জলপাইগুড়ির বজরাপাড়ায় বিস্ফোরণের ঘটনায় মূল অভিযুক্ত ধৃত দুই কেএলও নেতা ও এক লিঙ্কম্যানকে ১৪ দিনের জন্য নিজেদের হেফাজতে নিল সিআইডি। বুধবার দুপুরে পুলিশের ‘স্পেশাল অপারেশন গ্রুপ’ নারায়ণ রায় ওরফে তরুণ থাপা, প্রদীপ রায় ওরফে ইকবাল সিদ্দিকি ওরফে প্রাণ নারায়ণ কোচ এবং রামশঙ্কর বসাককে শিলিগুড়ি মহকুমার নেপাল সীমান্তের অধিকারী এলাকা থেকে গ্রেফতার করে। বৃহস্পতিবার ধৃতদের জলপাইগুড়ি মুখ্য বিচার বিভাগীয় আদালতে তোলা হয়। সরকারি আইনজীবী শান্তা চট্টোপাধ্যায় ধৃতদের ১৪ দিনের জন্য সিআইডি-র হেফাজতে দেওয়ার আবেদন জানান। ধৃতদের পক্ষে আইনজীবী না থাকায় বিচারক চৌধুরী হেফাজত করিম সরকারি আইনজীবীর বক্তব্য শোনার পরে আবেদন মঞ্জুর করেন। |
জলপাইগুড়ি আদালত চত্বরে বিস্ফোরণ-কাণ্ডে ধৃতেরা। |
সরকারি আইনজীবী জানান, ঘটনার তদন্তে নেমে বিভিন্ন সূত্রে সিআইডি জেনেছে বিস্ফোরণের ঘটনার পিছনে ধৃত তিনজন রয়েছে। ওই ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এর আগে যে কয়েক জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে, তাদের জেরা করেও গোয়েন্দারা ওই তিনজনের নাম পেয়েছেন। কিন্তু পৃথক রাষ্ট্রের দাবিদার কেএলও সংগঠনের ডেপুটি কমান্ডার ইন চিফ নারায়ণ রায় এবং সংগঠনের সহকারি সাধারণ সম্পাদক প্রদীপ রায়ের বিরুদ্ধে দেশদ্রোহিতার কোন অভিযোগ আদালতে দায়ের করা হয়নি। পুলিশ ধৃতদের বিরুদ্ধে খুন, ষড়যন্ত্র, বিস্ফোরণের অভিযোগে ৩০২, ৩০৭, ১২০ বি, ৩২৬, ৩৪ আইপিসি এক্সপ্লোসিভ ধারায় মামলা রুজু করেছে। বিস্ফোরণের ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এর আগে ধৃত চন্দন রায়, কেপিপি নেতা নুবাস বর্মণ, দীপঙ্কর সিংহের বিরুদ্ধে একই ধারায় পুলিশ মামলা দায়ের করে। সরকারি আইনজীবী বলেন, “ধৃতদের বিরুদ্ধে পরে দেশদ্রোহিতার মামলা যুক্ত করা হতে পারে।” সিআইডি মনে করছে ধৃতদের জেরা করে বজরাপাড়া কান্ডের সমস্ত দিক স্পষ্ট করা সম্ভব হবে। |
আদালত চত্বরে কড়া প্রহরা। বৃহস্পতিবার ছবি তুলেছেন সন্দীপ পাল। |
এদিন দুপুরে শিলিগুড়ি থেকে কড়া পুলিশ পাহারায় কালো মুখোশে মুখ ঢেকে ধৃত তিন জনকে জলপাইগুড়ি আদালতের হাজতে আনা হয়। তাঁদের আদালতের ভিতরে নিয়ে যাওয়া হয়নি। সরকারি আইনজীবী ধৃতদের সম্পর্কে বিস্তারিতভাবে আদালতে জানান। নিরাপত্তার জন্য এ দিন সকাল থেকে আদালত চত্বরে হাজির ছিলেন পদস্থ পুলিশ কর্তারা। ছিলেন সিআইডি-র অফিসারেরাও। ধৃত জঙ্গিরা যেন সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কথা বলতে না পারেন, সে জন্য হাজতের পিছনে তাদের আলাদা করে রাখা হয়। আদালত নির্দেশ দেওয়ার পরে বিকেল পাঁচটার পরে একই ভাবে কড়া পুলিশ পাহারায় ধৃতদের শিলিগুড়িতে নিয়ে যাওয়া হয়। আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি তাদের ফের আদালতে পেশ করা হবে। |