পরিচালনার জটিলতায় বন্ধের মুখে উপজাতি স্কুল

৩০ জানুয়ারি
চার বছর আগে অনেক ধুমধাম করে উদ্বোধন হয়েছিল অরুণাচল প্রদেশের পূর্ব কামেং জেলার ওই স্কুলটির। ‘বানা একলব্য মডেল রেসিডেন্সিয়াল স্কুল’ (সংক্ষেপে, ইএমআরএস) প্রতিষ্ঠার সময় ছাত্রসংখ্যা ছিল ৫৪ জন।
স্কুলের প্রথম ব্যাচের ছাত্ররা এখন দশম শ্রেণিতে পড়ছে। স্কুলের ছাত্রসংখ্যা কমে হয়েছে ৫৩!
দশম শ্রেণির গুটিকয়েক ছাত্র ছাড়া কোনও পড়ুয়াই নেই সেখানে। কারণ, প্রতিষ্ঠার পর থেকে স্কুলটিতে নতুন ছাত্র ভর্তি নেওয়া হয়নি। এত দিন ধরে কোনও শিক্ষক বেতনও পাননি। কর্তব্য, ছাত্রদের ভবিষ্যতের কথা ভেবেই পড়াচ্ছেন তাঁরা। দশম শ্রেণির পরীক্ষা শেষ হলে স্কুলটি বন্ধ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন সকলেই।
২০০৯ সালের ১০ অগস্ট স্কুলটির পথচলা শুরু। গোটা রাজ্যে পরীক্ষার মাধ্যমে ছাত্রদের ভর্তি নেওয়া হয় সেখানে। কেন্দ্রীয় উপজাতি উন্নয়ন মন্ত্রক, দেশের বিভিন্ন পিছিয়ে পড়া অঞ্চলে ১০০টি আবাসিক ইএমআরএস গড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। অরুণাচলের বানা ও তাওয়াং-এর লুমলায় দু’টি আবাসিক স্কুল তৈরি হয়। সে গুলির নজরদারিতে অছি পরিষদ এবং কমিটিও গঠন করা হয়েছিল। চুক্তির মাধ্যমে স্কুল পরিচালনের দায়িত্ব দেওয়া হয় বিবেকানন্দ কেন্দ্র বিদ্যালয়ের হাতে। উপজাতি উন্নয়ন মন্ত্রকের তৈরি পরিকাঠামোয় স্কুল চালাতে শুরু করে ওই বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
কিন্তু, প্রথম মাসের পরই বিপত্তি। স্কুল তৈরির অন্যতম উদ্যোক্তা বিধায়ক তানি লোফা জানান, চুক্তি অনুযায়ী ঠিক হয়েছিল, কেন্দ্রীয় সরকার স্কুলের পরিকাঠামো গড়ে দেবে, বিবেকানন্দ কেন্দ্র সামলাবে পঠনপাঠনের বিষয়টি। শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের বেতন কী ভাবে দেওয়া হবে, তা নির্দিষ্ট করে দেওয়া হয়নি। বিবেকানন্দ কেন্দ্রের তরফে কোনওমতে শিক্ষকদের হাতখরচের টাকা দেওয়া হলেও, ২০০৯ সাল থেকেই তাঁরা নিয়মমতো বেতন পাচ্ছিলেন না।
অধ্যক্ষ ওমানাকুত্তান জানান, বর্তমানে স্কুলের পাঁচজন শিক্ষক ও ছ’জন শিক্ষাকর্মীর বকেয়া বেতনের পরিমাণ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। স্কুলে নতুন ছাত্র ভর্তি করার প্রশ্নই নেই। কর্তব্যের খাতিরে তাঁরা পড়ানো চালিয়ে যাচ্ছেন। স্কুলটির অনিশ্চিত ভবিষ্যতের মধ্যেও ৩০ জন ছাত্র ও ২৩ জন ছাত্রী পড়াশোনা ও খেলাধুলোয় ধারাবাহিকভাবে ভাল ফল করে চলেছে। সাক্ষরতায় পিছিয়ে থাকা বানায় ওই স্কুল উজ্জ্বল ব্যতিক্রম। সেখানকার দুই পড়ুয়া ‘জাতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেস’-এ যোগ দিতে কলকাতা গিয়েছে। রাজ্যস্তরে যে ৩৬ জন ছাত্রছাত্রী বৃত্তি পেয়েছে, তার মধ্যে এই স্কুলের ছাত্রছাত্রীর সংখ্যাই ৮ জন। খোদ বিধায়ক লোফার মেয়েও ওই স্কুলেই পড়ে।
তবে, হতাশার মধ্যেও সম্প্রতি সামান্য আশার আলো দেখা গিয়েছে। স্বামী বিবেকানন্দের সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে বানায় গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী নাবাম টুকি। তখন ওই স্কুলেও যান তিনি। শিক্ষকদের কাছ থেকে তিনি জানতে পারেন, প্রথম মাস থেকেই তাঁরা বেতন পাননি। মুখ্যমন্ত্রী দ্রুত শিক্ষা দফতরের সঙ্গে যোগাযোগ করেন। রাজ্য সরকারের তরফে ওই স্কুলের জন্য কোনও অর্থবরাদ্দ নেই জেনে টুকি আশ্বাস দেন, জটিলতা কাটাতে তিনি ব্যবস্থা নেবেন। স্কুল কর্তৃপক্ষকে নতুন শিক্ষাবর্ষে ছাত্র ভর্তি নেওয়ার জন্যও অনুরোধ জানান টুকি।
কিন্তু, রাজ্যের তরফে টাকা না পাওয়া পর্যন্ত কারও আশ্বাসেই আস্থা রাখতে পারছেন না শিক্ষক, কর্মীরা।


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.