|
|
|
|
জ্ঞানেশ্বরী তদন্ত |
জ্ঞানেশ্বরী কাণ্ডে আজ
থেকে টানা পাঁচ দিন সাক্ষ্য
নিজস্ব সংবাদদাতা • কলকাতা |
|
|
ঝাড়গ্রামের সর্ডিহায় জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেসে নাশকতার ঘটনা ঘটে প্রায় দু’বছর ন’মাস আগে। এত দিন পরে, আজ, সোমবার মেদিনীপুর আদালতে সেই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হচ্ছে। সিবিআই এই মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে রেলওয়ে আইনের যে-ধারায় অভিযোগ এনেছে, তাতে সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড। একটানা পাঁচ দিন সাক্ষ্যগ্রহণ চলবে। সিবিআইয়ের পক্ষে সওয়াল করবেন আইনজীবী পার্থ তপস্বী। এই মামলায় ১৪৫ জনের সাক্ষ্য নেওয়া হবে। ‘প্যানড্রোল ক্লিপ’ খোলা থাকায় ২০১০ সালের ২৭ মে গভীর রাতে সর্ডিহায় জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস প্রথমে বেলাইন হয়ে যায়। তার পরে উল্টো দিক থেকে ছুটে আসা মালগাড়ির সঙ্গে ধাক্কা লাগে ওই ট্রেনের। মারা যান জ্ঞানেশ্বরীর অন্তত ১৫০ যাত্রী। ২০০ জন যাত্রী আহত হন। অভিযোগ ওঠে মাওবাদী এবং পুলিশি সন্ত্রাস বিরোধী জনগণের কমিটির বিরুদ্ধে। অভিযোগ, তারাই রেললাইনের প্যানড্রোল ক্লিপ খুলে নেওয়ায় লাইনচ্যুত হয় জ্ঞানেশ্বরী।
তদন্তে নামে সিবিআই। ঘটনার সময় জনগণের কমিটির নেতা ছত্রধর মাহাতো জেলে ছিলেন। অভিযোগ ওঠে কমিটির নেতা বাপি ওরফে মনোজ মাহাতো (কমিটির সম্পাদক নন) এবং মাওবাদী নেতা শশধর মাহাতোর বিরুদ্ধে। পরে জামশেদপুরের একটি হোটেলে ধরা পড়েন বাপি। সঙ্গে ধরা পড়েন তাঁর ভায়রাভাই বিমল মাহাতোও। ২০১১ সালের মার্চে যৌথ বাহিনীর সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে মারা যান শশধর। জ্ঞানেশ্বরী-কাণ্ডে জড়িত সন্দেহে মোট ২৩ জনকে গ্রেফতার করে সিবিআই। ধৃতদের মধ্যে ১৮ বছরের কমবয়সি হীরালাল মাহাতোও ছিল। তার বিচার হবে জুভেনাইল আদালতে।
জ্ঞানেশ্বরীর নাশকতার সময় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছিলেন রেলমন্ত্রী। তাঁর অভিযোগ ছিল সিপিএমের বিরুদ্ধেও। প্রধানত তাঁরাই আবেদনের ভিত্তিতে ওই ঘটনার তদন্তভার সিবিআইয়ের হাতে তুলে দেওয়া হয়। ২০১০ সালের ২৯ নভেম্বর মেদিনীপুর আদালতে সিবিআই যে-চার্জশিট পেশ করা হয়, তাতে অবশ্য ওই ঘটনার সঙ্গে কোনও রাজনৈতিক দলের যোগাযোগের উল্লেখ ছিল না। বলা হয়েছিল, জঙ্গলমহল থেকে যৌথ বাহিনী প্রত্যাহারের দাবিতেই সে-রাতে সর্ডিহায় রেললাইনের প্যানড্রোল ক্লিপ খুলে নেওয়া হয়। তার পরেই হাওড়া থেকে মুম্বইগামী জ্ঞানেশ্বরী এক্সপ্রেস ওই লাইন দিয়ে যাওয়ার সময় লাইনচ্যুত হয়। ঠিক সেই সময়েই পাশের লাইনে উল্টো দিক থেকে মালগাড়ি চলে আসে। দু’টি ট্রেনের ধাক্কা লাগে। মালগাড়ি না-এলে ওই ঘটনায় এত মানুষের প্রাণহানি হত না বলেই জানিয়েছেন তদন্তকারীরা।
চার্জশিট পেশের প্রায় দু’বছর পরে, ২০১২ সালের ডিসেম্বরে মেদিনীপুর আদালতে এই মামলার চার্জ গঠিত হয়। অভিযুক্ত ২৩ জনের মধ্যে ২২ জনই এখনও মেদিনীপুর জেলে রয়েছেন। বাপির ভায়রা বিমল মাহাতোই শুধু জামিনে ছাড়া পেয়ে যান। কারণ বাপিকে আশ্রয় দেওয়া ছাড়া তাঁর বিরুদ্ধে আর কোনও তথ্যপ্রমাণ পায়নি সিবিআই। |
|
|
|
|
|