|
|
|
|
মমতা-হীন বিকল্প জোটের ডাক বামেদের |
নিজস্ব সংবাদদাতা • নয়াদিল্লি
৩০ জানুয়ারি |
দুই শিবিরই চায় আঞ্চলিক দলগুলিকে নিয়ে বিকল্প ফ্রন্ট তৈরি করতে। কিন্তু পরস্পরকে বাদ দিয়ে।
ব্রিগেডের সমাবেশ থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যখন আঞ্চলিক দলগুলোকে নিয়ে দিল্লিতে বিকল্প ফ্রন্টের সরকার গঠনের ডাক দিচ্ছেন, তখন দিল্লি থেকে ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক বিকল্প জোট তৈরির ডাক দিলেন সিপিএমের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। প্রজাতন্ত্র দিবসের আগের দিন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় কেন্দ্রে স্থায়ী সরকারের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছিলেন। প্রণব আশা প্রকাশ করেছিলেন, ২০১৪ ভারতের পুনরুত্থানের বছর হবে। আজ সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য সীতারাম ইয়েচুরি দাবি তুলেছেন, একমাত্র বিকল্প নীতির সরকার এলেই এই পুনরুত্থান সম্ভব। সেটা তখনই হতে পারে যদি কংগ্রেস ও বিজেপিকে বাদ দিয়ে ধর্মনিরপেক্ষ গণতান্ত্রিক বিকল্প জোট তৈরি হয়। এই বিকল্পই একমাত্র দেশকে স্থায়িত্ব ও উন্নতির দিশা দেখাতে পারে।
ইয়েচুরির এই বক্তব্যের পরে নতুন করে প্রশ্ন উঠেছে, কাদের নিয়ে বিকল্প জোটের কথা বলছে সিপিএম নেতৃত্ব? আজ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ব্রিগেড থেকে আঞ্চলিক দলগুলিকে নিয়েই ফেডেরাল ফ্রন্ট গঠনের ডাক দিয়েছেন। এই আঞ্চলিক দলগুলিকে নিয়েই এত দিন তৃতীয় ফ্রন্ট খাড়া করার চেষ্টা চালিয়েছে সিপিএম। কিন্তু মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ফ্রন্টের কথা বলছেন, সেখানে কংগ্রেস, বিজেপির পাশাপাশি সিপিএমকেও বাদ দিয়ে রেখেছেন তৃণমূলনেত্রী। আবার সিপিএম নেতৃত্বের যুক্তি, তাঁরা যে আঞ্চলিক দলগুলো নিয়ে জোটের কথা বলছেন, সেখানে তৃণমূলের স্থান নেই। কারণ তৃণমূল কংগ্রেস উদার অর্থনীতিরই ধারক ও বাহক। সাম্প্রদায়িক শক্তির মুখ নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কোনও দিন মুখ খোলেন না। আজ অবশ্য মমতা মোদীর নাম করেই বলেছেন, তিনি কেন্দ্রে দাঙ্গার মুখকে দেখতে চান না।
রাজনীতির কারবারিরা মনে করছেন, সবটাই নির্ভর করছে লোকসভা ভোটে কার কত শক্তি হবে। যদি তৃণমূলের আসন সংখ্যা বামেদের থেকে বেশি হয়, তা হলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই তৃতীয় বিকল্পের জোটে বাড়তি গুরুত্ব পাবেন। ছবিটা অন্য হলে বামেরা সেই জোটের চালিকাশক্তি হয়ে উঠতে পারে। সিপিএম নেতৃত্ব অবশ্য বলার চেষ্টা করছেন, তাঁরা ২০০৯ সালের মতো কোনও তৃতীয় ফ্রন্টের সরকার গঠনের স্বপ্ন দেখিয়ে নির্বাচনে যেতে চাইছেন না। তাঁরা শুধুই বিকল্প আর্থিক নীতির ভিত্তিতে ধর্মনিরপেক্ষ দলগুলিকে এককাট্টা করতে চাইছেন। বাম-সহ এই দলগুলি জনসমর্থন পেলে বোঝা যাবে, সেই বিকল্প নীতিও জনসমর্থন পাচ্ছে। সেই জোট সরকারে না এলেও অন্তত নীতিগুলিও আগামী সরকারে গুরুত্ব পাবে।
দলীয় ইংরেজি মুখপত্রে সীতারাম ইয়েচুরি যুক্তি দিয়েছেন, মন্দার ধাক্কায় মানুষের সমস্যা বেড়েছে। বিশ্ব জোড়া মন্দার প্রকোপ থেকে দেশের মানুষকে রক্ষা করতে বিকল্প নীতিরই প্রয়োজন। যা কংগ্রেস ও বিজেপি, দু’দলের নীতির থেকেই আলাদা হবে। যে নীতিতে দেশের সম্পদ দুর্নীতির মাধ্যমে লুঠ করা হবে না। ধনীদের কর ছাড় দেওয়া হবে না। সরকারি বিনিয়োগে পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে। যার ফলে অতিরিক্ত কর্মসংস্থান হবে। মানুষের হাতে খরচ করার বাড়তি নগদ টাকা আসবে। তার ফলেই সকলের জন্য উন্নয়নের দিশা মিলবে। |
|
|
|
|
|