গভীর রাতে পরপর পাঁচটি বাড়িতে ঢুকে লুঠপাট চালাল এক দল দুষ্কৃতী। অন্ডালের জয়পুরিয়ায় কোলিয়ারি এলাকায় বৃহস্পতিবার রাতে। ওই ডাকাত দলে শিশু কোলে এক মহিলাও ছিলেন বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছে একটি পরিবার। পুলিশ জানিয়েছে, ডাকাতির ঘটনায় শুক্রবার রাত পর্যন্ত তিন জন বাড়িতে ডাকাতির অভিযোগ দায়ের করেছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, প্রায় কুড়ি জনের দুষ্কৃতী দল ডাকাতিগুলি করেছে। তাদের সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র ছিল। ডাকাতির সময়ে একদল দুষ্কৃতী বাড়ির মধ্যে ও একদল বাড়ির বাইরে ছিল বলে অভিযোগ করেছে আক্রান্ত পরিবারগুলি। ডাকাতির সময়ে দুষ্কৃতীরা বোমাবাজিও করে বলে অভিযোগ। ডাকাতির প্রথম তিনটি ঘটনা ঘটে জয়পুরিয়ার মিনাবাজার এলাকায়। প্রথমে ডাকাত দলটি রাজেশ রাজভরের বাড়িতে হামলা চালায় বলে অভিযোগ। রাজেশবাবু পুলিশের কাছে দায়ের করা অভিযোগে জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ১১টা নাগাদ একদল দুষ্কৃতী তাঁদের বাড়িতে চড়াও হয়ে তাঁর মায়ের কানের দুল কেড়ে নেয়। |
দুষ্কৃতী দলে শিশু কোলে এক মহিলা ছিলেন। দুষ্কৃতীরা তাঁর ভাগ্নীকেও মারধর করেছে বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। রাজেশবাবু আরও অভিযোগ দুষ্কৃতীরা শাবল দিয়ে দরজা ভাঙে। তাদের কাছে আগ্নেয়াস্ত্র ও লোহার রড ছিল। রাজেশবাবুর মা কলাবতী দেবী বলেন, সব দুষ্কৃতী বাড়িতে ঢোকেনি। কয়েক জন বাড়ির বাইরে পাহারাতে ছিল। দুষ্কৃতীরা আলমারি ভেঙে নগদ টাকা ও সোনার গয়না লুঠ করেছে বলে অভিযোগ করেন কলাবতীদেবী। তাঁর আরও অভিযোগ, “দুষ্কৃতীরা আমার ছেলের নাম ধরে খোঁজ করছিল।” এর পরে ডাকাতির দ্বিতীয় ঘটনাটি ঘটে রাঙা মুন্ডার বাড়িতে। রাঙা দেবীর অভিযোগ, “দুষ্কৃতীরা আমার স্বামীকে মারধর করে নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন নিয়ে পালিয়েছে”। ডাকাতির তৃতীয় ঘটনাটি ঘটে কুজল গোপের বাড়িতে। কুজলবাবুর বাড়ি থেকেও নগদ টাকা ও মোবাইল ফোন লুঠ করা হয়েছে বলে অভিযোগ। স্থানীয় বাসিন্দা পিন্টু গৌড়, নাথশরণ রাজভরেরা জানান, রাতে হঠাৎ কিছু কুকুরের চিৎকারে তারা বাড়ি থেকে বেরিয়ে বুঝতে পারেন এলাকার কয়েকটি বাড়িতে দুষ্কৃতীরা চড়াও হয়েছে। এর পর দুষ্কৃতীরা বোমাবাজি করতে করতে নিউ মাইনাস কোর্য়াটার এলাকায় চলে যায়। ওই এলাকায় দিলীপ যাদব ও সুলতা তেওয়ারির বাড়িতে ঢুকে দুষ্কৃতীরা মারধর করে ও লুঠপাঠ চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গিয়েছে।
এলাকায় পর পর এতগুলি ডাকাতির ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে স্বাভাবিকভাবেই আতঙ্কে রয়েছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। তাঁদের অভিযোগ, রাতের বেলা এলাকায় যে বিন্দুমাত্র নিরাপত্তা থাকে না, তার প্রমাণ বৃহস্পতিবার রাতের ঘটনা। দুষ্কৃতীদের সঙ্গে আগ্নেয়াস্ত্র থাকায় প্রাণহানির ঘটনাও ঘটতে পারত বলে অভিযোগ করেছেন তাঁরা। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, অবিলম্বে এই ঘটনায় জড়িত দুষ্কৃতীদের গ্রেফতার করতে হবে। না হলে আন্দোলন সংঘটিত করা হবে বলেও জানিয়েছেন তাঁরা।
পুলিশ জানিয়েছে, ইতিমধ্যেই এই ঘটনার তদন্ত শুরু হয়েছে। এডিসিপি (পূর্ব) সুনীলকুমার যাদব বলেন, “আমরা একটি দুষ্কৃতী চক্রকে সন্দেহ করছি। দুষ্কৃতীদের খুব দ্রুত গ্রেফতার করা হবে।” |