মোবাইল চুরির ঘটনাকে কেন্দ্র করে দু’ পাড়ার গণ্ডগোলে চলল গুলি। বৃহস্পতিবার সকালে ওই ঘটনায় উত্তাল হল মুরারই থানার রাজগ্রাম এলাকা। পিঠে গুলির আঘাত নিয়ে সইম খান নামে এক যুবক রামপুরহাট হাসপাতালে ভর্তি। একই ঘটনায় জখম হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আরও দুই যুবকও। ঘটনার খবর পেয়ে এলাকায় যান এসডিপিও (রামপুরহাট) কোটেশ্বর রাও। পুলিশ ওই ঘটনায় জড়িত এগারো জনকে গ্রেফতার করেছে। কোটেশ্বরবাবু বলেন, “ওই ঘটনায় এক জনের পিঠে গুলি লেগেছে। এখনও পর্যন্ত কোনও আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার হয়নি। কে বা কারা গুলি চালিয়েছিল, তা তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।” এ দিনের ওই ঘটনায় জড়িত সবাইকেই দ্রুত গ্রেফতার করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ৩০ নভেম্বর রাতে রাজগ্রাম-মহুরাপুর রাস্তার উপর সুমন্ত মাল নামে এক ব্যবসায়ীর দোকান থেকে বেশ কিছু মোবাইল, মোবাইলের ব্যাটারি ও কম্পিউটার চুরি যায়। ওই ঘটনায় থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়। পুলিশ অবশ্য এখনও তার কোনও কিনারা করতে পারেনি। স্থানীয় বাসিন্দা জগদীশ মাল, জাহির খানদের দাবি, বুধবার সন্ধ্যায় পাশের গ্রামের এক যুবকের হাতে একটি মোবাইল দেখে বাসিন্দাদের সন্দেহ হয়। তাঁরা বলেন, “ওই মোবাইলের আইএমইআই নম্বর পরীক্ষা করে বুঝতে পারি দোকান থেকে চুরি যাওয়া একটি মোবাইলই যুবকটি ব্যবহার করছে। পরে যুবককে আটক করে জানা যায়, গ্রামের আরও কয়েক জন ওই চুরির ঘটনায় জড়িত।” তাঁদের অভিযোগ, ওই যুবককে পুলিশের হাতে তুলে দেওয়ার উপক্রম করা হলে গ্রামবাসীদের একাংশ তাকে মারধরের চেষ্টা করেন। তাঁদের দাবি, ওই যুবক অন্য যে সব যুবকের জড়িত থাকার কথা জানিয়েছিল, তাদের পরিবারের সদস্যেরাই ওই যুবককে মারধরের চেষ্টা করে। কিন্তু গ্রামবাসীদের একাংশের বাধায় তারা ওই যুবককে মারতে পারেনি। পরে পুলিশ ওই যুবককে ধরে নিয়ে যায়।
ওই বাসিন্দাদের অভিযোগ, ওই যুবককে ধরে ফেলায় চুরির ঘটনায় অন্য জড়িতদের নাম বেরিয়ে পড়ে। সেই আক্রোশ থেকেই এ দিন তাঁদের কয়েক জনের উপরে হামলা চালানো হয়। জগদীশবাবুদের অভিযোগ, “এ দিন সকালে গ্রামের বাসিন্দা মোস্তাক খান রামপুরহাটে যাচ্ছিলেন। পথে বারি খান নামে এক বাসিন্দা তাঁকে আটকায়। খবর পেয়ে গ্রামের বাদুর পাড়া থেকে এলাকাবাসী মোস্তাককে উদ্ধার করতে যায়।” অভিযোগ, তখনই বারি খানের আত্মীয়স্বজন গ্রামেরই আক্রম পাড়া থেকে লাঠি, বন্দুক, ভোজালি, হাসোয়া নিয়ে মোস্তাকের পরিবারের লোক জনের উপরে চড়াও হয়। বাসিন্দাদের একাংশের দাবি, বারি খানের লোকজন এলাকায় আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে যথেচ্ছ ভাবে গুলি চালিয়ে পালিয়ে যায়।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, ওই ঘটনায় সইম খানের পিঠে গুলি লেগেছে। পাশাপাশি বকুল খান নামে এক যুবককে মাথায় হাসোয়া দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। তাঁর ডান পায়ে হাঁটুর নীচে অ্যাসিডও ঢেলে দেওয়া হয়েছে। অন্য এক যুবক ওদুদ শেখকে বাঁ হাতে ধারালো অস্ত্র দিয়ে আঘাত করা হয়েছে। তিন জনই রামপুরহাট মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। এসডিপিও বলেন, “যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁদের পক্ষ থেকে অভিযোগ জমা পড়েছে। অভিযুক্তদের অনেকেই বর্তমানে পলাতক।” |