বাসকর্মীদের মারধরের তিন দিন পরেও অভিযুক্তরা অধরা থাকায় কান্দি-সালার রুটের বাস ধর্মঘট এখনও অব্যাহত। লাগাতার বাস বন্ধে নাজেহাল নিত্যযাত্রী থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষ। এরই মধ্যে বাস শ্রমিক সংগঠনগুলির তরফে সাফ জানান হয়েছে, বাসকর্মী পেটানোয় অভিযুক্তরা ধরা না পড়া অবধি চলবে ধর্মঘট।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের খবর, সোমবার রাতে সালারগামী একটি বাসের জনাকয়েক যাত্রী কান্দরা স্টপেজের আগেই বাসটিকে দাঁড় করাতে চায়। কিন্তু বাস কর্মীরা যাত্রীদের অন্যায় আবদারে কান দেওয়ায় তাঁদের স্টপে নামিয়ে মারধর করা হয় বলে অভিযোগ। এতেও রাগ মেটেনি ক্ষুব্ধ ওই যাত্রীদের। বাসটি মঙ্গলবার সকালে কান্দির দিকে যাওয়ার সময় পুনরায় কান্দরা স্টপে বাসটিকে থামিয়ে জনাকয়েক লোক বাসকর্মীদের উপর চড়াও হয়। এই সময় উভয় পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি বাধে। দু’তরফেই পুলিশের কাছে নালিশ জানিয়েছে।
বাসকর্মীরা অভিযোগ, আমাদের উপর হামলাকারীদের ঘটনার তিন দিন পরেও পুলিশ ধরতে পারেনি। এই ঘটনার প্রতিবাদে অনির্দিষ্টকালের জন্য বাস না চালানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বাসকর্মীরা। ২৮ কিলোমিটার দীর্ঘ কান্দি-সালার রুটের ৪৫টি বাসই বন্ধ থাকায় রীতিমতো বেকায়দায় পড়েছেন নিত্যযাত্রীরা। তাঁরা ঝামেলা নিরসনে প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তাকে দুষছেন। নিত্যযাত্রী পেশায় ব্যবসায়ী নীপেন্দ্রনাথ দাস বলেন, “ব্যবসায়িক কারণে রোজ সালার থেকে কান্দি যেতে হয়। বাস না চলায় ঝামেলায় পড়েছি। কিছু ছোট গাড়ি অবশ্য চলছে। কিন্তু সুযোগ বুঝে তারা সৃষ্টিছাড়া ভাড়া হাঁকছে। অচলাবস্থা কাটাতে প্রশাসনের কোনও হেলদোল নেই।
কান্দির মোটর শ্রমিক সংগঠনের কর্তারাও বলছেন, “ওই রুটে ৩৫টি স্টপেজ আছে। কিন্তু যাত্রীরা ইচ্ছেমত যেখানে সেখানে বাস দাঁড় করায়। তাতে বাধা দিলেই কর্মীদের উপর চড়াও হচ্ছে। বিষয়টি একাধিকবার প্রশাসনের গোচরে এনেও কোনও ফল মেলনি।” মুর্শিদাবাদের মোটর শ্রমিক সমন্বয় কমিটির সম্পাদক বিনয় সাহা বলেন, “মঙ্গলবারের ঘটনার পর পুলিশ ও প্রশাসনের পক্ষ থেকে অভিযুক্তদের গ্রেফতারির ব্যাপারে এখনও পর্যন্ত কোনও আশ্বাস পাইনি। কোন ভরসায় বাস চালাব! তাই এখনও বন্ধ রাখা হয়েছে পরিষেবা।” এ ব্যাপারে কান্দির মহকুমা শাসক প্রদীপ বিশ্বাসের দায়সারা বক্তব্য, “বিষয়টি খোঁজ নিয়ে দেখছি। দ্রুত বাস চলাচল স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছি।” |