ফের শুরু হল জ্ঞানেশ্বরী মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ। সোমবার সাক্ষ্য দেন রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের তদানীন্তন অফিসার ইন স্পেশাল ডিউটি (ওএসডি) আনন্দগোপাল ঘোষ এবং রেলের সিনিয়র সেকশন ইঞ্জিনিয়ার রামনারায়ণ রায়। এই নিয়ে ৩৩ জন সাক্ষ্য দিলেন জ্ঞানেশ্বরী মামলায়। এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছিল গত বছরের ১৮ ফেব্রুয়ারি। মামলাটি চলছে মেদিনীপুরের বিশেষ জেলা ও দায়রা আদালতের বিচারক পার্থপ্রতিম দাসের এজলাসে।
এ দিন মেদিনীপুর কোর্টে সাক্ষ্য দিতে এসে রাজ্য স্বরাষ্ট্র দফতরের তদানীন্তন ওএসডি আনন্দগোপাল ঘোষ জানান, এই মামলায় ২২ জনের বিরুদ্ধে ইউএপিএ ধারায় চার্জগঠনের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। আর রেলের তদানীন্তন সিনিয়র সেকশন ইঞ্জিনিয়র রামনারায়ণ রায় জানান, ঘটনাস্থলে পৌঁছে দেখা গিয়েছিল, রেললাইনের প্যান্ড্রোল ক্লিপ খোলা অবস্থায় পড়ে রয়েছে। পরে সেগুলো উদ্ধার করা হয়। দুর্ঘটনাস্থল থেকে যে সব প্যানড্রোল ক্লিপ এবং রেলের পাত উদ্ধার করা হয়েছিল, তা-ও এ দিন আদালতে আনা হয়।
২০১০ সালের ২৭ মে রাতে ঝাড়গ্রামের সর্ডিহা এবং খেমাশুলি স্টেশনের মাঝে দুর্ঘটনার মুখে পড়ে আপ জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস। ট্রেন আসার আগেই রেললাইনের একাংশ কেটে ফেলা হয় এবং প্যানড্রোল ক্লিপ খুলে ফেলা হয়। লাইনচ্যুত হয় জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস। এরপর উল্টোদিক থেকে আসা একটি মালগাড়ি দুর্ঘটনাগ্রস্ত ট্রেনটির কয়েকটি বগিতে ধাক্কা মারে। মৃত্যু হয় অন্তত ১৫০ জনের। কমবেশি আহত হন প্রায় ২০০ জন।
জ্ঞানেশ্বরী দুর্ঘটনায় তদন্তভার পেয়েছিল সিবিআই। মোট ২৩ জনের নামে চার্জশিট পেশ করে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। এর মধ্যে ২১ জন গ্রেফতার হয়েছে। তার মধ্যে ১৯ জনের বিরুদ্ধে ইউএপিএ ধারায় চার্জগঠন হয়েছে। জেলবন্দি ১৯ জনকেই সোমবার দুপুরে মেদিনীপুরের বিশেষ জেলা ও দায়রা আদালতে হাজির করা হয়। এসেছিলেন জামিনে মুক্ত বিমল মাহাতোও। জনসাধারণের কমিটির একদা মুখপাত্র অসিত মাহাতোকেও এই মামলায় যুক্ত করেছে সিবিআই। জ্ঞানেশ্বরী দুর্ঘটনা মামলায় তাঁর নামে চার্জশিট পেশের অনুমতি চেয়ে রাজ্য সরকারের কাছে আবেদন করেছিল সিবিআই। মাস খানেক আগে সেই অনুমতি মেলে। গত ২২ জানুয়ারি অসিত মাহাতোর বিরুদ্ধে মেদিনীপুর সিজেএম আদালতে সাপ্লিমেন্টারি চার্জশিট জমা দেওয়া হয়েছে। এরপর মামলাটি দায়রা সোপর্দ হলে কমিটির একদা মুখপাত্রের বিচার-পর্ব শুরু হবে।
|