আইনজীবীকে খুনের অভিযোগে যাবজ্জীবন ৭ জনের
প্রাচীন আংটি হাতানোর জন্য এক আইনজীবীকে খুনের অভিযোগে সাত ব্যক্তিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিল আলিপুর আদালত। শুক্রবার আলিপুরের ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের বিচারক অনির্বাণ দাস ওই শাস্তি ঘোষণা করেন।
পুলিশ জানায়, শ্যামাপ্রসাদ রায় নামে ওই আইনজীবীকে খুনের দায়ে যাদের যাবজ্জীবন কারাবাস হল তাদের নাম অম্লান দত্ত, অরিন্দম ঘোষ ওরফে বাবলা, বিজয় রায়, বিজয় বাহাদুর সিংহ ওরফে বাদল, অমিত সিংহ, রামকুমার মণ্ডল এবং সঞ্জয় বন্দ্যোপাধ্যায়।
সরকারি আইনজীবী নবকুমার ঘোষ জানান, ২০০৭ সালের ১৬ অগস্ট, টালিগঞ্জ থানা এলাকার পার্ক সাইড রোডের একটি বাড়ির তিনতলা থেকে আইনজীবী শ্যামাপ্রসাদ রায়ের (৫৯) পচাগলা দেহ উদ্ধার হয়। মৃত ব্যক্তির মুখ, হাত, পা বাঁধা ছিল। দেহটি হাঁটু মুড়িয়ে বসিয়ে রেখে দুষ্কৃতীরা তার উপরে লেপ চাপা দিয়ে পালিয়ে যায়।
পুলিশ তদন্তে জানতে পারে, শ্যামাপ্রসাদ তিনতলায় একাই থাকতেন। তাঁর স্ত্রী ও পুত্র অন্যত্র থাকেন। ওই ব্যক্তি প্রাচীন মুদ্রা ও আংটি কেনাবেচার কাজ করতেন। তাঁর ঘোড়দৌড়ে মাঠে যাওয়ার অভ্যাসও ছিল। ঘোড়দৌড়ের মাঠে তাঁর সঙ্গে কয়েক জনের পরিচয় হয়। তারা আইনজীবীর বাড়িতেও বেশ কয়েক বার গিয়েছিল। তারা কোনও ভাবে জানতে পারে, শ্যামাপ্রসাদের কাছে প্রায় ১ কোটি টাকা মূল্যের প্রাচীন একটি আংটি রয়েছে।
পুলিশ জানায়, দেহ উদ্ধারের দু’দিন আগে সাত ব্যক্তি শ্যামাপ্রসাদের বাড়ির তলায় গিয়ে তাঁকে ডাকে। তিনি নীচে নেমে তাদের নিয়ে উপরে উঠেছিলেন। অগস্ট মাসেই ওই আইনজীবীকে ষড়ষন্ত্র করে খুনের অভিযোগে গ্রেফতার করা হয় ওই সাত জনকে।
পুলিশ জানায়, ধৃতেরা জেরায় কবুল করে, তারা আইনজীবীকে বলেছিল, প্রাচীন আংটি তারাই বিক্রি করতে চায়। তিনি তাদের বাধা দেওয়ায় তারা তাঁকে প্রাণে মারার হুমকি দিয়েছিল।
পুলিশ জানায়, শ্যামাপ্রসাদের সঙ্গে তাঁর স্ত্রী কৃষ্ণাদেবীর বিবাহ-বিচ্ছেদের মামলা চলছিল। শ্যামাপ্রসাদের বাড়ি থেকে বেশ কিছু প্রাচীন সামগ্রী উদ্ধার হয়। তা তাঁর স্ত্রীর হেফাজতে রাখা হয়েছিল। কিন্তু সেই সব জিনিস খোওয়া গিয়েছে বলে মামলার শুনানি চলাকালীন আদালতের কাছে হলফনামা জমা দেন তাঁর স্ত্রী। এ দিন দোষীদের শাস্তি ঘোষণার পাশাপাশি কৃষ্ণাদেবীর কাছে আদালত জানতে চেয়েছে, কী ভাবে ওই সব জিনিস তাঁর হেফাজত থেকে খোয়া গিয়েছে। ১৫ দিনের মধ্যে তাঁকে কারণ দর্শাতে হবে।
এ দিন বড়তলা থানা এলাকার একটি খুনের মামলাতেও পাঁচ জনের যাবজ্জীবন কারাবাস হয়েছে। কলকাতার বিচার ভবনের ফাস্ট ট্র্যাক আদালতের বিচারক মধুছন্দা ঘোষ ওই নির্দেশ দেন।
পুলিশ জানায়, এই মামলায় যাদের যাবজ্জীবন হয়েছে, তাদের নাম রাজু জায়সবাল, রিকি সাউ, অমরদীপ সাউ, রাকেশ সাউ ও বিপিন সাউ। একই সঙ্গে তাদের ৩ হাজার টাকা জরিমানাও করেন বিচারক। পুলিশ জানায়, ওই যুবকেরা ২০০৮ সালের ২১ অগস্ট যতীন্দ্রমোহন অ্যাভিনিউ ও অরবিন্দ সরণির মোড়ে বৈদ্যবাটির বাসিন্দা সনত্‌ কাহারকে পিটিয়ে খুন করে। কলকাতা পুলিশের হোমিসাইড শাখার তদন্তকারী অফিসার শুভদীপ চক্রবর্তী ওই ঘটনার তদন্তে নেমে জানতে পারেন, গায়ে জল ছেটানো নিয়ে বিবাদের জেরেই সনত্‌কে পিটিয়ে মারা হয়।
 
 
 


First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.