মুখ্যমন্ত্রীর পাহাড় সফর শেষ হওয়ার মাত্র চার দিনের মধ্যে, জামিনে মুক্তি পেলেন ৬ জন জিটিএ সদস্য। সোমবার ৬ জিটিএ সদস্য এবং গোর্খা জনমুক্তি মোর্চার যুব সংগঠনের এক নেতা-সহ সাত জন দার্জিলিং জেলা আদালত থেকে জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। মোর্চা সূত্রে জানানো হয়েছে, এ দিন ওই নেতাদের জামিনের পরে, গত বছর পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে লাগাতার আন্দোলনের সময় ধৃত দলের আর কোনও শীর্ষ স্তরের নেতা জেলে নেই।
গত বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের চার দিনের পাহাড় সফর শেষ হয়েছে। পাহাড় সফরের সময় মোর্চা সভাপতি তথা জিটিএ-এর চেয়ারম্যান বিমল গুরুঙ্গের নেতৃত্বে মোর্চার প্রতিনিধি দল মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেই বৈঠকে জেলবন্দি জিটিএ সদস্য এবং মোর্চা নেতা সমর্থকদের মুক্তি দেওয়ার প্রসঙ্গ তুলেছিলেন গুরুঙ্গরা। মোর্চা নেতাদের দাবি, সেই প্রসঙ্গে আইনের উপরে আস্থা রাখার পরামর্শ দিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। এই দিন ধৃতদের জামিনের পরে দার্জিলিং জেলা প্রশাসনকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মোর্চা নেতারা। |
মুক্তির পরে নেতা বরণ। —নিজস্ব চিত্র। |
এ দিন সোমবার দার্জিলিং জেলা আদালতের অতিরিক্ত জেলা জজ (দ্বিতীয়) স্বদেশরঞ্জন রায় জিটিএ সদস্য এবং মোর্চা নেতাদের জামিনের আবেদন মঞ্জুর করে দেন। ধৃতদের সকলের বিরুদ্ধে গত বছরের ২ অগস্ট রিম্বিক-এ একটি বন বাংলোয় আগুন লাগানোর চেষ্টার অভিযোগ রয়েছে। এ দিন অভিযুক্তদের জামিনের আবেদন করা হলে সরকারি তরফে বিরোধিতা করা হয়নি বলে জানা গিয়েছে। সকলকে ব্যক্তিগত ১০ হাজার টাকার ব্যক্তিগত জামিনে মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলে আদালত সূত্রে জানা গিয়েছে।
মোর্চা সূত্রে এ দিন জানানো হয়, জিটিএ সদস্য অনীত থাপা, যোগেন্দ্র রাই, অনুজ থাপা, প্রণয় থাপা, অরুণ সিংজি, মহেন্দ্র প্রতাপ, এবং যুব মোর্চা নেতা পাসাং তামাঙ্গ এ দিন জামিনে মুক্তি পেয়েছেন। ধৃতদের আইনজীবী শেষমণি গুরুঙ্গ বলেছেন, “মামলায় ইতিমধ্যে চার্জশিট জমা পড়েছে, তদন্ত প্রক্রিয়াও শেষ হয়েছে, তাই ধৃতদের জেল হেফাজতে রাখার প্রয়োজন নেই বলে মনে করেই মাননীয় বিচারক সকলকে জামিনে মুক্তি দিয়েছেন।”
গত বছর পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলনের সময় ১৩ জিটিএ সদস্যকে জাতীয় সড়ক অবরোধ, ভাঙচুর, অগ্নিসংযোগসহ নানা মামলায় পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। একই সঙ্গে অন্তত হাজার খানেক মোর্চা নেতা, সমর্থককে গ্রেফতার করা হয়েছিল। এ দিন জিটিএ সদস্য মোর্চার সহ সম্পাদক বিনয় তামাঙ্গ বলেন, “বিচারব্যবস্থার প্রতি আমাদের সম্পূর্ণ আস্থা রয়েছে। তাই জেলা প্রশাসন থেকে শুরু করে দার্জিলিঙের সাধারণ বাসিন্দা সকলকে আমরা ধন্যবাদ জানাই। জিটিএ-এর মাধ্যমে উন্নয়ন করে এখন এক নতুন দার্জিলিং গড়ার লক্ষ্যে আমরা এগিয়ে চলেছি। তাই এর জন্য সাধারণ বাসিন্দা থেকে সরকার আমরা সকলেরই সহযোগিতা চাই।” দার্জিলিং জেলা আদালতের সরকারি আইনজীবী প্রণয় রাই বলেছেন, “এ দিন যাঁরা জামিনে মুক্তি পেয়েছেন, সকলেই ৬ মাসের বেশি সময় ধরে জেলবন্দি রয়েছেন। চার্জশিটও জমা পড়েছে। সে কারণেই আদালত সকলকে জামিন দিয়েছেন।’’ |