শিলিগুড়িতে ফলছে মরিশাস আনারস
বার শিলিগুড়িতে উৎপাদন হল ‘মরিশাস’ প্রজাতির আনারস। উত্তরবঙ্গ তথা এ রাজ্যে এটাই প্রথম মরিশাস প্রজাতির আনারস চাষ বলে জানিয়েছে উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। বিধাননগরের এক আনারস চাষি অরুণ মণ্ডল গত বছর কেরল থেকে ওই প্রজাতির আনারসের চারা এনেছিলেন। তা থেকেই এ বার ফলন হয়েছে। বৃহস্পতিবার ওই আনারসের গুণমান পরীক্ষার জন্য তা উদ্যানপালন বিভাগের হাতে তুলে দেওয়া হয়। উত্তরবঙ্গ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নীলেশ ভৌমিক অরুণবাবুকে চারা আনার কাজে সাহায্য করেছেন। বস্তুত, কেরল কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে তিনি অরুণবাবুর যোগাযোগের ব্যবস্থা করেন। সেখানকার আনারস গবেষণা কেন্দ্র থেকে চাষিদের খোঁজ নিয়ে চারা আনা হয়।
নীলেশবাবু বলেন, “বাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে এর আগে উত্তরবঙ্গে তথা এ রাজ্যে এই আনারস চাষ হয়নি।” তিনি জানান, উত্তরবঙ্গে যে প্রজাতির আনারস চাষ হয় তা ‘জায়েন্ট কিউ’ প্রজাতি। এটি সাধারণত আকারে বড় হয়। আড়াই থেকে ৩, এমনকী ৪ কিলোগ্রাম পর্যন্ত ওজন হতে পারে এক একটি আনারসের। এটি মূলত রসাল। আনারস থেকে বিভিন্ন জিনিস তৈরিতে প্রক্রিয়াকরণের জন্য এই আনারস উপযোগী। মরিশাস প্রজাতির আনারস আকারে ছোট। ওজন সাধারণত ১ কিলোগ্রামের মতো। কিউ প্রজাতির চেয়ে খেতে বেশি মিষ্টি। কেটে খাবার জন্যই এই প্রজাতির আনারসের চাহিদা বেশি। দেশ বিদেশের বাজারে কেরল থেকে এই আনারস প্রচুর সরবরাহ হয়। সেই কারণেই এই প্রজাতির আনারস চাষে উৎসাহী হন বিধাননগরের চাষিদের একাংশ।

উৎপন্ন মরিশাস প্রজাতির আনারস দেখাচ্ছেন চাষিরা। বৃহস্পতিবার শিলিগুড়িতে তোলা নিজস্ব চিত্র।
উত্তরবঙ্গ আনারস চাষি সংগঠনের সম্পাদক অরুণ মণ্ডল কোচবিহার কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। তাদের মাধ্যমেই কেরল থেকে চারা আনার খোঁজখবর পেয়ে তিনি উদ্যোগী হন। গত বছর সেই মতো ১৮ হাজার আনারসের চারা তিনি নিয়ে আসেন। চারা কিনতে তাঁর খরচ হয়েছে ১ লক্ষ টাকার মতো। তা আনতে গাড়ি ভাড়া লেগেছে আর ১ লক্ষ টাকা। চাষের কাজে খরচ হয়েছে অন্তত ১ লক্ষ ৮০ হাজার টাকা। তবে দেশের বিভিন্ন অংশে বা বিদেশে বাজার ধরতে পারলে তিনি লাভবান হবেন বলে আশাবাদী অরুণবাবু। তিনি বলেন, “আমরা যে জায়েন্ট কিউ প্রজাতির আনারস উৎপাদন করি তা ১১ টাকা কিলোগ্রাম হিসাবে বিক্রি করতে হয়। অথচ মরিশাস প্রজাতির আনারস কেরল থেকে ২৭ টাকা প্রতি কিলোগ্রাম দরে বিক্রি করে চাষিরা। তাই এই আনারস লাভজনক হবে বলে আশাবাদী।” তিনি জানান, দিল্লির বাজারে এই প্রজাতির আনারসের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।
উদ্যোন পালন বিভাগের দার্জিলিং জেলার আধিকারিক বিপ্লব সরকার জানান, বিধাননগরে উৎপন্ন মরিশাস প্রজাতির আনারসের গুণমান পরীক্ষা করে দেখা হবে। সে জন্য উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের বায়োটেকনোলজি বিভাগে পাঠানো হবে। তবে গত বছর চারা আনায় এ বছর উৎপাদন করা সম্ভব হয়েছে। এই ফলন থেকে যে চারা মিলবে তা দিয়ে আগামী বছর চাষ করা সম্ভব হবে। তাই এ বছর লাগানোর মতো চারা আনার জন্য সরকারি সাহায্যের আবেদন করেছেন অরুণবাবু। বিপ্লববাবু জানান, চাষিদের অনেকেই এ ব্যাপারে সাহায্যের আবেদন করছেন। তা প্রকল্প করে তাঁরা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠাবেন। তা অনুমোদন হলে তবেই সাহায্য করা সম্ভব হবে। গুণমান খতিয়ে দেখে বেশি সংখ্যায় চাষিদের মরিশাস প্রজাতির আনারস চাষে উৎসাহ দিতে চায় উদ্যান পালন দফতর।





First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.