|
নাটক সমালোচনা... |
|
রহস্য গল্পের সাসপেন্স নিয়ে |
যোজকের নাটক ‘এ আবরণ’ দেখে এলেন মনসিজ মজুমদার। |
যোজকের নাটক ‘এ আবরণ’ (রচনা: উজ্জ্বল চট্টোপাধ্যায়, পরিচালনা: দুলাল লাহিড়ি) পরিচ্ছন্ন প্রযোজনা। তিনটি নাট্যস্তরে বিন্যস্ত এই প্রযোজনায় এক চমৎকার সংকট গড়ে ওঠে নাটকের মধ্যে নাটক নিয়ে। কিন্তু সংকটের সুষ্ঠু নিরসন হয় শেষ দৃশ্যে যখন আর এক নাটকে আবরণ সরিয়ে আত্মপ্রকাশ করেন মূল নাটকের বৃদ্ধ নায়ক। পাঁচ বছর ধরে নিরুদ্দেশ ছেলে আর বৌমা। বৃদ্ধ বাবা-মার আকুল প্রতীক্ষার শেষ নেই। ভারসাম্যহীন বাবা অলীক ফোন কল শুনতে পান কিন্তু ফোন তুললেই লাইন কেটে যায়। বাবার বিশ্বাস ফোন করছে ছেলে বা বৌমা। বাবার একমাত্র নেতা ‘আজও জীবিত’। নেতাজি সুভাষ যাঁর কাছ থেকে তিনি প্রায় রোজই চিঠি পান। শূন্য বাড়িতে পেয়িং গেস্ট হয়ে থাকতে চায় এক তরুণী যাকে দেখে মায়ের মনে হয় বৌমার মতো। আর ঠিক সেই সময়ে পারিবারিক বন্ধু এক নাট্যপরিচালক এসে উপস্থিত হন, যাঁর অনুরোধে-উপরোধে পেয়িং গেস্ট বৌমার ভূমিকায় অভিনয় করে যাতে বৃদ্ধ একটু শান্তি পান। |
|
ছবি: প্রণব বসু। |
নাটকের মদ্যে নাটক আরও জমে ওঠে যখন পরিচালক আর একটি তরুণ অভিনেতাকে বৃদ্ধের ছেলের ভূমিকায় নামান। এমন এক জটিল অঘটন মঞ্চে সম্ভব হয়েছে প্রযোজনার আঁটসাঁট নির্মিতি ও স্বচ্ছন্দ ছন্দোময়তার গুণে। কিন্তু নাটকের আসল আবেদন শুরু হয় এর পরেই যখন সংকট ঘনিয়ে ওঠে আর দর্শক অস্থিরমনে বৃদ্ধ পিতার সঙ্গে এই ছলনার এক অনিশ্চিত পরিণতির অপেক্ষা করেন প্রায় রহস্য গল্পের সাসপেন্স নিয়ে। শেষ দৃশ্যে নাটক এবং নাটকের মধ্যে নাটক একাকার হয়ে যায় এক অপ্রত্যাশিত সুখের সমাপ্তিতে।
দুলাল লাহিড়ির ঋজু ও সংবেদনশীল অভিনয়ে বৃদ্ধ পিতা গোটা প্রযোজনার মেরুদণ্ড। তাঁর অভিনয় ও পরিচালনার গুণে নাটকের সব অসম্ভব ঘটনা মঞ্চে বিশুদ্ধ নাটকীয় অভিঘাতে প্রত্যয়যোগ্য হয়ে ওঠে। অন্যান্য ভূমিকায় উল্লেখযৌগ্য পাপিয়া বন্দ্যোপাধ্যায় ও অঙ্কিতা মাঝি। |
|