বহিরাগত রুখেও হল না রক্ষা, বলছে এসএফআই
হিরাগতেরা ঢুকতে না পারায় একটি কলেজে শেষ পর্যন্ত তাঁরা প্রার্থী দিতে পেরেছিলেন, জিতেওছিলেন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কলেজেই ঢুকতে না দেওয়ায় তাঁরা রানিগঞ্জ গার্লস কলেজে ছাত্র সংসদের বোর্ড গড়তে পারলেন না বলে দাবি এসএফআই নেতাদের।
সারা জেলায় যখন এসএফআই কোনও কলেজেই প্রার্থী দিতে পারেনি, সেখানে রানিগঞ্জের এই কলেজে ৫টি আসন বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতে নিয়েছিল তারা। শেষ পর্যন্ত ১৩-১০ ফলে জেতে তারা। কিন্তু শুক্রবার বোর্ড গঠন করতে যাওয়ার সময়ে তাঁদের প্রতিনিধিদের বাধা দেওয়া হয় বলে এসএফআই নেতৃত্বের অভিযোগ। বোর্ড গড়েছে টিএমসিপি। সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছেন শ্রাবণী অধিকারী।
রাজ্যে তৃণমূল ক্ষমতায় আসার পর থেকে যেখানে বহু কলেজে এসএফআই প্রার্থীই খুঁজে পাচ্ছে না বলে দাবি করছে শাসকদলের ছাত্র সংগঠন, সেখানে রানিগঞ্জ গার্লস কলেজের ভোটে পরপর তিন বার তাদের জয়ের পিছনে বহিরাগতদের কলেজে ঢুকতে না পারাই কারণ বলে দাবি করেছেন এসএফআই নেতা-নেত্রীরা। একই বক্তব্য সিপিএম নেতাদেরও।
আসানসোলের প্রাক্তন এসএফআই নেতা তথা সিপিএম সাংসদ বংশগোপাল চৌধুরীর দাবি, “ছাত্রীদের বাধায় ওই কলেজে গত দু’বছর বহিরাগতেরা ঢুকতে পারেনি। এ বার আমাদের সমর্থকেরা শেষ পর্যন্ত লড়েও শাসকদলের জবরদস্তির কাছে হেরে গিয়েছে।” এসএফআইয়ের রাজ্য কমিটির সদস্য তথা রানিগঞ্জ গার্লস কলেজের প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক প্রীতি মাহাতো জানান, ছাত্র সংসদের ক্ষমতা দখলের পরেই তাঁরা দাবি তুলেছিলেন, মেয়েরা ছাড়া কোনও ভাবেই গার্লস কলেজে বহিরাগত কেউ ঢুকতে পারবে না। কলেজ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে সেই সিদ্ধান্ত কার্যকর করা হয়। ফলে, অবাধ নির্বাচন হয়েছিল।
২০১১-১২ সালে এই কলেজের ভোটে এসএফআই ২১টি এবং টিএমসিপি ৭টি আসন পায়। তার পরের শিক্ষাবর্ষে এসএফআই ১৯টি ও টিএমসিপি ৯টি আসন পেয়েছিল। প্রীতির অভিযোগ, “অবাধ নির্বাচন হলে কিছুতেই জিততে পারবে না ওরা। এ বারও পারেনি। কিন্তু ওরা প্রথম থেকেই ঠিক করেছিল, যে ভাবেই হোক, নির্বাচিত প্রার্থীদের জোর করে দলে টেনে বোর্ড দখল করবে। তা-ও যখন সম্ভব হল না, জোর করে বাধা দিয়ে ছাত্র সংসদ দখল করল।” এসএফআই কর্মী-সমর্থকেরা জানান, কলেজ চত্বর ও তার বাইরে প্রচুর পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছিল। কিন্তু কলেজের এক বর্গ কিলোমিটার পর থেকে বাকি এলাকা দখল করে নিয়ে বাধা দেয় টিএমসিপি এবং তৃণমূল। এসএফআইয়ের জেলা সভাপতি সুব্রত সিদ্ধান্তের দাবি, “টিডিবি কলেজে প্রথম থেকেই বহিরাগত দুষ্কৃতীদের এনে বাধা দিয়েছে টিএমসিপি। আমাদের কোনও প্রার্থীই দিতে দেওয়া হয়নি। গার্লস কলেজেও এ বার আমাদের ছ’জন ইচ্ছুক প্রার্থীকে হুমকি দিয়ে মনোনয়ন দাখিল করতে দেয়নি।”
এসএফআই এবং সিপিএমের এ সব কথা অবশ্য উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূল ও তাদের ছাত্র সংগঠনের নেতারা। বহিরাগতদের নিয়ে গিয়ে হামলা বা বাধার কথা অস্বীকার করে প্রাক্তন ছাত্র পরিষদ নেতা তথা রানিগঞ্জের তৃণমূল নেতা অনল মুখোপাধ্যায়ের দাবি, ১৯৮২ সালে টিডিবি কলেজে সরাসরি সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন ছাত্র পরিষদ নেতা কমলেশ সিংহ। কিন্তু তাঁকে এসএফআই বোর্ড গড়তে দেয়নি। বিষয়টি আদালতে গড়ালে কমলেশ জিতে যান। অনলবাবুর অভিযোগ, “তবু তাঁকে ছাত্র সংসদ বসতে না দিয়ে কলেজের তৎকালীন অধ্যক্ষকে চার বছর প্রশাসক হিসেবে নিয়োগ করে রাখা হয়। এর পরে ২০১১ সাল পর্যন্ত এসএফআই জোর করে ছাত্র সংসদের ক্ষমতা দখল করে রাখে। সে সব দিন ওদের মনে রাখা উচিত।”
টিএমসিপি-র জেলা সভাপতি অশোক রুদ্র দাবি করেন, এসএফআই-ই জোর করে চার জনকে মনোনয়ন দাখিল করিয়েছিল। তাঁরা জেতার পরে এখন টিএমসিপি-তে যোগ দিতে চাইছেন। অশোকবাবু বলেন, “এর আগে এসএফআই থেকে জয়ী প্রার্থী সীমা গোপ আমাদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন।” এসএফআই নেতা সুব্রতবাবুর যদিও অভিযোগ, “সীমাকে জোর করে সই করিয়ে নেওয়া হয়েছে।” অশোকবাবুর পাল্টা বক্তব্য, “বংশগোপালবাবুরা অতীতে কলেজ ভোট-সহ সমস্ত রকম নির্বাচনে যে ভাবে জিতেছেন, এখন তারই দুঃস্বপ্ন দেখছেন। কলেজ চালু হওয়ার পর থেকে ওরা তো বিরোধী কাউকে প্রার্থীই দিতে দিত না। আমাদের সময়ে তো তবু ভোট হয়েছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.