়োজন। হাওড়া পুরসভার অধিকাংশ উদ্যানেই তা নেই বলে অভিযোগ।
ঋষি বঙ্কিম উদ্যানে গিয়ে দেখা গেল কোনও বিয়ের তোড়জোড় চলছে। প্যান্ডেল তৈরি হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, এই উদ্যানে বছরভর অনুষ্ঠান লেগেই থাকে। পুরসভা কিছু বলে না। এই উদ্যানে সবুজের চিহ্ন নেই। চিন্তামণি দে উদ্যানে নেড়া মাঠে। বেলিলিয়াস লেনের উদ্যানেরও একই অবস্থা। তবে কয়েকটি গাছ রয়েছে। হাওড়া সিটিজেন ফোরামের প্রচার কমিটির আহ্বায়ক নিশিথ সরকার বলেন, “পুরসভায় তৃণমূলের বোর্ড আসার পরে বেশ কিছু ভালো কাজ হয়েছে। কিন্তু পার্কের কোনও সংষ্কার শুরু হয়নি। এ বিষয়েও পুরসভার খেয়াল করা উচিত।” |
চিন্তামণি দে উদ্যান। (ডান দিকে) বঙ্কিম উদ্যান। —নিজস্ব চিত্র। |
স্থানীয় বাসিন্দা প্রবীণ তন্ময় পাত্র বলেন, “আমার চিকিৎসক রোজ সকালে শুদ্ধ বাতাসে হাঁটার পরামর্শ দিয়েছেন। কিন্তু বাড়ির কাছের উদ্যানের বেহাল অবস্থা। এই বয়সে দূরে যাওয়াও সম্ভব নয়। নতুন মেয়র উদ্যানগুলির সংষ্কারের বিষয়টা একটু দেখুন।”
উদ্যানের ভিতরে অনুষ্ঠানের অনুমতি কারা দেন?
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক বাসিন্দা বলেন, “স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর সম্মতি নিয়েই অনুষ্ঠান হয়।” যদিও তাঁরা পুরসভার সঙ্গে যুক্ত নন। পুরসভা, দমকল ও বিদ্যুৎ বিভাগের ছাড়পত্র নেওয়া হয় না বলে অভিযোগ। যদিও প্রাক্তন মেয়র সিপিএমের মমতা জয়সবাল বলেন, “বহু আগে উদ্যানের ভিতরে অনুষ্ঠান হত। পুরসভার কোনও অনুমতি না নিয়েই স্থানীয় বাসিন্দারা অনুষ্ঠান করতেন। আমাদের নজরে আসার পরে তা বন্ধ করে দিয়েছিলাম।”
হাওড়া পুরসভার নতুন মেয়র তৃণমূলের রথীন চক্রবর্তী বলেন, “আমরা সব উদ্যানগুলিকেই নতুন ভাবে সাজানোর পরিকল্পনা করেছি। মেয়র পারিষদ ঠিক হলেই কাজ শুরু হবে দ্রুত। উদ্যানের মধ্যে কোনও অনুষ্ঠান হচ্ছে এমন খবর পেলেই উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” |