এসেছিলেন ব্রিগেডে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সভায় যোগ দিতে। কিন্তু বাড়তি পাওনা হিসাবে ওডাফা ওকোলিকেও চাক্ষুষ দেখে নেওয়ার সুযোগ পেয়ে গেলেন গ্রাম-গঞ্জ থেকে আসা মোহনবাগান সমর্থকরা। রথ দেখা এবং কলা বেচা দু’টোই হয়ে গেল তাদের। মমতা ও ওডাফা—বৃহস্পতিবার সকাল ও দুপুরে দেখে খুশি হয়ে বাড়ি ফিরে গেলেন রাতে।
সভার জন্য সমস্যা হতে পারে। তাই এক ঘণ্টা এগিয়ে এনে সকাল সাড়ে সাতটায় টিমের অনুশীলন ডেকে দিয়েছিলেন বাগান-কোচ করিম। আর ভোরেই বাঁকুড়া, বীরভূম এবং জঙ্গলমহল থেকে আসা মমতার দলের কয়েকশো সমর্থক ভিড় জমিয়েছিলেন বাগান গ্যালারিতে। ইস্টবেঙ্গল, মহমেডানের বৃহস্পতিবার অনুশীলন ছিল না। তাই সবাই চলে আসেন গঙ্গাপাড়ের তাঁবুতে। নিয়মিত খবরের কাগজ বা চ্যানেলে দেখা করিম, ইচে, কাতসুমি, ডেনসনদের সামনে দেখতে পেয়ে উচ্ছ্বসিত হয়ে পড়েন তাঁরা। ছবি তোলার জন্য অনেকেই বায়না জুড়ে দেন। অনেককেই বলতে শোনা যায়, “আমরা মোহনবাগান সমর্থক। প্রিয় ফুটবলারদের সঙ্গে মোবাইলে একটা ছবি তুলতে দিন।” বাগান কর্মীরা কোনওক্রমে সামাল দেন তাঁদের।
সবথেকে বেশি আগ্রহ ছিল ওডাফাকে দেখার। কিন্তু চোট পাওয়া বাগানের গোলমেশিন এ দিনও অনুশীলন করেননি। তিনি বসে ছিলেন মাঠের কোণে ত্রিপল দিয়ে ঢাকা ফুটবলারদের বিশ্রামের জায়গায়। মিনিট পনেরো জগিং করেই বসে পড়েন তিনি। ফলে প্র্যাকটিসের প্রথমের দিকে যাঁরা এসেছিলেন, তাঁরা ওডাফাকে ভাল করে দেখতে পান। পরে যাঁরা আসেন, তাঁরা সে ভাবে দেখতে পাননি। |
রথ দেখা, কলা বেচা। মোহবাগান প্র্যাকটিসে ব্রিগেডের ভিড়। ছবি: শঙ্কর নাগ দাস। |
ফেন্সিং থেকে বাগান-অধিনায়ককে সামান্যই দেখা যাচ্ছিল। “আরে ওডাফা কোথায়? ওকে দেখব,” বলতে থাকেন অনেকেই। কিন্তু ওডাফা পরে আর মাঠে না নামায় হতাশ হন তাঁরা। বহু দূরে বাগান-অধিনায়ককে দেখে খিদে মেটেনি তাঁদের।
কোচ করিমের সঙ্গে ছবি তোলা এবং কথা বলার জন্য আবদার করতে থাকেন ওই সমর্থকরা। কিন্তু মোহন-কোচ অনুশীলন করে দ্রুত ঢুকে যান তাঁবুতে। আই এফ এ শিল্ডে বাগানের প্রথম ম্যাচ রবিবার। ইউনাইটেড সিকিমের বিরুদ্ধে। ওই ম্যাচে ওডাফার খেলার সম্ভাবনা কম। করিম অবশ্য এ দিন ওডাফা খেলবেন কি না খোলসা করে বলেননি। কিছুটা ধোয়াশা রেখে দিয়েই বাগানের মরোক্কান কোচ। বলেন, “পেশির চোট পেলে এ রকম হয়। তিন ধাপে চিকিৎসা হয়। তৃতীয় ধাপে হয় ম্যাচ ফিটনেস। আমি ভাগ্যবান, ওডাফা কয়েকটা ম্যাচ খেলেছে ও ম্যাচ ফিট আছে।”
পরিস্থিতি যা,তাতে বাংলাদেশের শেখ জামাল ধানমন্ডির সঙ্গে আইএফএ শিল্ড ম্যাচ পিছিয়ে যাওয়ায় এক সপ্তাহের মধ্যেই তিনটে ম্যাচ খেলতে হতে পারে বাগানকে। করিম বলেন, “পাঁচ-ছয় দিনে তিনটে ম্যাচ খেলা খুব কঠিন। আমার দলে এখনও কয়েক জনের কিন্তু চোট আছে।” যদিও আইএফএ শিল্ডকে ট্রফি খরা কাটানোর মঞ্চ করে তুলতে চান করিম। বলেন, “আইএফএ শিল্ডে ভাল সুযোগ আছে আমাদের। সুযোগ আছে ট্রফি জেতার। শিল্ড জিতলে আই লিগের আগে আত্মবিশ্বাস আরও বাড়বে দলের।”
ফেড কাপে ব্যর্থতার পর শিল্ডে বাগান কী করে তা সময় বলবে। তবে সাড়ে তিন বছর ট্রফি না জেতা বাগান ফুটবলারদের দেখার জন্য যা হুড়োহুড়ি দেখা গেল, তাতে অবাক হয়েছেন সম্ভবত করিম-সহ পুরো বাগান-ব্রিগেডই। |