ঋণ পেতে অসুবিধা, খোঁজ নিলেন রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কর্তা
দ্যোগপতিদের সাহায্যের জন্য বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক থেকে ঋণদানের ব্যবস্থা রয়েছে। কিন্তু অনেক সময়ই সেই ঋণ পেতে নাস্তানাবুদ হতে হয় তাঁদের। উদ্যোগপতিদের ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পেতে কী কী ধরনের প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হয়, তা জানতে বুধবার বহরমপুরে একটি সভার আয়োজন করেছিল রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। উদ্যোগপতিদের সঙ্গে সেই মুখোমুখি আলাপচারিতায় বিড়ম্বনায় পড়তে হল খোদ রিজার্ভ ব্যাঙ্কের চিফ জেনারেল ম্যানেজার ই ই করথককে। বুধবার বহরমপুরের একটি হোটেলের সেমিনার হলে আয়োজিত এই সভায় আটটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের প্রথম সারির আধিকারিকেরা ছাড়াও জেলা ও রাজ্য স্তরের আরও ৫০ জন ব্যাঙ্ক আধিকারিক এবং মুর্শিদাবাদ জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও উপস্থিত ছিলেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতেই ই ই করথক বলেন, “মুর্শিদাবাদে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কের ৩২৯টি শাখা রয়েছে, যা রাজ্যের ব্যাঙ্ক সমূহের ৭.১৭ শতাংশ। অথচ এ জেলায় ঋণ দেওয়া হয় মাত্র .০৩ শতাংশ। এক শতাংশের তিন ভাগের এক ভাগের থেকেও কম।” তিনি বলেন, “অণু ও ক্ষুদ্র উদ্যোগের জন্য ব্যাঙ্ক ঋণ দেবে কোনও রকম বন্ধক ছাড়াই। ঠিকঠাক আবেদন করা হলে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণের জন্য ২ সপ্তাহ, ৫ লক্ষ টাকা থেকে ২৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণের জন্য ৪ সপ্তাহ এবং ২৫ লক্ষ টাকার উপর ঋণের জন্য ৮ সপ্তাহ সময় নেবে ব্যাঙ্ক। ব্যাঙ্ক বিশেষে ওই সময়সীমার সামান্য হেরফের হতে পারে। ঋণের জন্য আবেদনপত্র জমা দেওয়ার সময় ব্যাঙ্ক থেকে রসিদ নেবেন।”
উদ্যোগপতিদের মুখোমুখি বিভিন্ন ব্যাঙ্ক আধিকারিকরা। বহরমপুরে তোলা নিজস্ব চিত্র।
কিন্তু এত সহজে কী পাওয়া যায় ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ?
এ দিনের অনুষ্ঠানে হাজির থাকা শতাধিক উদ্যোগপতিদের অভিজ্ঞতা কিন্তু অন্য কথা বলে। বেলডাঙার সুজাপুরের ‘চেতনা সঙ্ঘ’ নামের মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যরা রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কর্তার উদ্দেশে বলেন, “একটি ব্যাঙ্কের শাখার ম্যানেজার আমাদের ঋণ দেন না। মহিলা বলে আমাদের তিনি পাত্তাই দেন না।” বেলডাঙার আর একটি মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্যদের অভিযোগ, “ব্যাঙ্ক আমাদের ঋণ দেয় না। এমনকী প্রচারের ব্যাপারেও সহযোগিতা করে না।” এক যুবকের অভিযোগ, “বলছেন ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ঋণের জন্য কোনও রকম বন্ধক লাগবে না। আমি এই জেলার ৩০টি ব্যাঙ্কে ঘুরেছি ঋণ পাওয়ার জন্য। আবেদনপত্র জমা নেওয়া তো দূরের কথা, প্রতিটি ব্যাঙ্ক থেকে প্রথমে মোটা টাকার বন্ধক দাবি করেছে। দিতে না পারায় ঋণ জোটেনি।”
বড়ঞার একটি নির্মাণ সংস্থার মালিক জালালুদ্দিন বলেন, “ব্যাঙ্কের পরামর্শ মতো হস্তচালিত তাঁতবস্ত্র উৎপাদনের জন্য ৫০ লক্ষ টাকার একটি প্রকল্প জমা দেওয়া হয়। ওই প্রকল্প জেলা শিল্পকেন্দ্র অনুমোদন করার পরেও ব্যাঙ্কের অসহযোগিতায় ঋণ মেলেনি। প্রকল্পটি করতে পারলে ওই এলাকার বহু গরিব পরিবারের মহিলাদের কর্মসংস্থান হত। ব্যাঙ্কের অসহযোগিতায় ভবিষ্যতে কেউ শিল্প করতে এগিয়ে আসবে না।” এমনকী তাঁরা জানান, ঋণের জন্য আবেদনপত্র জমা দেওয়ার সময় ব্যাঙ্ক থেকে রসিদ না দেওয়াটাই দস্তুর। তা হলে তাঁরা প্রমাণস্বরূপ কী দেখাবেন, তা নিয়েও ধন্দে উদ্যোগপতিরা।
এ জাতীয় বিস্তর অভিযোগ শোনার পর রিজার্ভ ব্যাঙ্কের কর্তা এবং অন্য ব্যাঙ্কের আধিকারিকেরা পরামর্শ দেন, “তথ্য প্রমাণ-সহ অভিযোগ জানালে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” তাঁরা ওয়েবসাইটের ঠিকানা ও ফোন নম্বর দেন, যেখান থেকে আবেদনপত্র পাওয়া যাবে। ব্যাঙ্ককর্তারা নিদান দিলেও তা কতটা কার্যকর হয় তা সময়ের অপেক্ষা।



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.