|
|
|
|
পাল্টা আক্রমণে নামল বিজেপি
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
কয়েক দিন পরেই ব্রিগেড ময়দানে সমাবেশ করতে আসছেন নরেন্দ্র মোদী। তার আগে বিগ্রেড সমাবেশ থেকেই বিজেপি-র বিরুদ্ধে সরব হলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু তৃণমূল নেত্রীর ওই কৌশলী বার্তায় অস্পষ্টতার প্রশ্ন তুলছে খোদ বিজেপি-ই! একই প্রশ্ন অন্য দুই বিরোধী দল সিপিএম এবং কংগ্রেসেরও।
ব্রিগেডে বৃহস্পতিবার মমতা বলেছেন, “দিল্লিতে দাঙ্গার মুখ চাই না। দাঙ্গার সরকার চাই না।” কংগ্রেস এবং বিজেপি, কেউ কারও বিকল্প নয় বলেও তৃণমূল নেত্রী মন্তব্য করেছেন। তাঁর আরও অভিযোগ, “কংগ্রেস, সিপিএম এবং বিজেপি এ রাজ্যে পঞ্চায়েত ভোটে জোট করেছিল। তাতেও জিরো হয়ে গিয়েছে!” লোকসভা ভোটে ওই তিন পক্ষের জোট হলেও তৃণমূলই জয়ী হবে, জনসমক্ষে সেই বার্তাই দিতে চেয়েছেন তৃণমূল নেত্রী।
তৃণমূল শিবিরের ব্যাখ্যা, তাদের দলনেত্রী দিল্লিতে ‘দাঙ্গার মুখ’ বলতে গুজরাতের মুখ্যমন্ত্রী মোদীর কথাই বুঝিয়েছেন এবং মোদীর প্রধানমন্ত্রিত্বে কেন্দ্রের সরকার যাতে না হয়, সেই আবেদন জানিয়েছেন। কিন্তু মমতা মোদীর নাম না-করায় তিনি সত্যিই তাঁর বিরোধিতা করেছেন কি না, তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছে বিজেপি-ই। দলের রাজ্য সভাপতি রাহুল সিংহ বলেন, “দাঙ্গার মুখ কে, তা বলতে মুখ্যমন্ত্রী ভয় পেলেন কেন? আমি তো বুঝি, দাঙ্গার মুখ মানে মুকুল রায়!” রাহুলবাবুর পাল্টা অভিযোগ, “এ রাজ্যে হিন্দু-মুসলিম সকলে সম্প্রীতির পরিবেশে বাস করেন। মুখ্যমন্ত্রীই ইমাম ভাতা, মোয়াজ্জিন ভাতা ইত্যাদি পন্থায় কিছু সংখ্যালঘুকে সুড়সুড়ি দিয়ে ভোট নেওয়ার চক্রান্ত করেন!” তৃণমূলকেই সাম্প্রদায়িক দল বলে পাল্টা আক্রমণ করেছেন রাহুলবাবু। সবচেয়ে বড় সাম্প্রদায়িক মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং তাঁর দল।” প্রসঙ্গত, মমতার এ দিনের ব্রিগেড সমাবেশে প্রথম বক্তা ছিলেন টিপু সুলতান মসজিদের ইমাম।
রাজনৈতিক শিবিরের একাংশ মনে করছে, মমতা এ দিন কৌশলে যা বলেছেন, সবই প্রতীকী এবং
নীতিগত। তৃণমূলের বিরুদ্ধে বাম এবং কংগ্রেসের আক্রমণের অস্ত্র ভোঁতা করে দিতে বিজেপি-র বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন। ক’দিন পরে ৫
ফেব্রুয়ারি যে হেতু মোদীর ব্রিগেড সমাবেশ, তাই তার আগে বিজেপি-কে আক্রমণ করে প্রতিপক্ষকে কোণঠাসা করতে চেয়েছেন।
কিন্তু জাতীয় রাজনীতির নানা সম্ভাবনার প্রেক্ষিতে ভবিষ্যতের কোনও সম্ভাবনার দরজাই কৌশলে বন্ধ করেননি। অস্পষ্টতার প্রশ্ন
তুলেই রাহুলবাবু অবশ্য কটাক্ষ করেছেন, “যদি ধরেও নিই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাঙ্গার মুখ বলতে মোদীর কথা বুঝিয়েছেন, তা হলে জিজ্ঞাসা করি, যে ঘটনার কথা উনি বলছেন, সে সময় তো উনি বিজেপি-র পাশেই ছিলেন! তখন প্রতিবাদ করেননি কেন?”
মোদী প্রসঙ্গে মমতার অবস্থানে সন্তুষ্ট নয় সিপিএমও। দলের রাজ্য সম্পাদকমণ্ডলীর সদস্য মহম্মদ সেলিম এ দিন বলেছেন, “বিজেপি-র খারাপ কাজ নিয়ে উনি একটি কথাও বলেননি। বলেছেন, ওরা শুধু হিন্দু-মুসলিম করে। বলেছেন, দাঙ্গার মুখের সরকার চাই না। অর্থাৎ, মুখ পাল্টে দিলেই বিজেপি ভাল!” হাওড়া লোকসভার উপনির্বাচনে বিজেপি-র প্রার্থী না দেওয়ার প্রসঙ্গও টেনেছেন সেলিম। আবার প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্যেরও বক্তব্য, “দাঙ্গাবাজ দল বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু নরেন্দ্র মোদীর নাম করে তাঁকে আক্রমণ করেননি। এর থেকেই বোঝা যায়, ভোটের পরে তৃণমূল-বিজেপি সমঝোতার সম্ভাবনা আছে!” এই বিতর্কের মাঝে আপাতত নজর থাকছে মোদীর ব্রিগেডের দিকে। |
|
|
|
|
|