সম্প্রতি আইসিসিআরে মনোজ্ঞ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিল সাবর্ণ সংগ্রহালয়। প্রথম পর্বে সুধীর চক্রবর্তীর কথা-মালার পরে ছিল উনিশ শতকের গানের আসর। শিল্পী দেবজিত্ বন্দ্যোপাধ্যায়। হুতোম প্যাঁচার নকসার ‘আজব শহর কলকেতা’ দিয়ে শুরু করলেন আসর। মধ্য-উনিশ শতকের এ গানের আবেদন আজও কত সমকালীন তা ফুটে উঠল শিল্পীর কণ্ঠশৈলীতে। এর পর একে একে গাইলেন ‘ফাঁকি দিয়ে প্রাণের পাখি’, বঙ্কিমচন্দ্রের কপালকুণ্ডলার মঞ্চগান ‘ভালবাসা ভুলি কেমনে’, বিষবৃক্ষের ‘কাঁটাবনে তুলতে গেলাম’, গিরিশচন্দ্রের আগমনীর গান ‘কুস্বপন দেখেছি গিরি’ প্রভৃতি গান। প্রতিটি গানে যেন উনিশ শতকের মজলিসি অন্দরমহল। শেষ গানে চমক দিলেন শিল্পী ‘বন্দেমাতরম’ গেয়ে। স্বদেশি গানের ওজস্বিতা। শিল্পীকে সার্থক সহায়তা দিলেন দেবাশিস সাহা, সৌম্যজ্যোতি ঘোষ ও মানস চক্রবর্তী।
|
মোহিত মৈত্র মঞ্চে অনুপ্রেরণা আয়োজিত ‘আলোকের এই ঝর্ণাধারায়’ অনুষ্ঠানে সমবেত উদ্বোধনী গান ও নাচে সম্বর্ধিত হলেন পণ্ডিত মণিলাল নাগ। সেতারে রাগ হেমন্ত বাজিয়ে তাঁকে সম্মাননা জানালেন ধ্রুবজ্যোতি চক্রবর্তী। আলাপ ও জোড়ের পর যথাক্রমে বিলম্বিত ঝাঁপতাল ও দ্রুত তিনতালের গৎ পর্যায়ে বিস্তার, কূট লয়কারি, অতি দ্রুত্ তান এবং বৈচিত্রপূর্ণ তেহাই অত্যন্ত কুশলতার সঙ্গে বাজিয়েছিলেন তিনি। ঝালাটিও ছিল মনোগ্রাহী। সৌমেন সরকারের তবলা সঙ্গত প্রশংসনীয়। জগন্নাথ বসু ও ঊর্মিমালা বসুর দ্বৈত শ্রুতিনাটক এবং রাজরূপা দেবের পরিচালনায় ‘নিক্কন’-এর পরিবেশনায় ছিল নৃত্যনাট্য ‘ভানুসিংহের পদাবলী’।
|
কল্যাণ গুহ-র পরিচালনায় যে অনুষ্ঠানগুলি ইদানীং অনুষ্ঠিত হচ্ছে, তা বৈচিত্রে ও বৈভবে এক অন্য মাত্রা পাচ্ছে। সম্প্রতি অরবিন্দ ভবনে যে অনুষ্ঠানটি হল, তার মূল বক্তব্যে ছিল এই সময়ে দাঁড়িয়ে রাজা রামমোহন রায়, দেবেন্দ্রনাথ ঠাকুর, কেশবচন্দ্র সেন ও বিদ্যাসাগরের মতো ব্যক্তিত্বদের অবদানকে স্মরণ করা। উদ্বোধন সঙ্গীতে ছিলেন শঙ্করপ্রসাদ দাস। প্রার্থনায় আচার্য তপোব্রত ব্রহ্মচারী। গানে নূপুরছন্দা ঘোষ, সুছন্দা ঘোষ, চিত্রা বন্দ্যোপাধ্যায়, সুপ্রিয়া চক্রবর্তী, অভিজিৎ ঘোষ ও সুমিতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সব শেষে ছিল পূরবী মুখোপাধ্যায়ের পরিচালনায় ফুল্লরার সমবেত সঙ্গীত। |