|
|
|
|
সরস্বতী পুজো নিয়ে অশান্তি, স্কুলগেটে তালা
নিজস্ব সংবাদদাতা • জামবনি |
সরস্বতী পুজোর বরাদ্দে কাটছাঁট করা হচ্ছে। এই অভিযোগে প্রধান শিক্ষককে স্কুলের ভিতরে তালাবন্ধ করে বিক্ষোভ দেখাল পড়ুয়ারা।
শুক্রবার জামবনি ব্লকের দুবড়া গ্রামের ‘দুবড়া আদর্শ বিদ্যামন্দির’ স্কুলে এই ঘটনা ঘটে। পুজোর দায়িত্বপ্রাপ্ত একাদশ শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের অভিযোগ, প্রত্যেক পড়ুয়ার কাছ চাঁদা নেওয়া সত্ত্বেও সরস্বতী পুজোর জন্য টাকা দিতে চাইছেন না প্রধান শিক্ষক। বিগত বছরগুলিতে পুজোর তহবিলে উদ্বৃত্ত টাকার পরিমাণ জানাতেও প্রধান শিক্ষক অস্বীকার করছেন। পড়ুয়াদের অভিযোগ, চলতি শিক্ষাবর্ষে নতুন ক্লাসে ভর্তির সময় প্রত্যেক পড়ুয়ার কাছ থেকে বিনা রসিদে ১৩০ টাকা করে নেন স্কুল কর্তৃপক্ষ। ওই টাকার মধ্যে সরস্বতী পুজোর ফি-র পরিমাণ ঠিক কতটা তা স্পষ্ট নয়। এই নিয়ে গত কয়েক দিন ধরেই পুজোর দায়িত্বপ্রাপ্ত কমিটির সদস্য নবম ও একাদশ শ্রেণির পড়ুয়া দের মধ্যে ক্ষোভ দানা বাঁধছিল। পড়ুয়ারা গত মঙ্গলবার প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে আলোচনা করতে চেয়েছিল। কিন্তু প্রধান শিক্ষক নিজে না-গিয়ে দুই সহ শিক্ষককে আলোচনার জন্য পাঠান। ওই দুই শিক্ষক পুজোর তহবিল সংক্রান্ত কোনও প্রশ্নের সদুত্তর দিতে পারেননি বলে পড়ুয়াদের দাবি।
|
অবস্থানে পড়ুয়ারা।—নিজস্ব চিত্র। |
শুক্রবার সকালে স্কুলের পাশের মাঠে স্কুলের বার্ষিক প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছিল। পড়ুয়াদের পাশাপাশি, বেশির ভাগ শিক্ষক তখন মাঠে ছিলেন। প্রধান শিক্ষক তীর্থদ্যুতি ভাওয়াল-সহ মোট তিন জন শিক্ষক স্কুলের ভিতরে ছিলেন। ওই সময় পুজো কমিটির সদস্য কিছু পড়ুয়া ফের প্রধান শিক্ষকের সঙ্গে পুজোর বরাদ্দ নিয়ে কথা বলতে গেলে গোলমালের সূত্রপাত হয়। এগারোটা নাগাদ ক্ষুব্ধ পড়ুয়ারা স্কুল গেটের দরজায় তালা লাগিয়ে দেয়। বিক্ষোভের জেরে ক্রীড়া প্রতিযোগিতাটি বন্ধ হয়ে যায়। দুপুর সাড়ে ১২টা নাগাদ পুলিশ এসে পৌঁছয়। বিক্ষোভকারী ছাত্রছাত্রীদের চড়-থাপ্পড় মেরে সরিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। পুলিশের হস্তক্ষেপে মেন গেটের তালা খোলার পর স্কুল প্রাঙ্গণে প্রধান শিক্ষককে ঘিরে পড়ুয়াদের বিক্ষোভ চরম আকার নেয়। এই গোলমালের মধ্যে ঠেলাঠেলিতে পঞ্চম শ্রেণির ছাত্র সৌগত সিংহ পড়ে গিয়ে মাথায় আঘাত পায়। ঝাড়গ্রাম হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা করানোর পর ওই ছাত্রটিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। তবে সরস্বতী পুজোর ভবিষ্যৎ নিয়ে এ দিন কোনও আলোচনা হয়নি।
প্রধান শিক্ষক তীর্থদ্যুতি ভাওয়ালের দাবি, “সমস্ত অভিযোগই ভিত্তিহীন। এ দিন সকালে পুজো কমিটির সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষকে পুজোর জন্য ৩০ হাজার টাকা দিতে চেয়েছিলাম। ওরা টাকা নিতে চায়নি। তার পরই স্কুল গেটে তালা লাগিয়ে দেওয়া হয়। স্কুলে অশান্তি পাকানোর জন্য পড়ুয়াদের দিয়ে এসব করানো হচ্ছে। এতে কিছু বহিরাগতের ইন্ধন রয়েছে।” তৃণমূল প্রভাবিত স্কুল পরিচালন কমিটির সম্পাদক কমলেশ মালাকার বলেন, “দীর্ঘদিন এই স্কুলের পরিচালন কমিটি বামপন্থীদের দখলে ছিল। তারা এখন অশান্তি পাকানোর চেষ্টা করছে।” তিনি জানান, নতুন শিক্ষাবর্ষে পড়ুয়াদের ভর্তির ফি বাবদ ১৩০ টাকা নেওয়া হয়। এর মধ্যে ৩০ টাকা সরস্বতী পুজোর চাঁদা হিসেবে নেওয়া হয়েছিল। |
|
|
|
|
|