|
|
|
|
দিল্লিতে অরুণাচলের ছাত্র-মৃত্যুতে উত্তেজনা
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি ও গুয়াহাটি
৩১ জানুয়ারি |
অস্বাভাবিক মৃত্যু হল অরুণাচলপ্রদেশ থেকে দিল্লিতে পড়তে আসা ১৯ বছরের এক ছাত্রের। নিদো টানিয়াম নামে ওই ছাত্রের বাবা অরুণাচলের স্বাস্থ্য দফতরের পরিষদীয় সচিব তথা কংগ্রেস বিধায়ক। মৃত ছাত্রের বন্ধুরা জানিয়েছে, গত ২৯ জানুয়ারি দিল্লির লাজপত নগরে কয়েক জন দোকানদারের সঙ্গে টানিয়ামের বচসা ও হাতাহাতি হয়েছিল।
|
নিদো টানিয়াম |
তাদের মারে গুরুতর জখম ওই টানিয়াম গত কাল এইমসে মারা যায়। এই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে তিন জনকে আটক করেছে দিল্লি পুলিশ। মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল অবশ্য পুলিশের ভূমিকা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন। উপরাজ্যপাল নজীব জঙ্গের কাছে ম্যাজিস্ট্রেট পর্যায়ের তদন্ত চেয়েছে
তাঁর সরকার।
লাভলি প্রফেশনাল অ্যাকাডেমির প্রথম বর্ষের ছাত্র টানিয়াম থাকত দিল্লির গ্রিন পার্কে। ঘটনার দিন সে বন্ধুদের সঙ্গে লাজপত নগরে ভাড়াবাড়ি খুঁজতে গিয়েছিল। বন্ধুরা জানিয়েছে, ওই এলাকার কয়েক জন দোকানদার টানিয়ামের চেহারা ও চুলের রং নিয়ে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করেছিল। টানিয়াম তার প্রতিবাদ করলে শুরু হয় বচসা, তা থেকে মারামারি। দিল্লিতে নিযুক্ত অরুণাচলের মুখ্য রেসিডেন্ট কমিশনার এ মিশ্র জানান, টানিয়ামের শরীরের অভ্যন্তরে গুরুতর চোট লেগেছিল। তার দেহে অন্তত ৪০টি আঘাতের চিহ্ন মিলেছে বলে সূত্রের খবর।
বন্ধুদের একাংশের অভিযোগ, ঘটনার পরে জখম টানিয়ামকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল পুলিশ। পরে তাকে ফের ওই একই জায়গায় শুইয়ে রেখে যাওয়া হয়। সময় মতো পুলিশ ব্যবস্থা নিলে হয়তো টানিয়ামকে বাঁচানো যেত বলে বন্ধুদের বক্তব্য। এই সূত্রেই অন্য একটি ব্যাখ্যা পাওয়া যাচ্ছে। তাতে বলা হচ্ছে, সে দিন ঘটনার পরে বাড়ি চলে এসেছিল আহত টানিয়াম। গত কাল তাকে নিজের ঘরে অচেতন অবস্থায় পাওয়া যায়। হাসপাতালে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
লাজপত নগর থানায় একটি খুনের অভিযোগ দায়ের হয়েছে। পুলিশ কমিশনার বি এস বাস্সি বলেছেন, “জেরা শুরু হয়েছে। তদন্তের দ্রুত নিষ্পত্তি হবে।”
টানিয়ামের মৃত্যু ঘিরে দিল্লি পুলিশ ও আপ সরকারের মধ্যে আর এক প্রস্ত চাপান-উতোর শুরু হয়েছে। কেজরিওয়াল বলেছেন, “সকলের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান জরুরি। প্রকাশ্য রাস্তায় এক ছাত্রকে পিটিয়ে হত্যার মতো এমন নিন্দনীয় ঘটনা কোনও ভাবেই বরদাস্ত করা হবে না।” তবে তার পাশাপাশিই এমন ঘটনা কী ভাবে ঘটল এবং এর পিছনে পুলিশের গাফিলতি রয়েছে কি না তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। শিক্ষামন্ত্রী মণীশ সিসৌদিয়াকে ঘটনার বিশদ তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী।
বিরোধীদের তোপ অবশ্য আপ সরকারের দিকেই। প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ তুলে লাজপত নগরে বিক্ষোভ দেখায় অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদ। বিজেপির মুখপাত্র সুধাংশু ত্রিবেদী বলেন, “রাজধানীর বুকে দেশের কোনও অঞ্চলের মানুষের প্রতিই জাতিবিদ্বেষের এই ঘটনা মেনে নেওয়া যায় না। দিল্লিতে আইন-শৃঙ্খলা ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছে।” |
|
|
|
|
|