ঘোকসাডাঙার জোড়া খুনের ঘটনায় এক মহিলা সহ দুই জনকে গ্রেফতার করল পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাতে দুই অভিযোগ গ্রেফতার করেছে পুলিশ। ধৃতদের নাম একাদশী বিশ্বাস ও যাদব বর্মন। একাদশীর বাড়ি ঘোকসাডাঙা থানা এলাকার দ্বারিকামারি গ্রামে। যাদব বর্মন লাগোয়া আলিপুরদুয়ার থানার পশ্চিম কাঠালবাড়ি এলাকার বাসিন্দা। প্রাথমিক তদন্তে পুলিশের অনুমান, মহিলা ঘটিত বিরোধে ওই জোড়া খুনের ঘটনা ঘটে থাকতে পারে। কোচবিহারের পুলিশ সুপার অনুপ জয়াসবাল বলেছেন, “তদন্তে পাওয়া তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতেই ওই মহিলা সহ দুই জনকে ধরা হয়েছে।”
গত বছরের ১১ ডিসেম্বর রাতে ঘোকসাডাঙার লাফাবাড়ি এলাকার বাসিন্দা ওই দুই যুবক বাবলু রায় (৩৫) ও অমৃত মণ্ডলের (৩৭) দেহ উদ্ধার করা হয়। পেশায় অলঙ্কার ব্যবসায়ী বাবলুবাবুর প্রতিবেশী অমৃতবাবু কৃষি কাজ করতেন। ওই দুই যুবক মোটর সাইকেলে ফালাকাটা যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে ছিলেন। পর দিন সকালে বাড়ি থেকে প্রায় ৩ কিমি দূরে পুঁটিমারির তোর্সা সেতু লাগোয়া এলাকায় ওই দুই জনের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয়। ঘটনার পরে কিন্তু প্রশিক্ষিত কুকুর খুনিদের ব্যাপারে কোনও ইঙ্গিত দিতে পারছে না বলে অভিযোগ তুলে অন্য ভাল কুকুর আনার দাবি তোলেন। সেই সময়ে পুলিশ ও জনতার সংঘর্ষে এলাকা রণক্ষেত্রের চেহারা নেয়।
পুলিশ জানিয়েছে, ঘটনার পরেই নিহতদের বাইক পরে আলিপুরদুয়ার থানা এলাকা থেকে উদ্ধার হয়। ওই বাইকের বাক্স থেকে সোনার বেশ কিছু অলঙ্কারও উদ্ধার করে পুলিশ। ফলে নিছক লুঠের উদ্দেশ্যে ওই খুনের ঘটনা নয় বলে পুলিশের সন্দেহ হয়। পুলিশের দাবি, তদন্তে নেমে একাদশীর সঙ্গে বাবলুর ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে বলে জানা যায়। এমনকী ঘটনার রাতে বাবলু তার বন্ধুকে নিয়ে ওই বাড়িতেও গিয়েছিল বলে পুলিশের কাছে তথ্য রয়েছে। সেই সূত্রেই একাদশীর ঘনিষ্ঠ হিসাবে পশ্চিম কাঠালবাড়ির বাসিন্দা যাদব বর্মনের নামও উঠে আসে। নিহত যুবকদের মোবাইল ফোনের সূত্র ধরেই আরও কিছু তথ্য পায় পুলিশ। পুলিশ জানিয়েছে, একাদশীর বাড়িতে বাবলুর যাতায়াত ভাল চোখে দেখত না যাদব। তার জেরেই ছক কষে তাকে খুনের পরিকল্পনা করা হয় বলে পুলিশ মনে করছে। প্রত্যক্ষদর্শীকে সরিয়ে দেওয়ার জন্যই পরে অমৃতকেও খুন করা হয়।
পুলিশের এক আধিকারিক এই প্রসঙ্গে জানিয়েছেন, যেখান থেকে দু’টি দেহ উদ্ধার হয়েছে সেখানে ওই দুই জনকে খুন করা হয়নি। ঠিক কোথায় খুন করার পর দেহ তোর্সা সেতুর কাছে ফেলে রাখা হয় তা এখনই নিশ্চিত করে বলা যাবে না। এ দিন ধৃতদের মাথাভাঙা মহকুমা আদালতে তোলা হলে, ১৩ দিনের পুলিশ হেফাজতে রাখার নির্দেশ দিয়েছে আদালত। |