মেলে না বরাদ্দ, বিদ্যুৎহীন বহু প্রাথমিক স্কুল
বিদ্যুতের বিল বাবদ কোনও অনুদান মেলে না। তাই বিদ্যুৎ নিলে তার খরচ জোগাতে হবে স্কুলকেই। সে কারণে বর্ধমান জেলার অনেক প্রাথমিক স্কুলেই নেই বিদ্যুৎ। এর ফলে শীতে সমস্যা না হলেও গরমে খুদে পড়ুয়ারা পড়ছে অসুবিধায়।
স্কুল শিক্ষা দফতরের হিসেব অনুযায়ী, জেলায় প্রাথমিক স্কুলের সংখ্যা প্রায় ৩৩০৩টি। তার মধ্যে মাত্র ৫৭৫টি স্কুলে বিদ্যুৎ সংযোগ এসেছে। নেই বাকি ২৭২৮টি স্কুলে। অর্থাৎ, মোট স্কুলের মাত্র ১৭.৪১ শতাংশে এখন বিদ্যুৎ রয়েছে। পরিস্থিতি সব চেয়ে ভাল পাণ্ডবেশ্বর ব্লকের। সেখানে ৪৪টি স্কুলের মধ্যে ৩১টিতে বিদ্যুৎ এসেছে। অনেকটা একই অবস্থা রানিগঞ্জ ও অন্ডাল ব্লকে। সেখানে যথাক্রমে ৪৫টির মধ্যে ৩১টি এবং ৫৪টির মধ্যে ৩৬টিতে বিদ্যুৎ পৌঁছেছে। সব থেকে খারাপ অবস্থা রায়না ২ ব্লকের। ১১৩টি স্কুলের মধ্যে মাত্র ৪টিতে বিদ্যুৎ রয়েছে এই ব্লকে। এ ছাড়া আউশগ্রাম ২ ব্লকে ১৩৩টির মধ্যে মাত্র ৬টিতে, আউশগ্রাম ১ ব্লকে ৯৩টির মধ্যে ৫টি, মন্তেশ্বরে ১৭৭টির মধ্যে ৯টি এবং মঙ্গলকোটে ১৭৬টির মধ্যে মাত্র ৯টি স্কুলে বিদ্যুৎ এসেছে।
আঁধারের হাল-হকিকত
• জেলার ৩৩০৩টি প্রাথমিক স্কুলের মধ্যে ৫৭৫টিতে বিদ্যুৎ রয়েছে।
• সবচেয়ে ভাল পরিস্থিতি পাণ্ডবেশ্বর ব্লকে। ৪৪টির মধ্যে ৩১টি স্কুলে বিদ্যুৎ রয়েছে।
• সবচেয়ে খারাপ অবস্থা রায়না ২ ব্লকে। ১১৩টি স্কুলের মধ্যে বিদ্যুৎহীন ১০৯টি।
• স্কুলের বিদ্যুৎ বিলে ৩০% ছাড় কার্যকর হলে সমস্যা মিটবে, আশায় কর্তৃপক্ষ।
স্কুলগুলিতে খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিল মেটানোর সমস্যার কারণেই এই পরিস্থিতি। প্রাথমিক স্কুল পরিচালনার বাজেট বেশ কম। পড়ুয়াদের কাছ থেকে সামান্য ‘ফি’ ও স্কুল পরিচালন সমিতির দেওয়া কিছু সাহায্যে বিদ্যুতের বিল মিটিয়ে থাকে কিছু স্কুল। কিন্তু গ্রামাঞ্চলে অনেক স্কুলের পড়ুয়াদের পক্ষেই ‘ফি’ দেওয়া সম্ভব নয়। এ ছাড়াও, স্কুলে বিদ্যুতের বিল পাঠানো হয় বাণিজ্যিক হারে। গৃহস্থালীর হারে বিল এলে তা-ও অনেকটাই কম হতো বলে দাবি স্কুল কর্তৃপক্ষগুলির। এ সবের ফলে সাত-পাঁচ ভেবে অসুবিধা ভোগ করেও বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ার কথা ভাবে না অনেক স্কুলই। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক গলসির এক প্রাথমিক স্কুলের শিক্ষক বলেন, “বর্ষায় দু’এক দিন ছাড়া আলোর বিশেষ সমস্যা হয় না। কিন্তু গ্রীষ্মে পাখা না চলায় খুব দুর্ভোগ পোহাতে হয়।” দুর্গাপুর-ফরিদপুর ব্লকের গৌরবাজার এলাকার একটি প্রাথমিক স্কুলের এক শিক্ষক বলেন, “বিদ্যুৎ এখন প্রায় অপরিহার্য হয়ে গিয়েছে। কিন্তু স্কুলে আজও বিদ্যুৎ আসেনি। অথচ, দিনের একটা বড় সময় স্কুলেই কাটাতে হয়।”
জেলা স্কুল পরিদর্শকের দফতর সূত্রে জানা গিয়েছে, স্কুলগুলি সাধারণত অভিভাবকদের সঙ্গে কথা বলে পড়ুয়াদের থেকে সামান্য অর্থ চেয়ে নেয়। তা দিয়েই বিদ্যুতের বিল মেটায়। যে সমস্ত স্কুল বিল মেটাতে সক্ষম, সেখানে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ হয় দফতরের তরফে। সমস্যার কথা স্বীকার করে জেলা স্কুল পরিদর্শক (প্রাথমিক) মৃণালকান্তি ভট্টাচার্য বলেন, “সব স্কুলে বিদ্যুৎ পৌঁছক, এটাই লক্ষ্য। কিন্তু সেই লক্ষে পৌঁছতে এখনও অনেকটা দূর।” সম্প্রতি বিদ্যুৎ দফতর স্কুলে বিদ্যুতের বিলের উপর ৩০ শতাংশ ছাড় দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে। জেলা স্কুল পরিদর্শক বলেন, “এখনও সেই সংক্রান্ত কাগজপত্র দফতরে আসেনি। তবে এর ফলে অনেক স্কুলই বিদ্যুৎ সংযোগ নেওয়ার ব্যাপারে চিন্তা-ভাবনা শুরু করবে বলে মনে করা হচ্ছে।”



First Page| Calcutta| State| Uttarbanga| Dakshinbanga| Bardhaman| Purulia | Murshidabad| Medinipur
National | Foreign| Business | Sports | Health| Environment | Editorial| Today
Crossword| Comics | Feedback | Archives | About Us | Advertisement Rates | Font Problem

অনুমতি ছাড়া এই ওয়েবসাইটের কোনও অংশ লেখা বা ছবি নকল করা বা অন্য কোথাও প্রকাশ করা বেআইনি
No part or content of this website may be copied or reproduced without permission.