বইমেলাকেও রাজনৈতিক প্রচারের মঞ্চ করার অভিযোগ উঠল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে। বুধবার তাদের দলীয় মুখপত্রের স্টলের পাশে মঞ্চ বেঁধে রীতিমতো রাজনৈতিক প্ল্যাকার্ড রেখে প্রচার চালাতে দেখা যায়। যদিও, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি প্রদীপ ভট্টাচার্য অভিযোগ অস্বীকার করেন। তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক মুকুল রায় বলেন, “ঘটনাটি অত্যন্ত কুরুচিকর ও দুর্ভাগ্যজনক।” গিল্ডের সম্পাদক ত্রিদিবকুমার চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, প্ল্যাকার্ডগুলি বুধবারের মধ্যেই সরানো হবে।
এ দিন বিকেলে বইমেলায় দেখা যায় কংগ্রেস বার্তার স্টলের (নম্বর ৫০৩) পাশে ঘাসজমিতে সবুজ রঙের মঞ্চ বাঁধা হয়েছে। সামনে সবুজ চেয়ার। আছে হাত-চিহ্নসহ বেশ কয়েকটি প্ল্যাকার্ড। একটিতে লেখা ‘জাতীয় কংগ্রেসে ফিরতে পেরে আমি গর্বিত’, নীচে লেখা সোমেন মিত্র। আর একটিতে রাজ্যজুড়ে নারী নির্যাতন বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রীর জবাব চাওয়া হয়েছে। তার নীচে প্রদীপ ভট্টাচার্যের নাম। ছিল জাতীয় কংগ্রেস সম্পর্কে রাহুল গাঁধীর বক্তব্য লেখা প্ল্যাকার্ডও। অবশ্য, এ সবকে ‘রাজনৈতিক প্রচার’ বলে মানতে নারাজ প্রদীপবাবু। তিনি বলেন, “আমরা তো বলিনি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে গদি ছাড়তে হবে বা মমতা মুর্দাবাদ। রাজ্যে নারী নির্যাতন ঘটছে এটা সত্য। সাধারণ মানুষ মুখ্যমন্ত্রীর কাছে তার জবাব চাইতেই পারেন।” বইমেলা কি তার উপযুক্ত জায়গা? প্রদীপবাবুর যুক্তি, “জনগণের মেলা, তাই বলা হয়েছে। এর মধ্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য নেই।” |
কলকাতা বইমেলায় সুচিত্রা-স্মরণ। বুধবার। ছবি: দেবাশিস রায়। |
ওই মঞ্চে এ দিন রাজনৈতিক বক্তৃতা করার অভিযোগও ওঠে। যদিও তা প্রদীপবাবু অস্বীকার করেছেন। গিল্ড-সম্পাদক বলেন, “এ রকম চললে স্টল বন্ধ করে দেওয়া হবে।” কিন্তু যখন বক্তব্য বলা হচ্ছিল বলে অভিযোগ, তখনই তা থামানো হয়নি কেন? ত্রিদিববাবু বলেন, “তাতে বিশৃঙ্খলার সৃষ্টি হত।” মঞ্চ বাঁধার জন্যও গিল্ডের অনুমতি নেওয়া হয়নি বলে জানিয়ে তিনি বলেন, “আমরা দেখছি কী করা যায়।” স্টলের দায়িত্বে থাকা দক্ষিণ কলকাতার কংগ্রেস নেতা সৌম্যেন আচার্যের অবশ্য দাবি, “প্রয়োজনীয় অনুমতি নিয়েই স্টলের পাশের জায়গাটি ব্যবহার করা হয়েছে।” এ দিনের সভায় হাজির ছিলেন সোমেন মিত্র, প্রদীপ ভট্টাচার্য, আমজাদ আলি প্রমুখ কংগ্রেস নেতা।
রাজ্য রাজনীতির এই চাপান-উতোরের বাইরে বইমেলায় থাকছে প্রাকস্বাধীনতা পর্বের রাজনীতির বিশ্লেষণও। মহাভারতের পটে ভারতের প্রাকস্বাধীনতা পর্বের রাজনীতিকে ফেলে লেখা শশী তারুরের বই গ্রেট ইন্ডিয়ান নভেল-এর বাংলা অনুবাদ আবার মহাভারত প্রকাশিত হচ্ছে আজ, বৃহস্পতিবার। এবং, সার্ধশতবর্ষ পেরিয়েও প্রবল ভাবে আছেন রবীন্দ্রনাথ। নন্দলাল, অবনীন্দ্রনাথ, গগনেন্দ্রনাথ থেকে সত্যজিৎ রায়-সহ বিভিন্ন শিল্পীর করা প্রায় নশো রবীন্দ্ররচনার অলংকরণ নিয়ে প্রকাশিত হয়েছে অভীককুমার দে-র রবীন্দ্রসৃষ্টির অলংকরণ। আজই এসবিআই অডিটোরিয়ামে এ বারের অশোককুমার সরকার স্মারক বক্তৃতা দেবেন পেরুর সাহিত্যিক ফ্রান্সেস্কা ডেনেগ্রি। অশোককুমার সরকার সম্পর্কে বলবেন শংকর। |