পরিকল্পিত উপনগরী বিধাননগরের বিভিন্ন জায়গায় গজিয়ে উঠেছে ঝুপড়ি। পাশাপাশি অফিসপাড়ায় ফুটপাথ দখল করে চলছে নানা দোকান। এতে পরিবেশ নোংরা হচ্ছে বলে অভিযোগ পুরবাসীর।
অথচ এ ছবি বদলাতে একাধিক বার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল পুরসভা। বাম আমলে একাধিক বার ঝুপড়ি ও রাস্তার ধারের অস্থায়ী দোকানগুলিকে শৃঙ্খলায় আনার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু মাঝেমধ্যে উচ্ছেদ অভিযান ছাড়া আর কোনও পরিকল্পনা অবশ্য কার্যকরী হয়নি। বর্তমান তৃণমূল পরিচালিত বিধাননগর পুরবোর্ড-এর দাবি, শহরকে পরিষ্কার, পরিচ্ছন্ন রাখতে রাস্তার ধারের দোকানগুলিকে নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা চলছে। ইতিমধ্যেই কয়েকটি জায়গায় পরীক্ষামূলক ভাবে সেই কাজ করাও হয়েছে। পাশাপাশি দীর্ঘ দিন ধরে গজিয়ে ওঠা ঝুপড়ি এবং অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ বদলাতে রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা চলছে।
যদিও বিধাননগর পুরকর্তৃপক্ষ আগেও এমন দাবি করেছিলেন। ফুটপাথে স্থায়ী দোকানের বদলে নির্দিষ্ট আয়তন ও আকারের অস্থায়ী মডেল দোকানের পরিকল্পনা করা হয়েছিল। পাশাপাশি ঝুপড়িবাসীদের উচ্ছেদ না করে বিকল্প পরিকল্পনা করা হচ্ছে বলে তাঁরা দাবি করেছিলেন। তবে গত দু’বছরে সে চেষ্টা তেমন চোখে পড়েনি বলেই অভিযোগ বাসিন্দাদের। |
বাসিন্দাদের অভিযোগ, শহরকে ঢেলে সাজতে উদ্যোগী হয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিধাননগরেও চলছে সৌন্দর্যায়নের নানা কাজ। সেখানেই অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ নগরীর অফিসপাড়া-সহ বিভিন্ন এলাকার। রাস্তার ধারের অস্থায়ী দোকান ও ঝুপড়ির কারণেই এই সমস্যা। পুরবাসীর দাবি, নয় ঝুপড়ি ও অস্থায়ী দোকান সরানো হোক, নয় তো পুনর্বাসন দিয়ে সমস্যার সমাধান করা হোক।
কেষ্টপুর খালপাড়ে ঝুপড়ি, উন্নয়ন ভবন ও ময়ূখ ভবনের উল্টো দিকে ঝুপড়ির পাশাপাশি বিধাননগরের অফিসপাড়া, যেমন বিকাশভবন থেকে করুণাময়ী মোড় পর্যন্ত এলাকার একাধিক ব্লকে রাস্তায় দোকান গজিয়ে উঠেছে। বিধাননগরের বাসিন্দাদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বহিরাগতের সংখ্যা। স্বভাবতই অস্থায়ী খাবার দোকান থেকে নানা প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দোকান গজিয়ে উঠেছে। অধিকাংশ দোকানের চারপাশ পরিষ্কার থাকে না বলে অভিযোগ বাসিন্দাদের।
বিধাননগর পুরপ্রশাসনের অবশ্য দাবি, তাঁরা চেষ্টার ত্রুটি রাখছেন না। কাউন্সিলরা এই সমস্যার সমাধানে পুরসভাকে নানা প্রস্তাব দিচ্ছেন। পাশাপাশি ফুটপাথের হকারদের শৃঙ্খলায় আনতে স্থায়ী নয়, ভ্রাম্যমান দোকান নিয়ে ব্যবসা করার পরামর্শ দিচ্ছেন পুরকর্তারা। বিধাননগর পুরসভার চেয়ারপার্সন কৃষ্ণা চক্রবর্তী বলেন, “মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে শহর সাজানোর কাজ চলছে। যত্রতত্র দোকান করে বসে পড়া নয়, শৃঙ্খলায় আনার পরিকল্পনা করা হয়েছে। ইতিমধ্যেই ২০৬ বাসস্ট্যান্ডের কাছে কাজ হয়েছে। পরবর্তীতে অন্যান্য জায়গায়ও কাজ হবে। ব্যবসায়ীরাও আমাদের কথা শুনছেন।” ঝুপড়ি নিয়ে তিনি বলেন, “দীর্ঘ দিন ধরে ঝুপড়িবাসীরা বিধাননগরে বসবাস করছেন। কী ভাবে এই সমস্যার সমাধান করা যায় তা নিয়ে পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমের সঙ্গে আমরা আলোচনা করব।” |