লোকসভা ভোটে তৃণমূল কর্মীদের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ভুলে একজোট হয়ে লড়তে বললেন তৃণমূল যুবার সর্বভারতীয় সভাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। কিন্তু ঘটনাচক্রে যে সভা থেকে এই বার্তা দিলেন তিনি, সেই সভার শুরুতেই বচসায় জড়ালেন দলের দুই গোষ্ঠীর নেতারা। পরিস্থিতি সামাল দিতে হস্তক্ষেপ করতে হল অভিষেক এবং তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায়কে।
শুক্রবার দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে এক জনসভায় অভিষেক বলেন, “তৃণমূল কংগ্রেসকে একজোট হয়ে লড়াই করতে হবে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে নতুন ভারত গড়তে হবে।” আর সেই সভাতেই বহিষ্কৃত তৃণমূল নেতা মির তাহেরের মঞ্চে ওঠাকে কেন্দ্র করে দলের দুই গোষ্ঠীর মধ্যে বচসা বাধে। জেলা পরিষদে তৃণমূল সদস্য কাইজার আহমেদ তাহেরকে ধাক্কা মেরে মঞ্চ থেকে ফেলে দেন বলে অভিযোগ। পাল্টা অভিযোগ, তৃণমূল নেতা আরাবুল ইসলাম উত্তেজিত হয়ে কাইজারের এক অনুগামীকে চড় মেরেছেন। অভিষেক, পার্থবাবু, ডেপুটি স্পিকার সোনালি গুহ ও রাজ্যসভার সাংসদ ডেরেক ও ব্রায়ানের সামনেই এই ঘটনা ঘটে। তাঁরা অবশ্য কড়া হাতেই পরিস্থিতি সামলান। পরে নিজের বক্তৃতায় একজোট হয়ে লড়ার কথা বলেন অভিষেক। |
এই বিবাদকে অবশ্য গুরুত্ব দিতে চাননি তৃণমূল নেতারা। পার্থবাবু বলেন, “তৃণমূল এখন বৃহত্তম দল। সেখানে একসঙ্গে চলতে গেলে ভুল বোঝাবুঝি হতে পারে। তবে এটার কোনও গুরত্ব নেই। সব ঠিক রয়েছে।” তবে তৃণমূল সূত্রেই বলা হচ্ছে, ভাঙড়ে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিষয়ে দলের নেতারা ওয়াকিবহাল। গত বিধানসভা ভোটে তৃণমূল প্রার্থী আরাবুল ইসলামের বিরুদ্ধে নির্দল হয়ে লড়েছিলেন দলীয় কর্মী নানু গাজি। ভোট কাটাকাটিতে বাম প্রার্থীর কাছে হেরে যান আরাবুল।
এ দিন যাঁকে ঘিরে গণ্ডগোল, ভাঙড় জলসা কাণ্ডে দল থেকে বহিষ্কৃত সেই নেতা মির তাহের আরাবুলের ঘনিষ্ঠ। তিনি বলেন, “জনসভায় একটা মিছিল নিয়ে এসেছিলাম। আরাবুল ইসলাম আমাকে ডাকলে আমি মঞ্চে উঠি। কিন্তু কাইজার আমাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেয়। আমার কোমরে চোট লেগেছে।” অভিযোগ অস্বীকার করে কাইজার বলেন, “আমি কাউকে ধাক্কা মারিনি। ওকে মঞ্চে উঠতে নিষেধ করেছিলাম মাত্র।” আর আরাবুল বলেন, “প্রকাশ্য জনসভায় যেখানে দলের রাজ্য নেতৃত্ব উপস্থিত, সেখানে কে মঞ্চে উঠবে আর কে উঠবে না তা ঠিক করার কাইজার কে?”
বিবদমান নেতাদের শান্ত করে সভা শুরু করার পরে নিজের বক্তৃতায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্বকেই সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দিয়েছেন অভিষেক। পাশাপাশি, লোকসভা ভোট প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “কংগ্রেস, বিজেপি, সিপিএম-কে একটিও আসনও ছাড়ব না। কংগ্রেস ৫৫ বছর রাজত্ব করেছে। বিজেপি দু’বার। ওরা কী দিয়েছে? মমতার আদর্শ নিয়ে একজোট হয়ে তাঁর সৈনিকেরা এগিয়ে যাবেন।” |