আন্দোলনের সময় বকেয়া
মেটানোর নির্দেশ বিদ্যুৎ পর্ষদের
নিজস্ব সংবাদদাতা • দার্জিলিং |
পৃথক গোর্খাল্যান্ডের দাবিতে আন্দোলন চলার সময়ে তিন বছর বিদ্যুৎ বিল বয়কটেরও ডাক দিয়েছিল গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা। সেই আন্দোলনে সামিল হয়ে পাহাড়ের বহু সাধারণ বাসিন্দা ও ব্যবসায়িক সংস্থার মালিকেরাও বিল দেওয়া বন্ধ রাখেন। ২০০৮ সালের অগস্ট থেকে
২০১১ সালের জুলাই পর্যন্ত ওই তিন বছরে তাই বকেয়া বিলের পরিমাণ ৭০ কোটি টাকা ছাড়িয়ে যায়।
সাধারণ বাসিন্দাদের ছাড় দিলেও, এ বার বাণিজ্যিক সংস্থাগুলির কাছে সেই তিন বছরের বকেয়া বিল চেয়ে পাঠিয়েছে রাজ্য বিদ্যুৎ পর্ষদ। আগামী ২৯ জানুয়ারির মধ্যে সেই বকেয়া না মেটালে, বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছে পর্ষদ।
তিন বছরের বকেয়া মেটানোর ওই নির্দেশে মাথায় হাত পড়েছে বাণিজ্যিক সংস্থাগুলির। সমাধান সূত্র বের করতে মোর্চার দ্বারস্থ হয়েছে কালিম্পঙের হোটেল মালিকদের সংগঠন। সংগঠন সূত্রে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, মোর্চার নির্দেশেই বিদ্যুৎ বিল বয়কট করা হয়েছিল, তাই ওই সমস্যার সমাধান মোর্চাকেই করতে হবে। বকেয়া বিলের সমস্যা নিয়ে আলোচনা করতে আগামী সোমবার নবান্নে যাওয়ার কথা জানিয়েছেন কালিম্পঙের বিধায়ক তথা মোর্চার প্রচার সচিব হরকাবাহাদুর ছেত্রী।
বিদ্যুৎ পর্ষদের পাঠানো গত ১৮ জানুয়ারি লেখা বকেয়া মেটানোর নোটিস কালিম্পঙের হোটেল মালিকদের কাছে পৌঁছেছে। যদিও দার্জিলিং বা কার্শিয়াং মহকুমার হোটেলগুলি এখনও সেই নোটিস পায়নি। তবে পর্ষদ সূত্রে জানানো হয়েছে, সব বাণিজ্যিক সংস্থাকেই বকেয়া মেটানোর নোটিস পাঠানো হবে। বিধায়ক তথা মোর্চার প্রচার সচিবের কথায়, “হোটেল মালিকরা বিষয়টি জানিয়েছেন। এ বিষয়ে রাজ্যের বিদ্যুৎমন্ত্রীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলছি। মন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে আগামী সোমবার কলকাতায় যাচ্ছি।” তিনি বলেন, “এর আগে রাজ্য সরকারের তরফেই চিঠি দিয়ে আন্দোলন চলাকালীন সময়ের বকেয়া বিল মেটাতে হবে না বলে জানানো হয়েছিল। তারপরেও কেন এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হল তা নিয়ে আলোচনা করব।”
কালিম্পঙের হোটেল এবং রেস্তোরাঁ মালিকদের সংগঠন হোরাকের সভাপতি সংযোগিতা সুব্বা বলেন, “বিল না মেটালে বিদ্যুৎ সংযোগ কেটে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়েছে। তবে সে সময়ে আমরা নিজেরা বিল না মেটানোর সিদ্ধান্ত নিইনি। একটি রাজনৈতিক দলের নির্দেশে তাদের আন্দোলনকে সমর্থন করার শর্ত হিসেবে বিল মেটানো হয়নি। সুতরাং সেই রাজনৈতিক দলকেই এ বিষয়ে সমাধান সূত্র বের করতে হবে।”
পর্ষদ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত ২৬ ডিসেম্বর কলকাতায় বিদ্যুৎ ভবনে একটি বৈঠকে পাহাড়ের বকেয়া বিল আদায়ের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। তখনই ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলির থেকে বকেয়া আদায়ের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে বলে সরকারি সূত্রের খবর। কিন্তু যখন আন্দোলন চলছিল,
তখন তিন বছর বিল না মেটানোর পরেও কেন কারও বিদ্যুৎ সংযোগ কাটা হয়নি? বিদ্যুৎ পর্ষদের তরফে জানানো হয়েছে, আন্দোলনের সময় বিল না মেটানো সত্ত্বেও বিদ্যুৎ সংযোগ অবিচ্ছিন্ন রাখারই সিদ্ধান্ত সরকারি ভাবে নেওয়া হয়েছিল।
|