বিশ্ব জুড়ে লক্ষ লক্ষ ভক্তের জন্য অবশেষে আশার আলো। মিশায়েল শুমাখারকে কোমা থেকে বার করে আনার চেষ্টা শুরু হয়েছে।
সংবাদমাধ্যমের সামনে হাজির হয়ে শুমাখারের মুখপাত্র সাবিন কেম এ দিন বলে দিলেন, “শুরু হয়েছে মাইকেল শুমাখারকে কোমা থেকে বের করে আনার প্রক্রিয়া।” তবে একই সঙ্গে তিনি এও বলেন, “চটজলদি কিছু হবে না। এটা একটা দীর্ঘমেয়াদি পদ্ধতি। ধৈর্য রাখতে হবে।”
পঁয়তাল্লিশ বছরের শুমাখার গত এক মাস কোমায় আচ্ছন্ন হয়ে রয়েছেন ফ্রান্সের গ্রেনোবেল হাসপাতালে। নতুন বছর শুরু হওয়ার ঠিক দু’দিন আগে ২৯ ডিসেম্বর ফরাসি আল্পসে স্কি করতে গিয়ে মাথায় গুরুতর আঘাত পান ফর্মুলা ওয়ানে সাত বারের এই বিশ্বচ্যাম্পিয়ন। হেলমেট থাকায় সৌভাগ্যবশতঃ প্রাণে বাঁচলেও কোমায় চলে যান সমর্থকদের আদরের শুমি। অস্ত্রোপচারের পরও জ্ঞান ফেরেনি তাঁর।
এ দিন সাবিন কেমের বিবৃতি প্রচারমাধ্যমের আসার পর থেকে শুমাখারের শারীরিক অবস্থার উন্নতির জন্য বিশ্ব জুড়ে শুরু হয়েছে প্রার্থনা। এরই মাঝে মুখপাত্রের মাধ্যমে শুমাখার-পরিবার ধন্যবাদ জানিয়ে সাংবাদিক ও অনুরাগীদের উদ্দেশে বলেছে, “গত এক মাস যাবত যে ভাবে গোটা দুনিয়ার ভক্তরা পাশে ছিলেন তার জন্য তাঁদের ধন্যবাদ। তবে এখনও সময় দরকার। ডাক্তাররা দিবারাত্র মরণপণ চেষ্টা চালাচ্ছেন। খবর সংগ্রহের জন্য ওদের বিরক্ত করবেন না দয়া করে।” শুমাখারের পরবর্তী মেডিকেল বুলেটিন এর পর কবে দেওয়া হবে সে ব্যাপারে কোনও নিশ্চয়তা দেওয়া হয়নি। |
হাসপাতাল সূত্রে খবর, যে ওষুধগুলো প্রয়োগ করে দীর্ঘ এক মাস শুমাখারকে ঘুমের দেশে রাখা হয়েছে, এ বার তার মাত্রা কমানো হবে প্রথমে। তার পর পরিস্থিতি বুঝে ওই কড়া ঘুমের ওষুধ বন্ধ করে দেওয়া হবে। তবে তা করা হবে অত্যন্ত সতর্ক ভাবে এবং সময় নিয়ে। তবে কোমা থেকে বেরিয়ে এলেও শুমাখার সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনে আর ফিরতে পারবেন কি না তা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞদের। তাঁদের মতে এই ধরনের আঘাতে তিন সপ্তাহের পর কোমা থেকে বেরিয়ে আসেন রোগীরা। সে ক্ষেত্রে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ অচল বা অসাড় হওয়ার প্রবণতা থেকে যায়। শুমাখার সেখানে কাটিয়ে ফেলেছেন গোটা একটা মাস। তাই এক্ষেত্রে চিন্তা আরও বেশি চিকিৎসকদের। কারণ যিনি শুমাখারের অস্ত্রোপচার করেছেন, সেই বিশ্বখ্যাত নিউরোসার্জন রিচার্ড গ্রিনউড অপারেশনের পরই মন্তব্য করেছিলেন, “এই ধরনের জটিল অস্ত্রোপচারের পর সব সময়ই রোগীর ব্যক্তিত্ব পরিবর্তন হয়। এখন দেখার শুমাখার কী ভাবে সাড়া দেয়। সেই প্রতীক্ষায় রয়েছে গোটা বিশ্ব। তবে ও যে আগের শুমাখার থাকবে না সেটা এখনই বলতে পারি।” দাওয়াই হিসেবে গ্রিনউড বলেছেন, “অত্যন্ত সতর্কতার সঙ্গে রিহ্যাব প্রক্রিয়া ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। তবে সবার আগে কোমা থেকে বের করে আনতে হবে শুমিকে।” |