|
|
|
|
কর্মী-ভবন ছাড়াই দমকল অফিস
অভিজিৎ চক্রবর্তী • ঘাটাল |
সাধারণ মানুষের হয়রানি ঠেকাতে দমকল দফতর পশ্চিম মেদিনীপুর জেলা ডিভিশনাল অফিস চালু করেছে গত বছর। জেলায় দমকলের চারটি শাখার যাবতীয় কাজকর্ম দেখভাল করতেই এই উদ্যোগ। কিন্তু একজন ডিভিশনাল ফায়ার অফিসার ছাড়া কোনও স্তরেই কর্মী নিয়োগ করা হয়নি। এমনকী অফিসের কোনও ভবনও নেই। মেদিনীপুর শহরে অগ্নিনিবার্পণ দফতরের একটি তলায় কোনওরকমে কাজ চলছে। সব মিলিয়ে পরিকাঠামোগত সমস্যায় যে লক্ষ্যে এই ডিভিশনাল অফিস চালু করা হয়েছে, তা পূরণ করা যাচ্ছে না। পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার ডিভিশনাল ফায়ার অফিসার বিলাস নাগ অবশ্য বলেন, “কাজ যে হচ্ছে না তা নয়। শীঘ্রই নতুন ভবনের কাজ শেষ হয়ে যাবে। কর্মী নিয়োগের প্রক্রিয়াও চলছে।” তবে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক দমকল দফতরের এক কর্তার স্বীকারোক্তি, “নাম কা ওয়াস্তে নতুন এই ডিভিশনাল অফিস চালু হয়েছে। আধিকারিকের বসার ঘর নেই, একজনও কর্মী নেই। ফলে খুবই সমস্যা হচ্ছে।”
আগে দুই মেদিনীপুরে দমকলের যাবতীয় কাজ হাওড়ার ডিভিশনাল অফিস থেকে নিয়ন্ত্রিত হত। আমরি-কাণ্ডের পর দুই মেদিনীপুর, বাঁকুড়া-সহ আরও কিছু জেলায় দমকল দফতরের ডিভিশনাল অফিস চালু হয়। এ জন্য গত বছরের গোড়াতেই মেলে অনুমোদন। তারপর ২০১৩ সালের জুলাই মাসে পশ্চিম মেদিনীপুরে ডিভিশনাল অফিসে ফায়ার অফিসার নিয়োগ হয়। কিন্তু কাজের কাজ কিছুই হয়নি বলে অভিয়োগ। |
কর্মী নিয়োগ হয়নি। ফাঁকা মেদিনীপুর ডিভিশনাল অফিস। ছবি: সৌমেশ্বর মণ্ডল। |
পশ্চিম মেদিনীপুরে মোট ৪টি জায়গায় ফায়ার স্টেশন রয়েছে ঘাটাল, খড়্গপুর, মেদিনীপুর ও ঝাড়গ্রামে। ডিভিশনাল অফিস থেকে এই চারটি দমকল কেন্দ্রের কাজের সমন্বয় রক্ষার কথা। আগে সামান্য সমস্যা হলেও হাওড়া ছুটতে হত। জেলায় ডিভিশনাল অফিস চালু হওয়ায় সেই সমস্যা মেটার কথা। ছোটখাট কাজ, আধিকারিক ও কর্মীদের বেতন, গাড়ির কাজের বিল, নতুন ইঞ্জিন, ভিআইপি ডিউটি-সহ সব কাজই এই ডিভিশনাল অফিস থেকে হওয়ার কথা। জেলার মধ্যে শাখা অফিসগুলিতে বদলির সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতাও রয়েছে ডিভিশনাল অফিসারের। বহুতল ভবন, সিনেমা হল, লজ, নার্সিংহোম, হাসপাতালের লাইসেন্সের জন্য সাধারণ মানুষকেও আর হাওড়ায় ছুটতে হবে না। দফতরের জেলা অফিসে আবেদন করলে নিয়মমাফিক তদন্তের পরে ছাড়পত্র পাওয়ার কথা। এমনকী কোনও জলসার জন্য দমকলের ছাড়পত্রও পাওয়ার কথা এই ডিভিশনাল অফিস থেকে। কিন্তু পরিকাঠামোর অভাবে অফিসের কাজ পুরোপুরি চালু হয়নি। তাই এখনও কর্মীদের বেতন হোক বা অন্য কাজ, হাওড়া থেকেই নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে। আর সাধারণ মানুষকেও বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে ছুটতে হচ্ছে হাওড়ায়।
দমকল দফতরের একটি সূত্রের খবর, এখনও জেলার বহু নার্সিংহোম, বহুতল, লজ-সহ একাধিক জায়গায় অগ্নিনির্বাপণ সংক্রান্ত নিয়মের তোয়াক্কা করা হচ্ছে না। ফলে, সরকারের রাজস্বও আদায়ও হচ্ছে না। ডিভিশনাল অফিস পুরোদস্তুর সক্রিয় থাকলে অভিযান হত, মামলা থেকে জরিমানা আদায় সবই সম্ভব হত। এ প্রসঙ্গে পশ্চিম মেদিনীপুরের ডিভিশনাল ফায়ায় অফিসার বিলাস নাগ বলেন, “এখনও মাঝে মধ্যে অভিযান চালাচ্ছি। এ বার মামলা করা শুরু করব। দফতরের নিয়ম না মানলে সব ধরনেরই কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে।” কিন্তু তার জন্য আগে প্রয়োজন যথাযথ পরিকাঠামো। তা কদ্দিনে তৈরি হবে, সেই উত্তর অবশ্য মেলেনি। |
|
|
|
|
|